আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (20 points)
reshown by
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
শায়েখ,

আমি  দীন প্রেক্টিস শুরু করার পর, আত্মীয়রা তার সাথে দূরত্ব বজায় রাখে।  খালারা,চাচাত,খালাতো,ফুফাতো বোনেরা সেকুলার মানসিকতা রাখে,  ফেমিনিজমে আক্রান্ত, নন প্র‍্যাক্টিসিং,গীবত,চোগলখোরিতে আক্রান্ত। আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা তাদের হিদায়াত দিক।

আমি খুব introvert. কল দিয়ে অনেক্ষন কথা বলা, বয়োবৃদ্ধদের মজলিশে বসা এগুলা সাধারণতই করতো না আগেও।
ইসলাম প্র‍্যাক্টিস শুরু করার পর আত্মীয়রা বিভিন্নভাবে তিরষ্কার করেছে।  বাড়াবাড়ি করছে ও নানা বাতিল ও ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়ে কথা বলে।
এক্ষেত্রে এক আন্টি সবচেয়ে এগিয়ে। তিনি নারী সাধীনতার পক্ষে,চাকরি, বাজারকরা,রিলেশনশিপ,মাহরাম মেইন্টেইন না করা,কুলখানি,অতিরিক্ত মহর,গায়ে হলুদসহ নানা বাতিল মতাদর্শে আছেন। আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা তাকে হেফাজত করুক।
তার সাথে কথা বললেই ঝগড়া কিংবা তাচ্ছিল্য হয়ই। তিনি প্রচন্ডভাবে অসন্তুষ্ট আমার ওপর। বুঝানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ হয়নি। বরঞ্চ তার ব্যাংগাত্মক হাসি, সমালোচনা,চোগলখোরি নিয়ে ভীষণ কষ্ট পেতাম।
এ মুহূর্তে তার সাথে কথা বলা একদমই বন্ধ। ঈদে কল দিলে ৫/১০ মিনিট ওই দিনটি ঘিরে কথা হয়। তার খোজখবর নি আম্মু থেকে। এবং তিনিও আমার খোজ নেন আম্মু থেকে।
মানে সম্পর্ক এখন পরোক্ষভাবে রক্ষা করা হয়। নয়তো নিজ আগ বাড়িয়ে কল দিনা কিংবা উনি আগ্রহ দেখালেও কথা বলতে চাইনা। কেননা অন্তর পরিবর্তনের ভয় করি ও বিতর্ক থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই।
এখানে তিন দিনের অধিক কথা বন্ধ থাকার হুকুম আসবে কি?

১/ তিনি সহ অন্যান্য আন্টি,চাচাতো বোনেরা,খালাতো বোনেরা,ফুফাতো বোনেরা থেকে যদি নিজের ঈমান বাচানোর জন্য দুরত্ব বজায় রাখি। দেখা হলে প্রয়োজনীয় কথা বলি। তাহলে আত্মীয়তার হক আদায় হয়ে যাবে কিনা?

২/ বাবার দিকের যেসব আত্মীয়রা অন্য বিভাগে থাকেন, কথা হয়না, চিনিওনা সেক্ষেত্রে কোনো হক আসে কিনা।
৩/ আত্মীয়দের মজলিশে ৯৯% সময় গীবত ও চোগলখোরি হয়। সেক্ষেত্রে সেসব মজলিশে না বসে দ্রুত ২-৩ মিনিটে কথা সেরে চলে আসা হক আদায়ের পরিপন্থী হবে কিনা। তিনি যদি কথা বলতেও চান, ব্যস্ততার অজুহাত দেখানোর রুখসত আছে কি?

 ( সুযোগ দিলে গীবত হবেই। হবেই। এটা শত চেষ্টা করেও আটকানো যায়না।)

৪/ দাওয়াহ দেয়ার কারণে কোনো আত্মীয় যদি নিজ থেকে কথা বন্ধ করে দেন, কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন সেক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে হবে কি?
৫/ টাকা দিয়ে হক আদায় করলে আমার মা নানাভাবে সেই আত্মীয়কে খোটা দেন, মনে করাই দেন যে তাকে সাহায্য করা হয়েছে। এতে নিজের ইখলাস নষ্ট হয়,রিয়ার ভয় হয়। এক্ষেত্রে নানু বা আন্টিদের টাকা দিতে ইচ্ছে করেনা। যেহেতু ধমকি এসেছে কোরআনে। সেক্ষেত্রে মা বললেও  না দিলে কি আত্মীয়দের হক আদায় হবে?

 ৬/ যেসব আত্মীয় অর্থ সম্পর্কিত সম্পর্ক রক্ষা করেন,টাকা দিলে বা কিছু দিতে পারলে তারাও দেন। আমি না দিলে তারাও দেন না। আসেনও না।  এক্ষেত্রে শুধু টাকা দিয়ে দিলে বা গিফট পাঠিয়ে খুশি করে দিলে হক আদায় হয়ে যাবে কি?

৭/ আমার বাবা চাচাদের সাথে জায়গা সম্পর্কিত ও আদব বিষয়ে কষ্ট পেয়েছেন। কষ্টটা খুব গভীরভাবে পেয়েছেন যে এ সম্পর্কে কথা বলতে গেলে উনার হাই প্রেশার হয়ে যায়। সারারাত ছটফট করেন। এক্ষেত্রে এক চাচার সাথে কথা পুরোপুরি বন্ধ। সেক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে আমার কিছু করা উচিৎ কিনা? আমি যেহেতু তাদের অধীনস্থ,।

৮/ বাবা মা যাদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলেন না তাদের কোনো হক আমার প্রতি আসবে কিনা?
৯/ যাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন ও আমাদের বলেছেন তাদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতে সেক্ষেত্রে করণিয় কি?

১০/ আত্মীয়দের কল দিয়ে খোজ নেয়া, টাকা পয়সা দেয়া,গিফট দেয়া,অসুস্থতার সময় খোজ নেয়া এদের প্রত্যেকটাই কি আদায় করতে হবে?
নাকি যেকোনো একটি দিয়ে হক আদায় হয়ে যাবে।
১১/ কিছু দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের থেকে দুরত্ব বজায় রাখি। নানা প্রকার অযাচিত প্রশ্ন করবেন এই কারণে। আমার ইসলাম প্র‍্যাক্টিস নিয়ে আঘাত দেয়া কিংবা অত্যন্ত পারসোনাল প্রশ্ন করবেন বিধায়।
যেমন- আম্মুর বাবাবাড়ী থেকে এক বয়োবৃদ্ধ মানুষ এসেছিলেন। আমাকে গায়রে মাহরাম থাকা অবস্থায় ডাকছিলেন। আমি বের হইনি। কারণ নেকাবসহ বের হলে এরকম আত্মীয়রা বাবা মাকে দুচার কথা শুনিয়ে দিবেন। এতে বাবা মা বলেন পরদা ও ইসলাম প্র‍্যাক্টিস করে আমি তাদের হেয় করেছি। তারা মুখ দেখাতে পারেন না। সবাই নানা কথা বলে।
এক্ষেত্রে আমার গোনাহ হয়েছে কিনা?
১২/ বাবা-মা সহ সমস্ত আত্মীয় যখন অপমান করেন কিংবা গীবত করছেন সে মুহূর্তে আমার করণীয় কি?
যেমন কোনো আত্মীয় বললেন, কোনো হুজুরের কারণে আমি দীন প্র‍্যাক্টিস করছি। এ ধরনের কথা ও অপবাদ ও দুরনামে এত কষ্ট হয়। স্তব্ধ হয়ে যাই।
সেক্ষেত্রে কিভাবে সবর করতে পারি? সেই মুহূর্তে কিভাবে শান্ত থাকতে পারি? কিভাবে হতাশা থেকে বাচতে পারি?
১৩/ আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করলে উত্তমভাবে আল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা পুরষ্কার সম্পর্কে কুরআন ও হাদীস গুলো জানতে চাই। যাতে আমি অনুপ্রাণিত হতে পারি।

১৪/ বান্দার হক নিয়ে iom মাদ্রাসায় সল্প পরিসরে পড়েছি। আরো বিস্তারিত জানতে চাই( ১০০-৩০০) পেইজের সহজপাঠ্য শায়েখদের বই। কিছু কিতাব সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি।
১৫/ বাবা মায়ের হক সংক্রান্ত একই ধাচের কিছু কিতাবের পরামর্শ চাচ্ছি যাতে সবর করা ও হক আদায় করায় অনুপ্রাণিত হই।
جزاك الله خيرا
by (715,680 points)
প্রস্তুত হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (715,680 points)
reshown by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলার বাণী-
وَإِذَا رَأَيْتَ الَّذِينَ يَخُوضُونَ فِي آيَاتِنَا فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ وَإِمَّا يُنسِيَنَّكَ الشَّيْطَانُ فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَىٰ مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহে ছিদ্রান্বেষণ করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না।( সূরা আন'আম-৬৮)

এরা জাহিল,সুতরাং এদেরমত মানুষের সাথে ঝগড়া ও তর্কবিতর্ককে পরিত্যাগ করাই শ্রেয়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِي رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا، وَبِبَيْتٍ فِي وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِي أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ»
আবূ উমামা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ন্যায়সঙ্গত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের যিম্মাদার; আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের যিম্মাদার আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের যিম্মাদার।[সুনানে আবি দাউদ-৪৮০০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
তাদের সাথে সম্পর্ক রাখবেন।পরিত্যাগ করবেন না।হ্যা, অন্তরের সম্পর্ক বা সর্বদা সম্পর্ক না রাখার জন্য আপনার কোনো গোনাহ হবে না।এক্ষেত্রে আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন করা হবে না।

(২)
যাদেরকে চিনেন না, তাদের সাথে সম্পর্ক না রাখার জন্য আপনার কোনো গোনাহ হবে না।

(৩)
জ্বী, গোনাহ হবে না।

(৪)
কথা না বললেও কোনো গোনাহ হবে না, যেহেতু তিনি দ্বীনের ব্যাপার নিয়ে আপনার সাথে কথা বলা বন্ধ রেখেছেন।তবে আপনার উচিৎ, কথা বলা,কেননা হেদায়তের চেষ্টা করা,আত্মীয় হিসেবে আপনার দায়িত্ব।

(৫)
গোপনে দিবেন।তাহলে মা জানতে পারবে না।খোটা দিতেও পারবে না।

(৬)
খোজ খবর নেয়ার দ্বারাই হক আদায় হয়ে যায়। টাকা দেয়া জরুরী নয়। হ্যা, আপনার সামর্থ্য থাকলে তো অবশ্যই দিবেন।

(৭)
মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করতে পারেন।হেকমতের সাথে বাবা চাচাদের মধ্যে দূরত্ব যাতে কমতে থাকে, সেই ব্যবস্থা করবেন।

(৮)
তারা আপনার আত্মীয় হলে, এটাও আপনার উপর একটা হক।সুতরাং বাবা মা আদায় না করলেও, আপনারটা আপনাকে আদায় করতে হবে।

(৯)
তাদের কথা শুনবেন না।এক্ষেত্রে মাতাপিতার কথা না শুনার জন্য আপনার কোনো গোনাহ হবে না।

(১০)
ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা দ্বারাই হক আদায় হয়ে যায়।হ্যা, তারা গরীব হলে, এবং আপনি সামর্থবান হলে, অবশ্যই আপনানি আর্থিক সাহায্য করবেন। নতুবা তাদের হক আপনার উপর রয়ে যাবে।

(১১)
আপনার গোনাহ হয়নি।

(১২)
সবরের সাথে পরিস্থিতির মুকাবেলা করবেন।নবীজির মক্কী জীবনের কথা স্বরণ করবেন।

(১৩)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1577

(১৪)
বাংলা ভাষায় রচিত এমন কোনো কিতাব সম্পর্কে আপাতত জানি না।তবে আপনাকে পরামর্শ দেবো, আপনি বাংলা মিশকাত শরীফ ক্রয় করে নিবেন।সেখানে,আত্মীয়তার সম্পর্ক সহ আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন।সর্ব বিষয়ের হাদীস এখানে রয়েছে।
হ্যা, থানভী রাহ বা মুফতি তাকী উসমানি দাঃবাঃ এর কোনো কিতাব এ বিষয়ে রয়েছে কি না?  গুগলে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। বা দেওবন্দী কোনো আলেমের কিতাব রয়েছে কি না দেখে নিবেন।

(১৫)

মাতাপিতার খেদমত

তাকি উসমানি দাঃ বাঃ রচিত

কিতাবখানা পড়বেন।

তাকি উসমানি রচিত

ইসলাম আউর হামেরি জিন্দেগী,ইসলাহি খুতবাত,ইসলাহী মাজালিস

কিতাবগুলো পড়বেন। তাছাড়া উনার রচিত আরো অনেক কিতাব রয়েছে। থানভী রাহ রচিতও অনেক কিতাব রয়েছে।সেগুলোও পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (715,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...