আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,556 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম,
অনেক সময় আমরা দেখি মসজিদের উন্নয়ন কাজের জন্য টাকা চাওয়া হয়। তখন অনেকেই দান সদকা করার জন্য টাকা দেয়। এখন কারো ইনকাম যদি হারাম হয় অর্থাৎ সে হয়ত বা সুদি ব্যাংক এর সাথে লেনদেন করে, সুদ খায়, দুর্নীতি, ঘুষ ইত্যাদির মাধ্যমে টাকা উপার্জন করে। তবে এ ক্ষেত্রে ওই টাকা দিয়ে মসজিদের উন্নয়ন কাজ কি করা উচিত  আর যদি করাও হয় তবে ওই মসজিদে নামাজ পড়া কি উচিত হবে।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান মতে হারাম টাকা মসজিদে দান করা জায়েজ নেই।
যদি কাহারো পুরা বা অধিকাংশ কামাই হারাম হয়,তাহলে তার দান মসজিদে গ্রহন করা জায়েজ নেই।
যদি কাহারো কামাই হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,এক্ষেত্রে যদি হালাল বেশি হয়,তাহলে তার সম্পদ মসজিদ নির্মানের নেওয়া জায়েজ আছে।
অন্যথায় জায়েজ নেই।

শরীয়তের বিধান মতে হারাম সম্পদ দ্বারা নির্মিত মসজিদে নামাজ পড়া মাকরুহ।
এথেকে পরিত্রানের উপায় হলো,যত টুকু হারাম সম্পদ মসজিদ নির্মানে ব্যবহার হয়েছে,সেটি খরচ কারীর নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৩/৩৪০ ইমদাদুল ফাতওয়া ২/৬৭২)

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 170640 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে যদি তার পুরা বা অধিকাংশ কামাই হারাম হয়,তাহলে তার দান মসজিদে গ্রহন করা জায়েজ নেই।
যদি তার কামাই হালাল হারাম মিশ্রিত হয়,এক্ষেত্রে যদি হালাল বেশি হয়,তাহলে তার সম্পদ মসজিদ নির্মানের নেওয়া জায়েজ আছে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْمَلِيحِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَقْبَلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ صَدَقَةً مِنْ غُلُولٍ وَلَا صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُورٍ " .

আবুল মালীহ্ (রহঃ) হতে তার পিতা সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ আত্মসাৎকৃত মালের দান এবং পবিত্রতা ছাড়া সলাত কবুল করেন না।

(আবু দাউদ ৫৯.নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতাম অনুঃ উযু ফারয, হাঃ ১৩৯ এবং অধ্যায়ঃ যাকাত, অনুঃ হারাম পন্থায় উপার্জিত মালের সাদাকা, হাঃ ২৫২৩), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ আল্লাহ পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবুল করেন না, হাঃ ২৭১) হাফিয ইবনু হাজার ‘ফাতহুল বারী’ (৩/৩২৬) গ্রন্থে বলেন, এর সানাদ সহীহ।

عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: … لا یقبل اللّٰہ إلا الطیب۔ (صحیح البخاري / باب الصدقۃ من کسب طیب ۱؍۱۸۹)

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
আল্লাহ তাআ’লা হালাল ও পবিত্র মাল ছাড়া গ্রহণ করেন না।

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَا تَصَدَّقَ أَحَدٌ بِصَدَقَةٍ مِنْ طَيِّبٍ وَلاَ يَقْبَلُ اللَّهُ إِلاَّ الطَّيِّبَ إِلاَّ أَخَذَهَا الرَّحْمَنُ بِيَمِينِهِ وَإِنْ كَانَتْ تَمْرَةً تَرْبُو فِي كَفِّ الرَّحْمَنِ حَتَّى تَكُونَ أَعْظَمَ مِنَ الْجَبَلِ كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ فَلُوَّهُ أَوْ فَصِيلَهُ "

সাঈদ ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি আবু হুরাইরা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক বৈধ উপার্জন হতে দান খায়রাত করে, আর আল্লাহ তাআ’লা হালাল ও পবিত্র মাল ছাড়া গ্রহণ করেন না, সেই দান দয়াময় রাহমান স্বয়ং ডান হাতে গ্রহণ করেন, তা যদি সামান্য একটি খেজুর হয় তাহলেও। এটা দয়াময় রাহমানের হাতে বাড়তে বাড়তে পাহাড় হতেও বড় হয়ে যায়; যেভাবে তোমাদের কেউ তার দুধ ছাড়ানো গাভী বা ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন পালন করে থাকে।

সহীহ, তিরমিজি ৬৬১ জিলালুল জুন্নাহ (৬২৩), তা’লীকুর রাগীব, ইরওয়া (৮৮৬), বুখারী, মুসলিম

عن ابن عباس رضي اللّٰہ عنہما قال: أمرہم بالإنفاق من أطیب المال وأجودہ وأنفَسہ، ونہاہم عن التصدق برذالۃ المال أو دنیئتہ، وہو خبیثہ؛ فإن اللّٰہ لا یقبل إلا طیبًا۔ (تفسیر ابن کثیر ۱؍۳۲۰ البقرۃ: ۲۶۷ سہیل أکیڈمي لاہور)
সারমর্মঃ
ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন,তাদেরকে আদেশ করেছেন উত্তম সম্পদ থেকে দান করার জন্য,নিচু মানের সম্পদ তথা হারাম সম্পদ থেকে দান করা থেকে নিষেধ করেছেন।     

أما لو أنفق في ذٰلک مالاً خبیثًا ومالاً سببہ الخبیث والطیب، فیکرہ؛ لأن اللّٰہ تعالیٰ لا یقبل إلا الطیب، فیکرہ تلویث بیتہ بما لا یقبلہ۔ (رد المحتار، کتاب الصلاۃ / مطلب: کلمۃ ’’لا بأس‘‘ دلیل علی أن المستحب غیرہ ۱؍۶۵۸ کراچی، ۲؍۶۳۱ زکریا، کذا في حاشیۃ الطحطاوي علی الدر المختار، کتاب الصلاۃ / باب ما یفسد الصلاۃ وما یکرہ فیہا ۱؍۲۷۸ دار المعرفۃ بیروت)
সারমর্মঃ
যদি কেহ হারাম সম্পদ দান করে,তাহলে তাহা মাকরুহ হবে।কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা হালাল ও পবিত্র মাল ছাড়া গ্রহণ করেন না।
সুতরাং যে দান আল্লাহ কবুল করেননা,সেটা মসজিদে যুক্ত করা মাকরুহ।
,
لأن سبیل الکسب الخبیث التصدق إذا تعذر الرد علی صاحبہ۔ (شامي، کتاب الحظر والإباحۃ / باب الاستبراء، فصل في البیع ۶؍۳۸۵ کراچی، ۹؍۵۵۳ زکریا، الفتاویٰ الہندیۃ ۵؍۳۴۹)
সারমর্মঃ কেননা এর পদ্ধতি হলো যদি মূল মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া অসম্ভব হয়,তাহলে সদকাহ করে দেওয়া। 

غالب مال المہدي إن کان حلالاً، لا بأس بقبول ہدیتہ وأکل مالہ، ما لم یتعین أنہ من حرام، وإن غالب مالہ الحرام لا یقبلہا ولا یأکل، إلا إذا قال: إنہ حلال ورثہ أو استقرضہ۔ (البزازیۃ علی ہامش الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الکراہیۃ / الفصل الرابع في الہدیۃ والمیراث ۶؍۳۶۰ زکریا، الأشباہ والنظائر، الفن الأول / القاعدۃ الثانیۃ ۱؍۳۴۳ إدارۃ القرآن کراچی، الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الکراہیۃ / الباب الثاني عشر في الہدایا والضیافات ۵؍۳۴۳ زکریا) 
সারমর্মঃ যদি তার অধিকাংশ সম্পদই হালাল হয়,সেটি গ্রহন করাতে কোনো সমস্যা নেই।,,,  

کل مسجدٍ بنی مباہاۃً أو ریائً أو سمعۃً أو لغرض سویٰ ابتغاء وجہ اللّٰہ، أو بمال غیر طیبٍ فہو لاحق بمسجد الضرار۔ (مدارک التنزیل علی ہامش تفسیر الخازن ۲؍۲۸۱، روح المعاني ۱۱؍۲۱ التوبۃ: ۱۰۷)
সারমর্মঃ প্রত্যেক ঐ মসজিদ যেটি ,,,,, পবিত্র মাল ছাড়া হারাম মাল দ্বারা বানানো হয়,সেটি মসজিদে জিরারের অন্তর্ভুক্ত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...