আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু উস্তাজ।অনেক সময়ই দেখা যায় ফেসবুকে অনেকের প্রতারণা বা ভন্ডামি প্রকাশ করে এক্সপোজ করা হয়। অর্থাৎ ধরুন, কেউ একজন নিজের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে স্বেচ্ছায়, অথবা কোনো পুরুষ নারী সেজে/ নারী পুরুষ সেজে বিপরীত লিঙ্গের সাথে সম্পর্ক করেছে বন্ধুত্বের বা এই জাতীয়। অর্থাৎ প্রতারণাই মোটাদাগে। তো অনেক সময় দেখা যায় এসব কেউ কেউ পোস্ট করে তাদের দোষত্রুটি উন্মুক্ত করেন। সেসব পোস্টে বোনেরা প্রচুর হাসিতামাশা মূলক মন্তব্য করৈন। যেদিন কেউ এক্সপোজ হয় সেদিন অনেকেই এরকম পোস্ট করে হাসিতামাশা করেন।
১. তো এটা জায়েজ হবে কি না? যেহেতু অনেকের সাথে প্রতারণা সেহেতু জায়েজ হতে পারে।
২. কিন্তু এই যে এই পোস্ট করা এতে অনেকে মজা নেয়, মানে হাসিতামাশার ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে। সেটা কি জায়েজ হবে?  মানে অন্যের দোষত্রুটি নিয়ে হাসিতামাশা করাটা? আর এগুলো তো সময় অপচয়ও। এভাবে অন্যের দোষত্রুটি অন্বেষণ করে বেড়ানো+ অহেতুক সময় অপচয়। গীবতও হতে পারে তাই না উস্তাজ?


৩. এক্ষেত্রে কখন এটার ক্ষেত্রে সূরা হুজুরাতের ১২ নং আয়াত প্রযোজ্য হবে?


৪. মানে আমি জানতে চাচ্ছি যে এই যে এরা যারা প্রতারণা করে তারা নিঃসন্দেহে অন্যের ক্ষতি করে। অবশ্যই এটা জানানো উচিত সবাইকে। তো কেউ প্রতারণা করলে তার বিরুদ্ধে কী ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে? এবং কখন তা দোষ অন্বেষণ, গীবত বা সময় নষ্টের মধ্যে পড়বে বা পড়বে না?

1 Answer

0 votes
by (616,950 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ). 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০) এই হাদীসের সনদে কালাম থাকার ধরুণ মুহাদ্দিসিনে কেরাম এটা যঈফ হাদীস বলে বিবেচনা করেছেন।

প্রকাশ্যে গোনাহে জড়িত ফাসিক যে, নিজের গোনাহ প্রকাশ হওয়া সম্পর্কে কোনো প্রকার পরওয়াহ করে না।এমন ব্যক্তিদের কৃত পাপ সম্বন্ধে লোকদের সতর্ক করা হবে ও বারণ করা হবে।তার ফিসক ও গোনাহ অন্যর জন্য আলোচনা সমালোচনা এজন্য বৈধ যে, সে গোনাহে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে নিজে নিজের নফসের হুরমতকে নষ্ট করে ফেলেছে।তবে সাবধান তার এমন কোনো আলোচনা করা যাবে না,যা সে নিজেও লুকিয়ে রাখতে চায়,এবং সে যা করেনি তাও আলোচনা করা যাবে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2114


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) প্রতারকদের মুখোশ উন্মোচন করা জায়েয। তবে অতিরিক্ত কিছু যাতে আলোচনায় না আসে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

(২) অন্যের দোষত্রুটি নিয়ে হাসিতামাশা করা কখনো জায়েয হবে না। হ্যা, শিক্ষামূলক উক্তি করা যাবে।


(৩)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।(সূরা হুজুরাত-১২)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এখানে সূরা হুজুরাতের ১২ নং আয়াত প্রযোজ্য হবে না। 
বরং জনস্বার্থে উক্ত প্রতারকের মুখোশ উন্মোচন করা জায়েয হবে।

(৪) কেউ প্রতারণা করলে প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে সতর্ক করা হবে। সতর্ক করার পরও বিরত না থাকলে তার কথা লোকজনকে জানানো যাবে। কিন্তু কেউ এমন কোনো কাজ করলে যেখানে সতর্ক করার কোনো সুযোগ নেই, সেক্ষেত্রে তার বিষয়টি এমনিতেই সবাইকে জানানো যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...