আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
288 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ সন্মানিত শায়খ।
আমার প্রথম সন্তান যখন দুনিয়াতে আসে তখন আমার দ্বীনের বুঝ এতোটা ছিলো না, মাসালা মাসায়েল সম্পর্কে এতো ধারণাও ছিলো না। তাছাড়া অনেক বছর চেষ্টা পর আল্লাহ কবুল করেছিলেন আমাদের তাই ভয়ে তেমন কাজ ও করতাম না৷ ঐ সময় স্বলাত আদায় করতাম টুলে বসে, ৪ মাসে গর্ভাবস্থা থেকে। পরবর্তীতে ৮ম মাসে বসে স্বলাত আদায়ের বিধান সম্পর্কে অবগত হবার পরো দাড়িয়ে স্বলাত আদায়ের পর মাঠিতে বসে ইশারায় সাজদাহ করতাম।
আলহামদুলিল্লাহ, এবার আমার ২য় গর্ভবস্থা চলছে! ৭ম মাসের গর্ভবস্থায় আমি আছি আলহামদুলিল্লাহ। এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে স্বলাত আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ। মাঝে প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ায় পেটে ব্যাথ্যা থাকায় এবং শরীর দূর্বল থাকার দরূণ আমি টুলে বসে কয়েক ওয়াক্ত স্বলাত আদায় করেছিলাম। বাকি সকলই স্বাভাবিক নিয়মে।
এখন, সন্মানিত শায়খ, আমার প্রশ্ন হলো, আমি আমার প্রথম গর্ভাবস্থায় হয়তো সক্ষম থাকার স্বত্তেও টুলে বসে স্বলাত আদায় করেছিলাম, সেগুলো কি আবারও আদায় করা লাগবে, কারণ এখন আমার ভয় হয় যে সেগুলো আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল হলো কিনা।
এবং, আমার আরও একটি প্রশ্ন, তা হলো, গর্ভাবস্থায় ঠিক কখন থেকে স্বলাত আদায়ের পদ্ধতিতে শিথীলতা আসে? অনেক সময় এমন হয় যে মাটি থেকে উঠতে কষ্ট হয়, আবার রুকুতে সমস্যা না হলেও সাজদাহ তে কষ্ট হয় যেহেতু শরীরে অনেক বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমাণে, মাঝে মাঝে তলপেটে তীব্র ব্যাথ্যা হয়, তখন হাটতেও পারি না... তবুও চেষ্টা করি স্বাভাবিক ভাবে সাজদাহ করার।
ইনশাআল্লাহ, আমাকে মাসালা জানিয়ে কৃতজ্ঞ রাখবেন।

যাজাকুমুল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (713,800 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/8598 নং ফাতাওয়ায় আমরা ইতিপূর্বে বলেছি যে, 
যদি ঠান্ডা পানি ব্যবহারে জীবন নাশ বা অসুস্থতা বৃদ্ধির আশংকা থাকে,তাহলে গরম পানি দিয়ে গোসল করে নামায আদায় করতে পারবেন।এ ব্যাপারে কোনো প্রকার শীতিলতা নেই।হ্যা গরম পানির যদি কোনো ব্যবস্থা না থাকে অথবা গরম পানি ব্যবহার করলেও অসুস্থতা বৃদ্ধির পূর্ণ আশংকা থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় তায়াম্মুম করততে পারবেন।আহসানুল ফাতাওয়া-২/৫৬ জানুন-https://www.ifatwa.info/938


হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ»
আমার একবার অর্শগেজ হয়ে গেলো।আমি এমন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট নামায পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে জিজ্ঞাসা করলাম।তখন তিনি প্রতিউত্তরে বললেন,তুমি দাড়িয়ে নামায পড়বে,তারপর দাড়ানো সম্ভব না হলে বসে বসে নামায পড়বে।যদি বসেও সম্ভব না হয় তাহলে হেলান দিয়ে নামায আদায় করবে।(সহীহ বোখারী-১১১৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
ولو كان قادرا على بعض القيام دون تمامه يؤمر بأن يقوم قدر ما يقدر 
যদি কেউ নামাযে কিছু সময় কিয়াম করার পর  অক্ষম হয়ে যায়,এবং এরপর আর দাড়াতে সক্ষম না হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে, সে নামাযে ততটুকুই দাড়াবে যতটুকু তার জন্য সম্ভব হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৬)

তারপর উল্লেখ করা হয়,
وإن عجز عن القيام والركوع والسجود وقدر على القعود يصلي قاعدا بإيماء ويجعل السجود أخفض من الركوع، كذا في فتاوى قاضي خان حتى لو سوى لم يصح، كذا في البحر الرائق.
যদি কেউ নামাযে কিয়াম,রুকু,সিজদা করতে অক্ষম থাকে,কিন্তু সে আবার বসে বসে পড়তে সক্ষম হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে,;সে বসে বসে ইশারায় নামায পড়বে।এবং সেজদার সময় মাথাকে রুকু থেকে একটু বেশী নিচু করবে।(ফাতাওয়ায়ে কাযীখান)তবে যদি কেউ রুকু এবং সেজদার সময়ে মাথাকে সমান করে রাখে তাহলে তার নামাযই বিশুদ্ধ হবে না।(বাহরুর রায়েক্ব)

অপারগতা সম্পর্কে বলা হয়,
وأصح الأقاويل في تفسير العجز أن يلحقه بالقيام ضرر وعليه الفتوى، كذا في معراج الدراية، وكذلك إذا خاف زيادة المرض أو إبطاء البرء بالقيام أو دوران الرأس، كذا في التبيين أو يجد وجعا لذلك فإن لحقه نوع مشقة لم يجز ترك ذلك القيام، كذا في الكافي.
অপারগতা অর্থ হল দাড়ানোর সময়ে কষ্ট অনুভূত হওয়া।এটাই অগ্রহণযোগ্য মত(মে-রাজুদ্দেরায়া) ঠিক এমনিভাবে যদি অসুস্থতা বৃদ্ধির ভয় হয়,বা সুস্থতাকে তরান্বিত করে,অথবা মাথা চক্কর শুরু করে দেয়,(তাবয়ীন)অথবা কোনো বিশেষ কষ্ট অনুভূত হয়,(তাহলে রুখসতের বিধান আসবে)তবে যদি সাধারণ কষ্ট অনুভূত হয়, তাহলে এর জন্য কিয়ামকে তরক করা জায়েয হবে না।
(ফাতাওয়ায়ে  হিন্দিয়া-১/১৩৬)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
দাড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব না হলে যেভাবে সম্ভব হয় সেভাবেই নামাযকে আদায় করতে হবে।নামাযের প্রত্যেকটি ফরয কে আদায় করতে হবে।যদি অসুস্থতার ধরুণ কোনো ফরয রুকুন কে আদায় করা সম্ভব না হয়,তাহলে যেভাবে সম্ভব হয় সেভাবেই নামাযকে আদায় করতে হবে।বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1162

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দুজন বিজ্ঞ মুসলমান ডাক্তার যখন থেকে রুকু সিজদা থেকে বারণ করবে, তখন থেকেই মূলত ইশারার মাধ্যমে রুক সিজদা করা লাগবে। আর দাড়ানোতে যেহেতু গর্ভের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তাই প্রতি রাকাতে দাড়াতে হবে। যে সমস্ত নামায ইতিপূর্বে পড়া হয়ে গিয়েছে, সে সমস্ত নামাযকে আর কাযা করতে হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...