বর্তমান সমাজ ও মাহফিল

Question

আমি প্রচলিত ওয়াজ পছন্দ করি না। কারণ এতে আমার ইবাদতে মনযোগ করতে সমস্যা হয়। আর ওয়াজের কুরআন তেলওয়াতে সবাই মনযোগ দিতে পারে না। আর চারিদিকে মাইকের উচ্চস্বরে আমি মনে করি ওয়াজ অনুচিত। আমি মনে করি ওয়াজের মাইকের আওয়াজ শুধু যারা মজলিসে থাকবে তারাই শুনলে যথেষ্ট। আমি মনে করি প্রচলিত ওয়াজে রিয়া ঢুকেছে। কোন এলাকায় কত বড় মাহফিল হয় এসব প্রতিযোগিতা। ওয়াজের পোস্টার প্রচারণা এবং গরম বক্তব্য অপছন্দ করি। আমি রাসূল (সা) গরম বক্তব্য দিয়েছে এমন খুঁজে পায়নি। মাহফিলে শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য ইদানীং বেশি হচ্ছে। আজকাল সবাই আলেম টাইটেল নিয়ে ঘুরছে। আমি মনে করি প্রকৃত আলেম এসব করে না। ওয়াজীদের কথা শুনলে বিধর্মীরা চমকে ওঠে। ওয়াজের নামে মেলা হচ্ছে। এক আলেম আরেক আলেমকে মুরতাদ কাফের বলছে। আমি মনে করি ওয়াজীদের পেছনে অতিরিক্ত টাকা খরচ না করে মসজিদের ইমামদের বেতন বাড়ানো উচিত। আমি মনে করি আলেমদের মুফতি আব্দুল মালেক হওয়া উচিত। আমি দেওবন্দীব হকপন্থী আলেমদের অনুসরণ করি। আমি ওয়াজে যাওয়া থেকে দেওবন্দী আলেমদের কিতাব পড়তে পছন্দ করি। আমি মনে করি প্রতি এলাকার ইমামরা সাধারণ মানুষদের ব্যক্তিগতভাবে সংশোধন করবে। আমি মনে করি, অধিকাংশ নামধারী আলেম যা করে বর্তমানে আগাগোড়া সবই ব্যবসা। আর সবাইকে আলেম কেন হতে হবে? সবাই আলেম হলে দেশের প্রশাসন ব্যবস্থা সবকিছু নাস্তিক সেকুলারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। আমি মনে করি প্রয়োজনীয় ফরজ ইলম শিক্ষা নিয়ে ডাক্তার ইন্জিনিয়ার বা অন্য পেশায় যাওয়া ও জরুরি। একজন সৎ পুলিশ অফিসার চাইলে অনেক মানুষের উপকার করতে পারে। আমি তথাকথিত সবার ছেলেমেয়ে আলেম হোক এসব পছন্দ করি না। অবশ্যই উম্মতের একদলকে আলেম হতে হবে মানুষের দ্বীন সংশোধনের জন্য।

আমার উক্ত চিন্তা ভাবনা কি কুফরি বা শিরকি চিন্তাভাবনা?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

কতটুকু জ্ঞানার্জন ফরযে কেফায়া শীর্ষক আলোচনা করতে যেয়ে এক পর্যায়ে  বলেনঃ

وَأَمَّا فَرْضُ الْكِفَايَةِ مِنْ الْعِلْمِ، فَهُوَ كُلُّ عِلْمٍ لَا يُسْتَغْنَى عَنْهُ فِي قِوَامِ أُمُورِ الدُّنْيَا كَالطِّبِّ وَالْحِسَابِ.........................إلي أن قال............................................................................... وَالْعِلْمِ بِأَعْمَارِهِمْ وَأُصُولِ الصِّنَاعَاتِ وَالْفِلَاحَةِ كَالْحِيَاكَةِ وَالسِّيَاسَةِ وَالْحِجَامَةِ.

ফরযে কেফায়া মূলক জ্ঞানার্জন হচ্ছে।

(কেফায়া মানে যা কিছুসংখ্যক মুসলমান আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যায়)

ঐ সমস্ত জ্ঞান যা পৃথিবীতে জীবনাতিপাতের ভিত্তি যেমনঃচিকিৎসাবিজ্ঞান,হিসাববিজ্ঞান,............

এবং শিল্পবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, র্রাষ্টবিজ্ঞান,ও হেজমাত তথা তৎকালিন এক প্রকার চিকিৎসাবিজ্ঞান।

(দ্বীনের ফরয জ্ঞানার্জনের পর যা অর্জন করা কিছু সংখ্যক মুসলমানের উপর ফরয)

রদ্দুল মুহতার,১/৪২; এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/434

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনার উপরোক্ত চিন্তাগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ের কোনো আলেমের সাথে মুযাকারার পরামর্শ আমরা দিবো। হ্যা, আপনার একটি চিন্তা, সবার আলেম হওয়ার প্রযোজনিয়তা নাই। আলেম বলতে, শরীয়ত বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী হওয়া। এ বিষয়ে আমরা একমত।বরং অন্যান্য বিষয়ের গভীর জ্ঞান অর্জন করাও জরুরী।