(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
উকবা বিন আমের জুহানী রাযি. বলেন,
ثَلاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ أَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ الشَّمْسُ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ
তিনটি সময়ে রাসুল ﷺ আমাদেরকে নামাজ পড়তে এবং মৃতের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়; যতোক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য অস্ত যায়। (সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)
আরো জানুনঃ
,
সুতরাং নিষিদ্ধ সময় হলোঃ
১. সূর্য যখন উদিত হতে থাকে এবং যতোক্ষণ না তার হলুদ রঙ ভালোভাবে চলে যায় ও আলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এরজন্য আনুমানিক ১৫-২০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।
২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময়; যতোক্ষণ না তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে।
৩. সূর্য হলুদবর্ণ ধারণ করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। উল্লিখিত তিন সময়ে সব ধরনের নামাজ পড়া নিষেধ। চাই তা ফরজ হোক কিংবা নফল। ওয়াজিব হোক বা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ সময়ে শুকরিয়ার সিজদা এবং অন্য সময়ে পাঠকৃত তিলাওয়াতের সিজদাও নিষিদ্ধ।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সময়ে নামাজ পড়া জায়েজ নেই।
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ফরজ নামাজ যখনই জাগ্রত হয়,নিষিদ্ধ সময় হলেও তখন ই আদায় করা জায়েজ আছে।
তাদের মতানুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারেন।
,
(০২)
শরীয়তেরবিধান মতে ফজরের সুন্নাত অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।
যদি তাশাহুদ পাওয়ার আশা হয়,তাহলেও তাকে ফজরের সুন্নাত পড়ে নেওয়াই উচিত।
নাজমুল ফাতওয়া ২/২৫৩
,
বিস্তারিত জানুনঃ
لمافی الھندیۃ(۱۲۰/۱): ولم یذکر فی الکتاب أنہ ان کان یرجو ادراک القعدۃ کیف یفعل فظاھر ما ذکر فی الکتاب أنہ ان خاف أن تفوتہ الرکعتان یدل علی أنہ یدخل مع الامام وحکی عن الفقیہ أبی جعفر أنہ قال علی قول أبی حنیفۃ وأبی یوسف رحمھما اﷲ تعالیٰ یصلی رکعتی الفجر لأن ادراک التشھد عندھما کا دراک الرکعۃ کذا فی الکفایۃ۔
সারমর্মঃ
যদি তার উভয় রাকাতই শেষ হওয়ার ভয় হয়,তাহলে সে সুন্নাত না পড়ে জামাআতে যুক্ত হয়ে যাবে।
وفی الشامیۃ(۵۶/۲): (وقیل التشھد) أی اذا رجا ادراک الامام فی التشھد لایترکھا بل یصلیھا وان علم أن تفوتہ الرکعتان معہ … قلت: لکن قواہ فی فتح القدیر بما سیأتی من أن من ادرک رکعۃ من الظہر مثلا فقد أدرک فضل الجماعۃ وأحرز ثوابھا کما نص علیہ محمد وفاقا لصاحبیہ وکذا لو ادرک التشہد یکون مدرکا لفضیلتھا علی قولھم قال: وھذا یعکرعلی ماقیل إنہ لورجا ادراک التشھد لایأتی بسنۃ الفجر علی قول محمد والحق خلافہ لنص محمد علی ما یناقضہ أی لان المدار ھنا علی ادراک فضل الجماعۃ وقد اتفقوا علی ادراکہ بادراک التشھد فیأتی بالسنۃ اتفاقا کما أو ضحہ فی الشرنبلالیۃ ایضا وأقرہ فی شرح المنیۃ الخ۔
সারমর্মঃ
যদি ইমামকে তাশাহুদ পড়ার হালতে পাওয়ার আশা হয়,তাহলে সে সুন্নাত পড়বে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আগে সুন্নাত পড়বেন।
,
ফজরের সুন্নাত কাযা হয়ে গেলে সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে নিয়ে জোহরের ওয়াক্তের আগ পর্যন্ত (নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত) পড়া যাবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি তাহা সূর্য উদিত হওয়ার পর পড়বেন।
,
আবু সাঈদ খুদরী রাযি. বলেন, আমি রাসুল ﷺ -কে বলতে শুনেছি,
لا صَلاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ وَلا صَلاةَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ
ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই। (বুখারী ৫৫১)
হাদীস শরীফে এসেছে
وفى جامع الترمذى- عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم يصل ركعتي الفجرفليصلهمابعد ما تطلع الشمس (جامع الترمذى-أبواب الصلاةعن رسول الله صلى الله عليه وسلم، باب ماجاءفي إعادتهمابعدطلوع الشمس،رقم-423)
অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬)
আরো জানুনঃ
,
(০৩)
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 163449 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে
জামাআত শুরু হওয়ার সময় নিকটতম হলে সুন্নাতের নিয়ত করবেনা।
,
আবু দাউদ শরীফের ১২৬৬ নং হাদীসে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَرْقَاءَ، ح وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، ح وَحَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُتَوَكِّلِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ إِسْحَاقَ، كُلُّهُمْ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَلَا صَلَاةَ إِلَا الْمَكْتُوبَةُ".
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে উক্ত ফারয সলাত ছাড়া অন্য কোন সলাত আদায় করা যাবে না।
মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত ও ক্বাসর করা, অনুঃ মুযাজ্জিন যখন ইক্বামাত বলেন তখন কোন নফল সলাতের নিয়্যাত করা মাকরূহ), তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফারয সলাত ব্যাতীত কোন সলাত নেই, হাঃ ৪২১), নাসায়ী (অধ্যায় : ইমামাত, অনুঃ ইক্বামাতের পর ফারয সলাত ব্যতীত অন্য সলাত আদায় মাকরূহ, হাঃ ৮৬৪), দারিমী (হাঃ ১৪৪৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ ইক্বামাত হয়ে গেলে ফারয সলাত ব্যাতীত কোন সলাত নেই, হাঃ ১১৫১), আহমাদ (২/৩৩১), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১১২৩)
,
হ্যাঁ যদি সুন্নাত শুরু করে দেয়,তারপর জামাআত শুরু হয়ে যায়,তাহলে দুই রাকাত পড়েই সালাম ফিরাবে।
চার রাকায় বিশিষ্ট সুন্নাত হলে পরবর্তীতে সেটা আবার আদায় করবে।
,
যদি সুন্নাতের ৩য় রাকাতে জামাআত দাড়িয়ে যায়,তাহলে দ্রুত চার রাকাত শেষ করে জামাআতে শরীক হয়ে যাবে।