ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মাহরাম মহিলাদের
দিকে দৃষ্টি দেয়া কতটুকু জায়েয এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়,
وأما نظره إلى ذوات محارمه فنقول: يباح له أن
ينظر منها إلى موضع زينتها الظاهرة والباطنة وهي الرأس والشعر والعنق والصدر والأذن
والعضد والساعد والكف والساق والرجل والوجه،
যৌন উত্তেজিত
হওয়ার আশংকা না থাকলে পুরুষ তার মাহরামে আবদিয়্যাহ মহিলার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সৌন্দর্যময়
স্থানের দিকে দৃষ্টি দিতে পারবে। সে স্থানগুলো হল- মাথা,
চুল,
গর্দনা,
বুকের উপরি অংশ,কান,বাহু,হাতের কবজি,পায়ের গোড়ালি,পা ও চেহারা। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/1493
https://ifatwa.info/10091/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
শরীয়তের বিধান
হলো প্রাপ্ত বয়স্ক-বালেগ হবার পর আলাদা ঘুমানো জরুরী। একসাথে একই বিছানায় ঘুমানো যাবে
না। এক মহিলা আরেক মহিলার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে,
যদি উভয়ের সতর ঢাকা থাকে আর ফিতনার
শংকা না থাকে। তেমনি দুইজন পুরুষ একসাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে,
যদি সতর ঢাকা থাকে। কিন্তু ফিতনার
শংকা থাকলে বৈধ নয়।
সুতরাং বাবা
তার প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে,উপরোক্ত শর্তের ভিত্তি।
একই শর্তের ভিত্তিতে মা তার প্রাপ্ত
বয়স্কা কন্যার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে।
তবে একই বিছানায়
প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সাথে বাবা আর প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে মা ঘুমাতে পারবেনা ।সহীহ
হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত রয়েছে যে,সন্তানদের বয়স দশ হয়ে গেলে তাদের শয়নস্থল-কে পৃথক
করে দিতে হবে।
যেমন হযরত
আমর বিন শুয়াইব তার সুত্রে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ
ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣُﺮُﻭﺍ
ﺃَﻭْﻟَﺎﺩَﻛُﻢْ ﺑِﺎﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﺳَﺒْﻊِ ﺳِﻨِﻴﻦَ ، ﻭَﺍﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ
ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﻋَﺸْﺮٍ ، ﻭَﻓَﺮِّﻗُﻮﺍ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻀَﺎﺟِﻊِ ) .
রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানাদিকে নামাযের আদেশ দাও যখন তারা সপ্ত বর্ষে উপনীত হয়।নামায
না পড়ার ধরুণ তাদেরকে প্রহার করো যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হয়।এবং সাথে সাথে তাদের
শয়নস্থল কে পৃথক করে দাও। (সুনানু আবি-দাউদ-৪১৮)
হযরত সামুরাহ
ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺳﺒﺮﺓ ﺑﻦ ﻣﻌﺒﺪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
ﻗﺎﻝ : ( ﺇﺫﺍ ﺑﻠﻎ ﺃﻭﻻﺩﻛﻢ ﺳﺒﻊ ﺳﻨﻴﻦ ﻓﻔﺮﻗﻮﺍ ﺑﻴﻦ ﻓﺮﺷﻬﻢ ﻭ ﺇﺫﺍ ﺑﻠﻐﻮﺍ ﻋﺸﺮ ﺳﻨﻴﻦ ﻓﺎﺿﺮﺑﻮﻫﻢ ﻋﻠﻰ
ﺍﻟﺼﻼﺓ )
রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেন,যখন তোমাদের সন্তানাদি সপ্তম বৎসরে উপনীত হবে তখন তোমরা তাদের বিছানাকে পৃথক করে
দাও।এবং যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হবে তখন নামাযের জন্য তোমরা তাদেরকে প্রহার করো।(সহীহ
জামে-৪১৮)
★শরীয়তের মূল বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক তথা দশ বৎসরে উপনীত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেকের
জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধান হলো যে, প্রত্যেকেই এমন স্থানে শয়ন করবে যেখানে পর্দা পুশিদার রক্ষা
হয়।
সে হিসেবে
প্রত্যেকেই পৃথক পৃথক রুমে থাকবেন।হ্যা স্বামী-স্ত্রীর বিষয়টি ভিন্ন।সুতরাং সাধারন
বিধান হচ্ছে প্রত্যেকেই পৃথক পৃথক রুমে শয়ন করবেন।এটাই সতর রক্ষার সর্বোত্তম পদ্ধতি।
হ্যা যদি কখনো
এক রুমে দু'জনের থাকার প্রয়োজন পড়ে তাহলে এক্ষেত্রে একই রুমে দুই বা ততধিক সমলিঙ্গ তথা শুধু
পুরুষ বা শুধু মহিলা একত্রে ঐ শর্তে থাকতে পারবেন যে,
প্রত্যেকেরই পৃথক পৃথক তোষক/লেপ থাকবে।
এবং একই তোষকের
নিচে একাধিক পুরুষ বা একাধিক মহিলা রাত্রিযাপন করা মাকরুহে তানযিহি।তবে বিপরীত লিঙ্গ
কয়েকজনের রাত্রিযাপন একই বিচানায় কখনো জায়েয হবে না।এমনি তারা পরস্পর মাহরাম হলেও জায়েয
হবে না।এবং পৃথক পৃথক তোষক থাকলেও জায়েয হবে না।
বিস্তারিত
জানুনঃ https://ifatwa.info/757/
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফিতনার শংকা না থাকা আর প্রত্যেকেরই পৃথক পৃথক তোষক/লেপ
থাকার শর্তে মা ও বালিগ সন্তান ঘুমাতে পারবে।
দুই পক্ষের কোনো এক পক্ষ থেকে ফিতনার
০.০১% শংকা থাকলেও এটি কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।
তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা
চাই।
২. বালেগ ছেলে তার মাকে এভাবে জড়িয়ে ধরা,কোলে নেয়া,জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকা কোনোটাই
জায়েজ নেই। কেননা এক্ষেত্রে
হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হওয়ার প্রবল আশংকা রয়েছে।
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/17408/
৩. স্ত্রী স্বামীকে উক্ত মাসায়েল সম্পর্কে
অবগত করবে। প্রয়োজনে স্থানীয় কোন আলেমের নিকট থেকে এজাতীয় মাসআলাগুলো ভালোভাবে
জেনে নেওয়ার জন্য তাকে বুঝাতে থাকবে। হেকমত ও ভালোবাসার সাথে এধরণের জরুরী মাসআলা তার
সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করতে হবে।
৪. এসম্পর্কে জানুন: https://ifatwa.info/19207/