আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
204 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)

আমাদের সমাজে এরকম অনেক ব্যাক্তি আছে যারা ইসলাম এর বিধিনিষেধ জেনেও নানা কারণে প্রধান প্রধান নিয়ম মেনে চলে না। কিন্তু যেসব নিয়ম তারা মেনে চলে ঐ নিয়ম সংক্রান্ত উপদেশ তারা যখন অন্য কাউকে দিতে যায় তখন তারা "তুমি নিজেই তো ইসলামের অন্যান্য নিয়ম মেনে চল না, আমাকে কেন বলতে আসছ, আধা মৌলভী হয়ে ভাল সাজ?" এরকম পরিস্থিতির স্বীকার হয়। এমতাবস্থায় ঐ মানুষগুলোর করণীয় কি? তারা নিজেরা অন্যান্য আমল করছে না বলে তারা কি ভাল কাজ করার উপদেশ দিতে পারবে না? আর যদি দিতে পারে, তাহলে এই ধরনের অবস্থা গুলোতে ঐ ব্যাক্তির "ভাল কাজের আদেশ মন্দ কাজের নিশেধ" করা সম্পর্কে ইসলামের দলীলের রেফারেন্স দেওয়া কি সমীচিন হবে নাকি আরো বিশৃঙ্খলা ছড়াবে? এই অবস্থায় ইসলামে আমাদেরকে কি করতে বলা হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
পূর্বের এক ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,     
কোনো বিষয়ে অন্যকে উপদেশ দেয়া বা নিষেধ করা আর নিজে সে অনুযায়ী আমল না করা বা বিরত না থাকা নিন্দনীয়। 
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ، كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللهِ أَنْ تَقُوْلُوْا مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ ‘
হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা কর না? আল্লাহর নিকট বড় ক্রোধের বিষয় এই যে, তোমরা বল এমন কথা, যা তোমরা কর না (ছফ ২-৩)।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ جُنْدُبِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَزْدِي صَاحِبُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رضي الله عنه عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الَّذِي يُعَلِّمُ النَّاسَ الْخَيْرَ وَيَنْسَى نَفْسَهُ كَمَثَلِ السِّرَاجِ يُضِيءُ لِلنَّاسِ وَيُحْرِقُ نَفْسَهُ.

জুনদুব ইবনু আব্দুল্লাহ আযদী বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সে ব্যক্তি উদাহরণ যে ব্যক্তি মানুষকে কল্যাণের দাওয়াত দেয়, নিজে আমল করে না। সে সেই মোমবাতির মত, যে মোমবাতির মত। যে মোমবাতি মানুষকে আলো দেয় এবং নিজেকে জ্বালিয়ে দেয়’ (তাবারানী, তারগীব, হা/৩৩৩১)।
    
 وَعَنْ أَبِي زَيدٍ أُسَامَةَ بنِ حَارِثَةَ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ الله ﷺ، يَقُولُ: «يُؤْتَى بالرَّجُلِ يَوْمَ القيَامَةِ فَيُلْقَى في النَّارِ، فَتَنْدَلِقُ أقْتَابُ بَطْنِهِ فَيدُورُ بِهَا كَمَا يَدُورُ الحِمَارُ في الرَّحَى، فَيَجْتَمِعُ إِلَيْه أهْلُ النَّارِ، فَيَقُولُونَ : يَا فُلانُ، مَا لَكَ ؟ أَلَمْ تَكُ تَأمُرُ بالمعْرُوفِ وَتنهَى عَنِ المُنْكَرِ ؟ فَيقُولُ : بَلَى، كُنْتُ آمُرُ بِالمَعْرُوفِ وَلا آتِيهِ، وأنْهَى عَنِ المُنْكَرِ وَآتِيهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

  আবু যায়দ উসামাহ ইবনে যায়দ ইবনে হারেসাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। সেখানে তার নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে যাবে এবং সে তার চারিপাশে এমনভাবে ঘুরতে থাকবে, যেমন গাধা তার চাকির চারিপাশে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামীরা তার কাছে একত্রিত হয়ে তাকে বলবে, ওহে অমুক! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না (আমাদেরকে) সৎ কাজের আদেশ, আর অসৎ কাজে বাধা দান করতে?’ সে বলবে, অবশ্যই। আমি (তোমাদেরকে) সৎকাজের আদেশ দিতাম; কিন্তু আমি তা নিজে করতাম না এবং অসৎ কাজে বাধা দান করতাম; অথচ আমি নিজেই তা করতাম!’’ [বুখারি৩২৬৭, ৭০৯৮, মুসলিম ২৯৮৯, আহমদ ২১২৭৭, ২১২৮৭, ২১২৯৩, ২১৩১২]
,
অন্যকে উপদেশ দেয়া বা নিষেধ করা আর নিজে সে অনুযায়ী আমল না করা বা বিরত না থাকা নিন্দনীয় হলেও এর অর্থ এটা নয় যে, কোনো বিষয় নিজের মাঝে আমল না থাকলে অন্যকে বলাই যাবে না।
,
এমনটি ধারণা করা ঠিক নয়। অন্যকে আমলের বা বিরত থাকার উপদেশ দিবে, সাথে সাথে নিজেও আমলের চেষ্টা করবে। 
,

বিস্তারিত  জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...