আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
closed by
পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাম

৪৬৪৭-[২০] জারীর (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল মহিলার নিকট দিয়ে গেলেন এবং তাদেরকে সালাম দিলেন। (আহমাদ)[1]

وَعَن
جَرِيرٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى نِسْوَةٍ فَسَلَّمَ عَلَيْهِنَّ. رَوَاهُ أَحْمَدُ

وعن جرير: ان النبي صلى الله عليه وسلم مر على نسوة فسلم عليهن. رواه احمد

[1] হাসান : আহমাদ ১৯১৫৪, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ২১৩৯, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৫৭৮৯, আবূ ইয়া‘লা ৭৫০৬, দারিমী ২৬৩৭, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ২৪২৪।


তাহলে, কি আমরাও মহিলাদের সালাম দিতে পারব?
closed

1 Answer

0 votes
by (62,250 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

গায়রে মাহরাম মহিলার সাথে কোনো পুরুষের জন্য মুসাফাহা না করে শুধুমাত্র সালাম বিনিময় করাতে কোনো সমস্যা নেই, যদি সে মহিলা বয়স্ক হয়। আর যদি সে মহিলা যুবতী হয়, তবে তার সাথে সালাম বিনিময় করা উচিত হবে না; কেননা এতে করে যে ফিতনা সৃষ্টি হবে না, এ ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। ইসলামিক স্কলারগণের মন্তব্য সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে এমনটিই বুঝে আসে।

ইমাম মালিক রহ. এর কাছে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে, কোনো মহিলার সাথে কি সালাম বিনিময় করা যাবে? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, যদি সেই মহিলা বয়স্ক হয়, তবে আমি এটিকে মাকরুহ মনে করিনা। আর যদি সে যুবতী হয়, তবে তার সাথে সালাম বিনিময় করাটা আমি পছন্দ করিনা।

ইমাম মালিক রহ. কেনো এটিকে পছন্দ করতেন না এর ব্যাখ্যায় আল জারকানি রহ. তার ব্যাখ্যাগ্রন্থ আলমুয়াত্তায় উল্লেখ করেছেন: যখন যুবক কোনো যুবতীকে সালাম দেয়, তখন সে তার সালামের উত্তর শুনলে তার মনে শয়তান কুপ্ররোচনা সৃষ্টি করতে পারে।

আদাবুশ শরীয়াহ (১/৩৭০) এ উল্লেখ করা হয়েছে: ইবনে মুফলিহ বলেন, ইবনে মানসুর একবার ইমাম আহমদ রহ. এর কাছে মহিলাদেরকে সালাম দেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি উত্তরে বললেন, যদি সে মহিলা বৃদ্ধ হয়, তাতে কোনো সমস্যা নেই।

ইমাম নববী রহ. তাঁর আজকার গ্রন্থে (পৃ. ৪০৭) বলেন, কোনো মহিলা অপর মহিলাকে সালাম দেওয়া পুরুষ পুরুষকে সালাম দেওয়ার মতো। আর যদি কোনো মহিলা কোনো পুরুষকে সালাম দেয়, আর সেই মহিলা যদি তার স্ত্রী হয় অথবা মাহরাম কেউ হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই বরং এমন ক্ষেত্রে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে কথা শুরু করা মুস্তাহাব।

কিন্তু সে মহিলা যদি গায়রে মাহরাম ও সুন্দরী হয়, তাহলে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে উভয়ের মনে শয়তানের কুমন্ত্রণা সৃষ্টি করার সম্ভাবনা থাকায় সেই পুরুষের জন্য তাকে সালাম দেওয়া জায়েজ নেই। আর যদি পুরুষ তাকে সালাম দিয়েই বসে, তবে তার জন্য সে সালামের উত্তর দেওয়া জায়েজ নেই। আর সে মহিলার জন্যও তাকে সালাম দেওয়ার অনুমতি নেই। যদি সে মহিলা সালাম দেয়, তাহলে তার ওই সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদি কোনো পুরুষ তার সালামের উত্তর দেয় তাহলে এটা মাকরুহ হবে।

আর যদি উক্ত মহিলা বৃদ্ধ হয় এবং দুজনের কারো মনে শয়তানের কুমন্ত্রণা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে উভয়ের জন্য সালাম বিনিময় করা জায়েজ আছে।

কয়েকজন মহিলার একটি দল যদি কোনো পুরুষকে সালাম দেয় কিংবা কয়েকজন পুরুষের একটি দল কোনো মহিলাকে সালাম দেয়, তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই, যদি ফিতনার ভয় না থাকে।

আবু দাউদ রহ. (৫২০৪) বর্ণনা করেন, ইয়াজিদের কন্যা আসমা রা. বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের একটি দলের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং তাদেরকে সালাম দিলেন।

সাহল ইবনু সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা জুমুয়ার দিনে খুশি হতাম। রাবী বলেন, আমি তাঁকে বললাম, কেনো? তিনি বললেন, আমাদের একজন বৃদ্ধা মহিলা ছিলো। সে একজন লোককে ‘বুদাআ’ নামক খেজুর বাগানে পাঠিয়ে বীট চিনির শিকড় আনতো।

তা একটি হাঁড়িতে দিয়ে সে তাতে কিছুটা যবের দানা দিয়ে ঘুঁটে এক রকম খাবার তৈরী করত। এরপর আমরা যখন জুমুয়ার সালাত আদায় করে ফিরতাম, তখন আমরা ঐ মহিলাকে সালাম দিতাম। তখন সে আমাদের ঐ খাবার পরিবেশন করতো। বুখারি: ৬২৪৮।

এক কথায়, নারী-পুরুষের মধ্যে সালাম আদান-প্রদানের অনুমতি রয়েছে শুধুমাত্র তখনই যখন ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার কোন ভয় না থাকে। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সব ভুলের উর্ধ্বে ছিলেন এবং সব ধরনের ফেতনা থেকে সুরক্ষিত ছিলেন। এখন কেউ যদি নিজেকে ফিতনা থেকে মুক্ত রাখার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারে, তাহলে সে কোনো নারীকে সালাম দিতে পারে। অন্যথায় তাকে সালাম না দিয়ে চুপ থাকতে হবে। (সংগৃহিত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...