আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
মেয়েরা পুরুষদের বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া সুন্নত এটা কোন হাদীস গ্রন্থে আছে??..........................................!....................................................................................................................................................................................................................................................

1 Answer

0 votes
by (708,320 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মেয়েরা পুরুষদের বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া সুন্নত ।এমন কথা বলা যাবে না। বরং যে কেউ যে কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে।হযরত খাদিজা রাযি. রাসূলুল্লাহ সা. কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন,তাই বলে এটা বলা যাবে না যে, মেয়েদের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দেয়া সুন্নত।

10956 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
বিয়ের প্রস্তাব নারী পুরুষ যে কেউ দিতে পারবে।পাত্র-পাত্রী তাদের যে কেউ বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে।তারা অভিবাবকের মাধ্যমে বা সরাসরি একে অন্যকে বিয়ের প্র্রস্তাব দিতে পারবে।বিয়ের প্রস্তাব প্রদাণের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ নিয়ে কোনো ভেদাভেদ নাই। পাত্র পক্ষ বা পাত্রী পক্ষ যে কেউ বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে।পুরুষ সে তার পছন্দ-অপছন্দকে প্রকাশ করতে পারে,ঠিকতেমনি নারীও তার পছন্দ-অপছন্দকে প্রকাশ করতে পারবে।এবং বিয়ের প্রস্তাবও দিতে পারবে।

নারী নিজের পছন্দ অপছন্দ কে সে প্রকাশ করতে পারবে।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন মাদাইয়ানে গেলেন তখন দুই নারীর পশু জন্তুকে পানি খাইয়ে দিয়েছিলেন। পরহেজগার দুই মেয়ের একজন নিজ থেকেই পিতার কাছে হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে বিয়ে করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা সুরা কাসাসে তা এভাবে তুলে ধরেছেন-

فَجَاءتْهُ إِحْدَاهُمَا تَمْشِي عَلَى اسْتِحْيَاء قَالَتْ إِنَّ أَبِي يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا فَلَمَّا جَاءهُ وَقَصَّ عَلَيْهِ الْقَصَصَ قَالَ لَا تَخَفْ نَجَوْتَ مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ
অতঃপর বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার প্রদান করেন। অতঃপর মূসা যখন তাঁর কাছে গেলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন, তখন তিনি বললেন, ভয় করো না, তুমি জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।(সুরা কাসাস : আয়াত ২৫)

قَالَتْ إِحْدَاهُمَا يَا أَبَتِ اسْتَأْجِرْهُ إِنَّ خَيْرَ مَنِ اسْتَأْجَرْتَ الْقَوِيُّ الْأَمِينُ
বালিকাদ্বয়ের একজন বলল পিতাঃ তাকে চাকর নিযুক্ত করুন। কেননা, আপনার চাকর হিসেবে সে-ই উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।(সুরা কাসাস : আয়াত ২৬)

قَالَ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُنكِحَكَ إِحْدَى ابْنَتَيَّ هَاتَيْنِ عَلَى أَن تَأْجُرَنِي ثَمَانِيَ حِجَجٍ فَإِنْ أَتْمَمْتَ عَشْرًا فَمِنْ عِندِكَ وَمَا أُرِيدُ أَنْ أَشُقَّ عَلَيْكَ سَتَجِدُنِي إِن شَاء اللَّهُ مِنَ الصَّالِحِينَ
পিতা মূসাকে বললেন, আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিবাহে দিতে চাই এই শর্তে যে, তুমি আট বছর আমার চাকুরী করবে, যদি তুমি দশ বছর পূর্ণ কর, তা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আল্লাহ চাহেন তো তুমি আমাকে সৎকর্মপরায়ণ পাবে।(সুরা কাসাস : আয়াত ২৭)

নারীরা তারা তাদের বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে । এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার বাণী-
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللَّاتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاء اللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّاتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَالَاتِكَ اللَّاتِي هَاجَرْنَ مَعَكَ وَامْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَيْهِمْ فِي أَزْوَاجِهِمْ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ لِكَيْلَا يَكُونَ عَلَيْكَ حَرَجٌ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।(সূরা আহযাব-৫০)

সাবিত আল বুনানী (রহ.) হতে বর্ণিত। 
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَرْحُومُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مِهْرَانَ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ أَنَسٍ وَعِنْدَه“ ابْنَةٌ لَه“ قَالَ أَنَسٌ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْرِضُ عَلَيْهِ نَفْسَهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَكَ بِي حَاجَةٌ فَقَالَتْ بِنْتُ أَنَسٍ مَا أَقَلَّ حَيَاءَهَا وَا سَوْأَتَاهْ وَا سَوْأَتَاهْ قَالَ هِيَ خَيْرٌ مِنْكِ رَغِبَتْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا.
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ)-এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছিঃ লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারণেই সে নিজেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পেশ করেছে। ( সহীহ বুখারী-৫১২০)

অবশ্যই উত্তম হলো অভিবাবকের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো।এক্ষেত্রে ওয়াজিব ফরয বলতে কিছু নাই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...