আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
edited ago by
অনেক সময় বাবা মায়ের সাথে খারাপ আচরণ হয়ে যায় নিজের আজান্তে। ছোট বেলায় অনেক দিন কোন বিষয় নিয়ে কথাবার্তার কোনো এক পাযায়ে বাবা মায়ের সাথে উচ্চ সরে কথা বলে ফেলি নিজের আজান্তে তারপর নিজের মধ্যে অনেক খারাপ লাগা কাজ করে। এখন ও অনেক সময় হয়ে যায় জীবনের এ পযায়ে এসে বুঝতে পারলাম আমার ভুল হয়েছে। এখন এ অপরাধ থেকে কিভাবে মাফ চাবো?  নিজের মুখে এগুলোর জন্য মাফ চেতে লজ্জা লাগে কারন  এগুলো  অনেক আগের ।
1. বাবা- মায়ের সেবা যত্নের মাধ্যমে  কি এগুলো মাফ হবে?  যেমন তাদের কাপড় গুলো ধুয়ে দিলাম , বিছানাপত্র গুছিয়ে দিলাম,  বাবার পা টিপে দিলাম, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করলাম এগিয়ে কি যতেষ্ট হবে? কিভাবে মাফ চাওয়া যেতে পারে?

পাড়া প্রতিবেশী এবং  আত্মীয়-স্বজন রা অনেক সময় আনেক কথা বলে ফেলেন যা দ্বারা অনেক  কষ্ট লাগে  যেমন  তুমি এই কি  বয়সে দাড়ি রেখেছ, দাড়ি রেখেছ ভালো কথা একটু কাট-ছাট করে রাখ?    অমুকের ছেলে এই বয়সে এত কিছু করে ফেললো তুমি কিছু করতে পারলা না  ( অথচ অমুকের ছেলে প্যান্ট পড়লে হয়তো হাটুর উপরে না হয় পায়ের গোড়ালের নিচে  পড়ে হারাম- হালালের বাচ-বিচার করে না)               গায়রে - মাহ রামদের সাথে দেখা করার জন্য জোড়াজুড়ি করেন ( এতো তোর ছোট বোনের মত)
2.  এগুলো শুনলে নিজের কাছে অশান্তি লাগে, সারাদিন এগুলো মনে হয় খুব  খারাপ লাগে  নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয় মনের প্রশান্তির জন্য কি করা যেতে পারে?
3 নফল নামাজে কি উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করে যাবে?  যেমন তাহাজ্জুদ ?

4.অনেকদিন আগে কোন এক মানুষের কথায় ইমাম সাহেবের পেছনে কিছু দিন  ফরজ  সালাতে সুরায়ে ফাতেহা তেলাওয়াত করি  আমার এই  নামাজগুলো হবে? নাকি পুনরায় পড়তে হবে? (আমি হানাফি ফিকহ অনুসরণ করি)

1 Answer

0 votes
ago by (573,960 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আল্লাহ তা'আলা মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।তাদের অবাধ্য হওয়াকে হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।এ বিষয়ে সমস্ত উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করে থাকেন।

মা বাবার সর্বদায় আনুগত্য করতে হবে,তাদের কথার নাফরমানী করা যাবেনা।
তাদের সাথে সর্বদায় ভালো ব্যবহার করতে হবে।
তারা কষ্ট পায়,এমন কাজ কখনোও করা যাবেনা।

তাদের হক বা অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

পিতা মাতার বৈধ বিধান তরক করলে গোনাহ হবে।

তবে শরীয়ত বহির্ভূত কোনো আদেশ করলে পিতা মাতা সহ কারো আদেশকে মান্য করা যাবে না।কেননা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
আপনি আপনার বাবা মা হতে মাফ চেয়ে নিবেন। এক্ষেত্রে এতটুকু বললেই চলবে যে,জীবনে আপনাদের সাথে যদ দুর্বব্যবহার করেছি,তার থেকে ক্ষমা চাই।

(০২)
ধৈর্য ধারন করবেন।
অন্য কাজে মশগুল থাকবেন।
কিছুক্ষন নির্জনে বসে আল্লাহর যিকর বা কুরআন তিলাওয়াত করবেন।

(০৩)
হ্যাঁ, উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করা যাবে।

(০৪)
আপনার উক্ত নামাজ গুলি আদায় হয়েছে।
পুনরায় আদায় করতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...