বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/2203/
নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
ফজরের সময়ে সূর্যোদয়ের পর সর্বোচ্ছ ১১মিনিট মিনিট পর্যন্ত এবং
মাগরিবের সময়ে সূর্যাস্তের পূর্বে সর্বোচ্ছ ১৬মিনিট পর্যন্ত মাকরুহ বা হারাম সময়।
(আহসানুল ফাতাওয়া-২/১৪৩)
স্থানভেদে বিভিন্ন কিতাবে কমবেশও পাওয়া যায়, কোথাও ফজর এবং মাগরিবে ৭মিনিট করে মাকরুহ সময়ের উল্লেখ পাওয়া যায়।
আবার কোথাও ফজর এবং মাগরিবের সময়ে ১৫/১৬ বা ১৫/২০মিনিটের আলোচনাও পাওয়া যায়।যেহেতু
কুরআন হাদীস হুবহু নির্দিষ্ট কোনো সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট করেনি বা তখন এমন কোনো পদ্ধতিও
ছিল না,তাই শরীয়ত একটা আ'লামত নির্ধারণের
মাধ্যমে বিভিন্ন ইবাদতের ওয়াক্তকে নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই আলামতকে আমাদের ঘড়ির টাইমের
সাথে মিলাতে গিয়ে কিছু কমবেশ হয়ে যায়। তবে যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত তাই সতর্কতাই
কাম্য।এ হিসেবে স্থায়ী ক্যালেন্ডারে যে সতর্কতামূলক ২৩মিনিটের কথা উল্লেখিত রয়েছে,
এটাকে বিবেচনায় রেখে আমাদেরকে নামায পড়তে হবে এবং পড়াটাই নিরাপদ। সূর্যোদয়ের
২০/২৩মিনিট পর,এবং সূর্যাস্তর ৩০মিনাট পূর্ব পর্যন্ত মাকরুহ সময়।
তবে ঐ দিনের আছরের নামায সূর্যাস্তর সময়ও পড়া যায় এবং পড়তে হবে।
ইস্তেওয়া তথা সূর্য মধ্যাকাশে থাকাবস্থায় আগে-পরে কতটুকু সময়
নামায পড়া মাকরুহ। এ সম্পর্কে নির্দিষ্টকরে কিছু বলা যাবে না। কেননা ইস্তেওয়া অর্থ
দিনের মধ্যভাগ। প্রশ্ন হল দিন কখন থেকে শুরু হয়?সুবহে সাদিক থেকে না সূর্যোদয় থেকে।সুবহে সাদিক থেকে দিন শুরু হলে,
সূর্যাস্ত পর্যন্ত মধ্যভাগের সময় নিসফে শরয়ী বলে। আর সূর্যোদয় থেকে দিন
শুরু হলে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মধ্যভাগের সময় নিসফে উরফি বলে।কেউ বলেন,নিসফে শরয়ী গ্রহণযোগ্য। আবার কেউ বলেন নিসফে উরফি গ্রহণযোগ্য।
في
تنوير الأبصار مع الدرالمختار ،ج١،ص٣٧١
وَكُرِهَ
صَلَاةٌ وَلَوْ عَلَى جِنَازَةٍ وَسَجْدَةَ تِلَاوَةٍ وَسَهْوٍ مَعَ شُرُوقٍ
وَاسْتِوَاءٍ وَغُرُوبٍ، إلَّا عَصْرَ يَوْمِهِ
و
في حاشية ابن عابدين
ولا
يخفى أن زوال الشمس إنما هو عقيب انتصاف النهار بلا فصل، وفي هذا القدر من الزمان
لا يمكن أداء صلاة فيه، فلعل أنه لا تجوز الصلاة بحيث يقع جزء منها في هذا الزمان،
أو المراد بالنهار هو النهار الشرعي وهو من أول طلوع الصبح إلى غروب الشمس، وعلى
هذا يكون نصف النهار قبل الزوال بزمان يعتد به.
দেখুন-(আহসানুল ফাতাওয়া-২/১৩৭) (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/৩৮৩)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সহজ ভাষায় এভাবে বলা যায়,
যখন সূর্য পুরোপুরি উদয় হয়ে যাবে, তখনই মাকরুহ সময় শেষ হয়ে যাবে। ফিকহের কিতাবে বিভিন্ন শিরোনামে
ও ভঙ্গিমায় উক্ত মাস'আলাকে উল্লেখ করা হয়েছে। ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায়
(১/৫২) বর্ণিত রয়েছে,
ثلاث
ساعات لاتجوز فيها المكتوبة.....اذا طلعت الشمس حتي يرتفع
এবং হাদীসে ভিন্ন ভঙ্গিমায় বর্ণিত হয় যে,
لا
صلاة بعد الصبح حتي ترتفع الشمس
(সহীহ বোখারী-৫৮৬, সহীহ
মুসলিম-৮৩১)
সাধারণত পুরোপুরি সূর্যোদয় হতে ১০/১২মিনিট লেগে যায়,আহলে ইলমরা লিখেন, সাবধানতা বশত ২০ বা ২৩মিনিট
নামায পড়া থেকে নামায বিরত থাকততে হবে এবং জোহরের পূর্বে যে মাকরুহ ওয়াক্ত রয়েছে,তার সময় সূর্যোদয়ের সময় হতে কম। এ জন্য স্থায়ী ক্যালেন্ডারে প্রদত্ত জোহরের
সূচনার যে ওয়াক্ত লিখা রয়েছে, এর ১৫মিনিট পূর্বে নামায থেকে বিরত
থাকতে হবে। আর সূর্যাস্তর পূর্বে যখন সূর্যর কিরণ এমন পর্যায়ের লোপ পেয়ে যাবে যে,
তখন সূর্যর দিকে দৃষ্টি দেয়া যাবে, তখন থেকেই মাকরুহ
ওয়াক্ত শুরু হয়ে যাবে। অতঃপর সূর্যাস্তর সাথে সাথেই মাকরুহ ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাবে। (কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১২৫)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. নিষিদ্ধ সময়ে কোনো
নামাজই পড়া যাবে না। শুধু ঐ দিনের আসরের নামাজ সূর্যাস্তের সময় পড়া
যাবে।
২. জ্বী হ্যাঁ, আপনি চাইলে যাকাত দিতে পারবেন। যাকাতের নেসাব
পূর্ণ হলে আপনার উপর যাকাত ফরজ। আর না বলে বলতে কী বুঝিয়েছেন?
গরীব কাউকে হাদিয়া বলেও যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।
যাকাতের একটি পূর্ণাঙ্গ মাসআলা সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/55464/
৩. দুআ করি আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করে দেন। জান্নাত দান করেন।
তার সন্তানদেরকে হেফাজন করেন।
যিনি ঐ টাকা ঋণ পাইতেন তিনি যদি মাফ করে দেন তাহলে আর দেওয়া
লাগবে না।
ফিদিয়া দেওয়া সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/8484/
https://ifatwa.info/61780/
৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শরীর বা কাপড়ে নাপাকির চিহ্ন বা গন্ধ
আসলে নাপাক হয়ে যাবে। অন্যথায় নাপাক হবে না।
তবে উত্তম হলো যে, ঐ নাপাক বিছানার উপর একটি পবিত্র চাদর বিছিয়ে
তারপর ঘুমানো। তাহলে কোনো সমস্যা নেই।