আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ,
স্বলাতে সুরা ফাতিহার পর অন্য সুরা তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে..

১.যদি কোনো বড় সূরার অংশবিশেষ পড়া হয় যেমন১০-১৫ আয়াত কিন্তু সুরার বাকি অংশ না পারার কারনে ২য় রাকায়াতে ওই সুরাটি শেষ না করে আবার অন্য সুরা পড়া হয়
২.কিয়াম দীর্ঘ করার জন্য যদি একাধিক বড় সুরার অংশবিশেষ একই রাকাতে তেলাওয়াত করা হয় যেমন সুরা আল বাকারার ১০ আয়াত অত:পর সুরা আর রাহমান এর ১৫ আয়াত এরকম

তাহলে কি ফরজ/নফল স্বলাতের কোনো ক্ষতি হবে??

**আমি একটু দীর্ঘ সময় কিয়াম করে দীর্ঘ রুকু করে তারাবীহ আদায় করার চেষ্টা করি।কিন্তু সমস্যা হলো চাকুরীজীবী হওয়ায় ২:০০/২:১৫ এর বেশি সময় দিতে পারিনা আর এই সময়ে আমার মাত্র ৮/১০ রাকাত স্বলাত হয়, ২০ রাকাত একদিন ও হয়নি।আমি যদি ফীল-নাস পর্যন্ত সুরা দিয়ে ২০ রাকাত পড়ি তাহলে কি সাওয়াব বেশি হবে নাকি দীর্ঘ সময় নিয়ে ৮/১০/১২ রাকাত পড়লে বেশি সাওয়াব হবে??

জাযাকাল্লাহ খইরন।

1 Answer

0 votes
by (680,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

নামাজে সুরার তরতিব ঠিক রাখতে হবে 
ইচ্ছাপূর্বক ভাবে তারতিবের খেলাফ পড়া মাকরুহ।
অনিচ্ছায় এমন হয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবেনা।
নফল,সুন্নাত নামাজের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। 

বিস্তারিত জানুনঃ  

★তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে ইচ্ছাপুর্বক ভাবেও তরতিবের খেলাফ হওয়াতে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ الأَحْنَفِ، عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً فَافْتَتَحَ الْبَقَرَةَ فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَةِ فَمَضَى فَقُلْتُ يَرْكَعُ عِنْدَ الْمِائَتَيْنِ فَمَضَى فَقُلْتُ يُصَلِّي بِهَا فِي رَكْعَةٍ فَمَضَى فَافْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ فَقَرَأَهَا يَقْرَأُ مُتَرَسِّلاً إِذَا مَرَّ بِآيَةٍ فِيهَا تَسْبِيحٌ سَبَّحَ وَإِذَا مَرَّ بِسُؤَالٍ سَأَلَ وَإِذَا مَرَّ بِتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ ثُمَّ رَكَعَ فَقَالَ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ " . فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحْوًا مِنْ قِيَامِهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ " سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ " . فَكَانَ قِيَامُهُ قَرِيبًا مِنْ رُكُوعِهِ ثُمَّ سَجَدَ فَجَعَلَ يَقُولُ " سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى " . فَكَانَ سُجُودُهُ قَرِيبًا مِنْ رُكُوعِهِ .

হুসায়ন ইবনু মানসূর (রহঃ) ... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একরাত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাত আদায় করলাম। তিনি সূরা বাকারা শুরু করলেন, আমি মনে মনে বললাম যে, হয়তো তিনি একশত আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করে থেমে যাবেন। কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়েই যেতে থাকলেন, আমি মনে মনে বললাম, হয়তো তিনি দু’শত আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করে রুকুতে যাবেন, কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়েই যেতে থাকলেন। আমি মনে মনে বললাম, হয়তো তিনি পূর্ণ সূরা এক রাকআতেই তিলাওয়াত করে ফেলবেন। কিন্তু তিনি তিলাওয়াত চালিয়ে যেতে থাকলেন এবং সূরা “নিসা” শুরু করে তাও তিলাওয়াত করে ফেললেন। তারপর সূরা "আলে ইমরান" ও শুরু করে তাও তিলাওয়াত করে ফেললেন। তিনি ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করতেন। যদি তিনি এমন কোন আয়াত তিলাওয়াত করে ফেলতেন যাতে কোন তাসবীহ রয়েছে তবে তাসবীহ পাঠ করতেন, যদি কোন যাঞ্ছা করার আয়াত তিলাওয়াত করে ফেলতেন তবে যাঞ্ছা করতেন। যদি কোন বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনার আয়াত তিলাওয়াত করে ফেলতেন, তবে অশ্রেয় প্রার্থনা করতেন। তারপর রুকু করতেন এবং বলতেন, "সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম" তার রুকু প্রায় তাঁর কিয়ামের সমান হত। পরে তার মাথা উঠাতেন এবং বলতেন "সামিআল্লাহু লিমান হামিদা"। তার দাঁড়ানো প্রায় তার রুকুর সমান হত। তারপর সিজদা করতেন এবং বলতেন, "সূবহানা রাব্বিয়াল আলা" তার সিজদা প্রায় তার রুকুরে সমান হত।

[সহীহ। সহীহ আবু দাউদ হাঃ ৮১৫, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ১৬৯১]

উক্ত হাদীসে সুরা নিসা পাঠ করে আল ইমরান পাঠ করা হয়েছে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   

ويكره فصله بسورة بين سورتين قرأهما فى ركعتين لما فيه من شبهة التفضيل والهجر، (مراقى الفلاح على هامش الطحطاوى، فصل فى المكروهات-287، الدر المختار مع الشامى- 2/269)

সারমর্মঃ
দুই সুরার মাঝে এক সুরা দ্বারা ফাসেলাহ করা, যে দুই সুরা দুই রাকাতে পড়েছে,এট মাকরুহ।

وَيُكْرَهُ الْفَصْلُ بِسُورَةٍ قَصِيرَةٍ وَأَنْ يَقْرَأَ مَنْكُوسًا إلَّا إذَا خَتَمَ فَيَقْرَأُ مِنْ الْبَقَرَةِ. وَفِي الْقُنْيَةِ قَرَأَ فِي الْأُولَى الْكَافِرُونَ وَفِي الثَّانِيَةِ – أَلَمْ تَرَ – أَوْ – تَبَّتْ – ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ وَقِيلَ يَقْطَعُ وَيَبْدَأُ،

وقال ابن عابدين الشامى رح: (قَوْلُهُ ثُمَّ ذَكَرَ يُتِمُّ) أَفَادَ أَنَّ التَّنْكِيسَ أَوْ الْفَصْلَ بِالْقَصِيرَةِ إنَّمَا يُكْرَهُ إذَا كَانَ عَنْ قَصْدٍ، فَلَوْ سَهْوًا فَلَا كَمَا فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ. (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، فروع يجب الاستماع القراءت مطلقا-2/269)

সারমর্মঃ
ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট সুরা দ্বারা ফাসেলাহ করা মাকরুহ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,ফরজ নামাজে এটি মাকরুহ।
নফল নামাজের ক্ষেত্রে সমস্যা নেই।
তবে অন্য সুরা শুরু করার পর বিসমিল্লাহ পড়ে নিবেন।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি ফীল-নাস পর্যন্ত সুরা দিয়ে ২০ রাকাত পড়েন,তাহলে সাওয়াব বেশি হবে।

নতুবা নিয়মিত এভাবে ২০ রাকাত তারাবিহ না পড়ায় আপনার গুনাহ হচ্ছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (680,160 points)
قال في الفتاوی البزازیة: الانتقال من آیة سورة إلی آیة سورة أخری أو إلی آیة من ہذہ السورة بینہما آیات یکرہ وکذا لو جمع بین سورتین أو سور بینہما سورة في رکعة أو في رکعتین وبینہما سورة أو قرأ فی الثانیة سورة فوقہا أو فعل ذلک في رکعة فکلہ مکروہ․․․ وکل ہذا في النوافل لا یکرہ․ (الفتاوی البزازیة علی الہندیة: ۱/ ۴۰)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...