আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
23 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্।

১)আমার আম্মু ১০/১৫বছর আগে অনিচ্ছাকৃত ভাবে একটা মুরগির বাচ্চা মেরে ফেলে। বাচ্চাটি দরজায় কোনে ছিল, তাই দেখতে পায়নি।দরজা লাগানোর পর দেখে মুরগীর বাচ্চাটা মারা গেছে।এটা নিয়ে আম্মু এখনো কান্না - কাটি করে।এর জন্য বিধান কি,কি করলে এই অনুশোচনা থেকে মুক্তি পারে?(উল্লেখ্য মুরগির বাচ্চাটি আমাদের নয়,আমার প্রতিবেশি কাকীর।তার কাছে গিয়ে  ক্ষমা চাওয়া সম্ভব  নয় কোনো ভাবে, বললে অনেক ঝগড়া হবে, বিশৃঙ্খলা হবে।তাই কি করা যায় এখন


২)২০১৯ সালে আমার আম্মু ১০০৳ দিয়ে বাকীতে একটা চারা কিনে।পরবর্তীতে অসুস্থ থাকার জন্য নার্সারীতে গিয়ে আর লোকটাকে টাকা দিতে পারেনি।সুস্থ হওয়ার পর কয়েকদিন গিয়ে খুজেছে নার্সারীতে কাউকেই পায় নি।তাই আম্মু ঐ চারার জন্য দুই বার ১০০,১০০করে ২০০৳ দান করছে। কিন্তু এখনো আম্মুর মনে হলে ভয় হয়,এর প্রতিকার কি?

1 Answer

0 votes
ago by (58,500 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

কারোর নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে, প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০,

ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)


https://www.ifatwa.info/8668  নং ফাতাওয়াতে বলেছি যে,

অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না। বিদায় এসব পরিত্যাজ্য।


কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা-২৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. যেহেতু এটা অনিচ্ছাকৃত হয়েছে। তাই আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন। তবে এক্ষেত্রে করণীয় হলো ঐ মুরগির বাচ্চার দাম হিসেব করে ধরে ঐ পরিমাণ টাকা ঐ ব্যক্তিকে অর্থাৎ মুরগির মালিককে দিয়ে দিতে হবে এবং তাদের কাছে বিষয়টি জানাতে হবে।

যদি তাদের কাছে বললে ঝগড়া হওয়ার বা মারামারি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ঐ পরিমাণ টাকা বা তার থেকে একটু বেশি টাকা তাদেরকে হাদিয়া হিসেবে দিয়ে দিবেন। অতঃপর কোন একদিন এটা উল্লেখ না করে এমনি তাদের কাছে এভাবে বলবেন যে, অনেক সময় আপনাদের অনেক হক নষ্ট করে ফেলেছি তাই আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। বিশেষভাবে ঈদের সময় বলা যেতে পারে। মোটকথা কোনোভাবে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।


২. আপনি তাকে আরো খোঁজ করবেন। ঐ নার্সারীতে আবার যাবেন। তার কাছে পৌছে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। তার কাছে পৌছে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করার পরও যদি পৌছানো সম্ভব না হয় বা তাকে খুঁজে না পান তাহলে তখন আপনি সওয়াবের নিয়ত ছাড়া (প্রয়োজনে আরোও ১০০) টাকা কোনো গরীব ব্যক্তিকে দিয়ে দিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
ago by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম,,, অনিচ্ছায় মুরগীর বাচ্চাটা হত্যা করার জন্য, যার মুরগী ছিল তাকে হাদিয়া দেওয়া কোনোভাবে সম্ভব না হলে,ঐ পরিমাণ টাকা কি তার সওয়াবের নিয়তে আল্লাহর রাস্তায় দান করা যাবে

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...