আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
60 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
১.আমি তনু।একটি মেয়ে।আমার স্বামী আমি রাগের মাথায় মোবাইল এ বলে (এক তালাক, ২ তালাক, ৩তালাক, ২০০০তালাক)। এতে কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে? আমার স্বামী আহলে হাদিসের মতাদর্শ তে চলে।তবে (এক তালাক, ২ তালাক, ৩ তালাক, ২০০০ তালাক) শুধু এতটুকু বলেছে কিন্তু (১তালাক, ২ তালাক, ৩ তালাক, ২০০০ তালাক দিলাম) এমন বলে নি, দিলাম বলেনি। শুধু বলেছে (১তালাক, ২ তালাক,৩ তালাক, ২০০০ তালাক)। আমার স্বামী আহলে হাদিসের মতাদর্শ তে চললেও আমরা হানাফি মাযহাবের ফতুয়া নিয়ে অভিভাবকদের না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম। এখন কি আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে??
২.আমি নাসরিন। আমিও একজন মেয়ে।আমাদের বিয়ে টা গোপন রাখতে হয়েছে। আমার স্বামী আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই হয়। আমাদের বিয়ের কথা কাউকে বলা যাবে না তাই আমি এবং আমার স্বামী দুজনই পরিচয় দি ফুফাতো ভাই বোন বলে। স্বামিকে ফুফাতো ভাই বলে পরিচয় দেওয়া তে, বা স্বামির পরিচয় না দিয়ে রেজিস্ট্রার খাতায় স্বামির নাম, ফোন নাম্বার, ঠিকানা লিখে ফুফূতো ভাই পরিচয় দেওয়াতে কি গুনাহ হয়ছে? আর স্বামিও যদি এমন টাই পরিচয় দেই ফুফাতো বোন বলে এসবে বৈবাহিক সম্পর্ক তে কোন বিচ্ছেদ বা সমস্যা হয় কি? শশুড় বাড়িতে শাশুড়ী, শশুড় আরো যারা আছে নিজের মেয়ে বা ভাইয়ের মেয়ে পরিচয় দেওয়া তে আমাদের বৈবাহিক সম্পর্ক তে কোন বিচ্ছেদ বা সমস্যা হয় কি?
৩.আমি রুপা।আমিও মেয়ে। আমি জানতে চাই স্বামীর দুধ চোষা, স্বামীর গোপনাঙ্গ(লিংগ) , অন্ডকোষ চোষা কি জায়েজ?

আর স্ত্রীর গোপন স্থান চোষা কি জায়েজ?

সম্পূর্ণ খালি গায়ে সহবাস কি জায়েজ?

সহবাস পায়ুপথে করে না সেটা জানি।তবে সহবাস কি সব স্টাইলেই করা যাবে( যেমন : স্ত্রী স্বামির ওপরে উঠে করা,দাড়িয়ে, স্ত্রী উপুড় হয়ে থাকে আর স্বামি পেছনে দাড়িয়ে যৌনাঙ্গে সহবাস করলে) এগুলো কি করা যাবে?সহবাস করার সময় কি এমন কোন কিছু আছে যা করলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো এব বৈঠকে ৩ তালাক দেওয়া হোক,বা একাধিক বৈঠকে,
এক শব্দে ৩ তালাক দেওয়া হোক বা একাধিক শব্দে ৩ তালাক দেওয়া হোক,সব ছুরতেই ৩ তালাকই পতিত হয়ে যাবে।       

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন উক্ত স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।      

এক্ষেত্রে সূরত একটিই বাকি আছে। তা হল, উক্ত স্ত্রীর অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি তার সাবেক স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল তার ১ম স্বামী আবার উক্ত মহিলাকে বিবাহ করতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন। এছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠] 

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]

وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}

আরো জানুনঃ- 

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক তে কোন বিচ্ছেদ বা সমস্যা হয়নি।

(০৩)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন—
إِذَا أَتَى أَحَدُكُمْ أَهْلَهُ فَلْيَسْتَتِرْ وَلاَ يَتَجَرَّدْ تَجَرُّدَ الْعَيْرَيْنِ
তোমাদের কেউ যখন স্ত্রীর সঙ্গে মিলন করে, তখন সে যেনো আবৃত থাকে, গাধা যুগলের মতো যেনো একেবারে নগ্ন না হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ— ১/৬১৯, ১৯২১}

আম্মিজান আয়িশা রা. বলেন—
مَا رَأَيْتُهُ مِنْ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلاَ رَآهُ مِنِّي
আমি রাসুলুল্লাহর সা. এর থেকে তা কখনো দেখিনি এবং তিনিও আমার থেকে কখনো তা দেখেননি। {সুনানে ইবনে মাজাহ)

★সুতরাং কেউ দেখে ফেলার আশংকা না থাকলে সম্পূর্ণ খালি গায়ে সহবাস যদিও জায়েজ,তবে অনুত্তম।

স্বামী স্ত্রীর গোপণাঙ্গ চুষার বিধানঃ-

★মেডিকেল সায়েন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক বিশেষজ্ঞই এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে,লজ্জাস্থান মুখে নেওয়া তথা ওরাল সেক্স মানব্যস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং মানবদেহে অনেক রোগের জীবাণু উৎপত্তি ও সংক্রামণের কারণ। তারা এর ক্ষতির অনেক দিক উল্লেখ করেছেন। 

আর শরিয়তের মূলনীতি হলো—  لا ضرر ولا ضرار
তাই এটি কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।

فى الفتاوى الهندية- إذا أدخل الرجل ذكره في فم امرأته قد قيل يكره ، (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الثلاثون فى المتفرقات-5/372
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার লিঙ্গ তার স্ত্রী মুখে প্রবেশ করায়,তাহলে কেহ কেহ এটাকে মাকরুহ বলেছেন।  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন!   
https://ifatwa.info/13562/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
১. লজ্জাস্থান Suck করা হলে স্বাভাবিক হলো, লজ্জাস্থান থেকে নির্গত নাপাক (বীর্য, মযি ইত্যাদি) জিহ্বা, মুখ ইত্যাদিতে লাগবে। আর জরুরত ছাড়া নাপাক স্পর্শ করাকে ফকিহগণ বৈধ মনে করেন না। আর নাপাক চুষে ফেলা বা পান করাকে তো বৈধ বলার প্রশ্নই আসে না।

২. মানুষের শরীরের সবচে সম্মানিত অঙ্গ হলো চেহারা। আর লজ্জাস্থান হলো নাপাকির জায়গা। সুতরাং সম্মানিত জায়গাকে নাপাকির জায়গায় স্পর্শ করানো অবশ্যই নিন্দনীয়।

৩. মুখ দ্বারা আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা হয়, যিকির করা হয়। এই মুখে নাপাক লাগানো এবং নাপাকির স্থান Suck করা বড় গর্হিত কাজ।

৪. মুখের অনেক জীবাণু লজ্জাস্থানে রোগ সংক্রামণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া লজ্জাস্থানের জীবাণু মুখে এবং মুখের ভায়া হয়ে ভেতরে রোগ সংক্রামণ করার আশংকা থাকে।

★তাই এটি মাকরুহে তাহরিমি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...