আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
সম্মানিত ওস্তাজ,
আস সালামু আলাইকুম। আমার কিছু বিষয় জানার ছিলো। মেহেরবানি করে উত্তর দিলে উপকৃত হবো ইন শা আল্লাহ্।
১) আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার আহলিয়া গর্ভধারন করেছেন। আদর্শ ও দ্বিনদার, চরিত্রবান সন্তান লাভের জন্য এবং উত্তম বাবা-বা হওয়ার জন্য আমরা কি কি আমল করতে পারি আল্লাহর কাছে? কিংবা নরমালে যাতে আমাদের ডেলিভারি হয়, সেজন্য ইন শা আল্লাহ কি কি আমল করতে পারি আমরা??

২)গর্ভের সন্তানের কত মাস হলে গর্ভের সন্তানের রুহ দান করা হয় বা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার ভাগ্য লিপিবদ্ধ হয়?

৩)গর্ভকালীন সময়ে নারীদের বেশকিছু জটিলতা দেখা দেয়। আমার আহলিয়াও প্রচন্ড কোমড় এবং জয়েন্টে ব্যথার কারনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন না। উপরন্তু প্রচন্ড মাথা ঘুরানো আর বমির ঔষধ খাওয়া সত্বেও দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ের সময় রুকুতে গেলে কখনো মুখভর্তি বমি চলে আসে। এমতাবস্থায় কি বসে নামাজ আদায় করা যাবে কিনা??

৪)প্রসব /ডেলিভারির সময় উপনিত হওয়ার পরে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন নির্দিষ্ট সময় পূর্ণ হলে প্রসব ব্যথা ওঠা, পানি ভাঙ্গা কিংবা কখনো ভাঙ্গে না, অল্প পরিমানে রক্তস্রাব যাওয়া। কোনো নারীর একইসাথে সব লক্ষন প্রকাশ পায় আবার কারো ১ বা ২টি লক্ষন প্রকাশ পায়।আমার জানার বিষয় হলো প্রসব ব্যথা শুরুর পরে কতক্ষণ পর্যন্ত নামাজ আদায় করা যাবে? এই লক্ষণের যেকোনো একটা লক্ষণ দেখা দিলে নাকি সবগুলো লক্ষন প্রকাশ পাওয়ার পরে জানালে উপকৃত হবো ইন শা আল্লাহ্।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এক্ষেত্রে উক্ত মা বাবার জন্য পরামর্শঃ-
আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করুন।

رَبِّ هَبْ لِىْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةًۚ اِنَّكَ سَمِيْعُ الدُّعَآءِ

হে আমার পালনকর্তা! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (আল ‘ইমরান: ৩৮)

এই দোয়াও পড়তে পারেন—
رَبِّ هَبْ لِىْ مِنَ الصّٰلِحِيْنَ 
হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান করুন। (আস-সাফফাত: ১০০)

গোনাহ থেকে বিরত থাকুন।
ধৈর্য্য ধারণ করুন।
সময় মত নামাজ আদায় করুন।
যিকির আযকারে লিপ্ত থাকুন।
ওযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।

আপনার সন্তানের জন্য কোরআন তেলাওয়াত করুন: প্রায় ২০ তম সপ্তাহে গর্ভের বাচ্চা শোনার সক্ষমতা অর্জন করে। মা প্রতিদিন কিছু কোরআন তেলাওয়াত করে বাচ্চার মাঝেও কোরআনের মাঝে সম্পর্ক জুড়ে দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. বলেন,

عَلَيْكُم بِالْقُرْآَن ، فَتَعَلَّمُوه وَعَلَّمُوه أَبْنَائِكُم ، فَإِنَّكُم عَنْه تُسْأَلُوْن ، وَبِه تُجْزَوْن

কোরআনের বিষয়ে তোমাদের উপর অবশ্য পালনীয় এই যে, কোরআন শিক্ষা করা এবং তোমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেয়া। কেননা এ বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তার প্রতিদানও দেয়া হবে। (শরহে সহীহ বুখারী, ইবন বাত্তাল : ৪৬)

★খাবারের মধ্যে খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করুন।  
আরো আমল ও করনীয় জানুনঃ- 

★নরমালে যাতে আপনার স্ত্রী ডেলিভারি হয়, সেজন্য আমলঃ-

শায়খ ইবনু ঊছাইমীন রহ. বলেন, ‘গর্ভবতীর সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কষ্টের সময় এসমস্ত আয়াত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ্ অনেকের উপকার দান করবেন।

একজন মহিলা এআয়াতগুলো পাঠ করে সন্তান প্রসবীনীর উপর ফুঁক দিবে। অথবা যে কোন লোক তা পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিবে। তারপর সে পানি গর্ভবতীকে পান করাবে এবং তা দিয়ে তার পেট মালিশ করবে।’

এই আয়াতগুলো পাঠ করে মহিলার উপর ফুঁক দিবে: ১) সূরা রা‘দের ৮নং আয়াত ২) সূরা ফাতির ১১ নং আয়াত ৩) সূরা নাহাল ৮৭নং আয়াত এবং ৪) সূরা যিলযাল।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে; যে ব্যক্তি এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’ আল্লাহ তাআলার এ গুণবাচক নামগুলোর দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় আলাদা আলাদা আমল এবং অনেক ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে।

আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْمُبْدِئُ)’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলের মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের হেফাজত এবং সহজে নিরাপদে নারীদের সন্তান প্রসব হয়।
(সংগৃহীত।)

★এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর নিয়মিত পরামর্শ নেয়ার পরামর্শ রইলো। 
জানা মতে এক্ষেত্রে অনেকের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ভালো হয়। 

আরো জানুনঃ- 

(০২)
ভ্রুনের বয়স যখন ১২০ বা চার মাস হয়ে যায়, তখন আল্লাহ তায়ালা তার মধ্যে রুহ দান করেন।

আরো জানুনঃ- 

★আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে মানব সন্তানের ভাগ্য লিপিবদ্ধ হয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- 
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)

(০৩)
এক্ষেত্রে তিনি যমিনে বসে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
সন্তান ভুমিষ্ঠের আগ পর্যন্ত নামাজের বিধান রয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে কোনো নামাজ কাজা হলে পরবর্তীতে নিফাসের পর কাজা আদায় করে নিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...