জবাবঃ-
প্রথমেই আমরা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের বড় দশটি আকিদার কথা উল্লেখ করছি......যা আমরা ইতিপূর্বে
1402 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ করেছি...
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উল্লেখযোগ্য কিছু আক্বিদা-বিশ্বাস
(১)সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি।এবং তাদের স্ব স্ব অবস্থানে সঠিক। তাদের মধ্য থেকে কাউকে মন্দ বলা যাবে না।এবং কটাক্ষ করাও যাবে না।তাদের মধ্যকার পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ নিছক তাদের নিজস্ব ব্যাপার।উক্ত ঝগড়ায় শরীক হয়ে কারো পক্ষাবলম্বন করা যাবে না।বরং সর্বদা নিজেকে এই স্পর্শকাতর বিষয় থেকে আলগিয়ে রাখতে হবে।
(২)
জান্নাতের স-ুসংবাদ
দশজন সাহাবায়ে কেরাম সহ আরো কিছু সংখ্যক সাহাবায়ে কেরামের ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ এসেছে।এ কথার উপর ইয়াক্বিন ও বিশ্বাস রাখা।
(৩)
মুজার উপর মাসেহ করা বৈধ।
(৪)
নাবিযে তামার
অর্থাৎ মাঠির পাত্রে খুজুর বা আঙ্গুর ভিজিয়ে কয়েকদিন রেখে দেওয়া। নেশার আসার আগ পর্যন্ত সেটাকে নাবিযে তামার বলা হয়।আর নেশা আসার পর সেটাকে মদ বলা হয়।নাবিযে তামার বৈধ,আর মদ হারাম।
(৫)
আম্বিয়া ও আওলিয়ায়ে কেরাম এর স্থর।
মানুষ যতবড়ই ওলী হোক না কেন,সে আম্বিয়ার স্থরে পৌছতে পারবে না।
(৬)
শরীয়তের বিধি-বিধানের অনুসরণে সবাই বাধ্য।
পৃথিবীর কোনো মানুষ এমন কোনো স্থরে কখনো পৌছতে পারবে না যে,যেখানে পৌছে গেলে তার উপর থেকে সকল প্রকার বিধিনিষেধ চলে যায়।
(৭)
আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া।
আল্লাহ তা'আলা রহমান এবং রাহীম তথা অসীম দয়ালু।আল্লাহ রহমত থেকে একমাত্র কাফিরই নিরাশ হতে পারে।
(৮)
আল্লাহর আযাব থেকে বে-খাওফ হওয়া।
আল্লাহ যেকোনো সময় আযাব দিতে পারেন।সুতরাং আল্লাহর আযাব থেকে বে-খাওফ হওয়া যাবে না।
(৯)
কাহিনের তাসদ্বীক্ব
ভবিষৎবাণী প্রদাণকারীর খবরকে সত্যায়ন করা কুফুরি।তবে কেউ যদি সৌরবিজ্ঞানের আলোকে চিন্তা গবেষনার মাধ্যমে কোনো খবর দেয়,তাহলে সেটাকে বিশ্বাস করা অবশ্যই কুফরী হবে না।কুফরী সেটাই যা কোনো প্রকার চিন্তা গবেষনা ব্যতীত নিশ্চিতরূপে কোনো ভবিষ্যৎ বাণী প্রদাণ করা হয়ে থাকে।
(১০)
ইলমে গায়েব
ইন্দ্রীয়শক্তি দ্বারা যা অনুভব করা যায় না বা যাকে চিন্তা গবেষনার মাধ্যমে আয়ত্ব করাও যায় না।সে বিষয়ের জ্ঞান ইলমে গায়েবের অন্তর্ভুক্ত। এ জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহ-ই জানেন।আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।আল্লাহ তা'আলা কাউকে জানিয়ে দিলে তিনি অবশ্য সেগুলোকে জানতে পারেন।
এই দশটি হলো আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উল্লেখযোগ্য আক্বিদা-বিশ্বাস।(শরহে আক্বাঈদ লিন-নাসাফি)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি যে প্রশ্নটি করেছেন,
"আকিদা বিষয়ক বই লেখা আর আকিদা সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য কি?"
বিষয়টাকে একটু ব্যখ্যা করে কমেন্টে উল্লেখ করবেন।জাযাকাল্লাহ।
নেফাক্ব-نفاق দু-প্রকার।
যথাঃ-
(ক)নেফাক্ব ফিল এ'তেক্বাদ-نفاق في الاعتقاد অর্থ্যাৎ যার অন্তরে ইসলামও মুসলমানদের প্রতি অবিশ্বাস সহ মুসলমানদের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা রয়েছে।সে এ'তেক্বাদী মুনাফিক,তার শেষ আশ্রয়স্থল হবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।
(খ)নেফাক্ব ফিল আমল,نفاق في العمل. অর্থ্যাৎ যার অন্তর ঠিকই ইসলাম এবং মুসলমানদের প্রতি আশ্বস্ত রয়েছে।তবে তার কর্মের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে।তার আ'মলে কমতির ধরুণ সে শাস্তি উপভোগ করবে।
কিন্তু সে মু'মিনদের কাতারেই গণ্য হবে।দেখুন-
8709
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
নেফাক্ব ফিল এ'তেক্বাদ-ই বড় নেফাকী।যার শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং চিরস্থায়ী।জাহান্নামের সর্বনিম্নস্থরে যার শাস্তি দেয়া হবে।আর নেফাক্ব ফিল আমল হল,ছোট নেফাক।তারও শাস্তি রয়েছে।তবে পূর্বেরটার মত নয়।এটা ক্ষনস্থায়ী শাস্তি।
প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা ভঙ্গ করা, সেটা নেফাক্ব ফিল আমল এর অন্তর্ভুক্ত।তথা ছোট নেফাকি।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
8795
রাসূলুল্লাহ সাঃ যাদেরকে মুসলমান গন্য করেননি,তারা সবাই ছিল,প্রথম প্রকারের মুনাফিক।যাদের শাস্তি হল,জাহান্নামের সর্বনিম্নস্থর।
যাকাত যারা দেয়নি,তারা মূলত যাকাতকে অস্বীকার করেছিলো।যাকাত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ ফরয বিধানের একটি।ফরয বিধানকে অস্বীকার করা কুফুরী।যেজন্য হযরত আবু বকর রাযি জিহাদ ঘোষণা দিয়েছিলেন।এটা মুসলমান মুসলমানের যুদ্ধ ছিল না।বরং মুসলমান মুরতাদের যুদ্ধ ছিলো।