আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম,

শায়েখ আমি একজন স্টুডেন্ট, আমার বাবার কয়েক ধরনের ব্যবসা রয়েছে, তো তিনি অনেক সময় তার প্রয়োজনে বা বিল পাওয়া না গেলে বা টাকা ম্যানেজ না করা গেলে তিনি ব্যাংক থেকে লোন নেন,আজকে শুনলাম গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক থেকে লোনের কথা,আগে জানতাম জমি সিকিউরিটি হিসেবে রেখে লোন নেয়ার কথা,এখন তিনি ব্যাংক থেকে সুদে লোন নেন কিনা তাও আমি সম্পূর্ণভাবে শিউর না,সম্ভবত নেন,সুদে লোন নিলে তো আমার জানামতে সেই টাকা হারাম হওয়ার কথা,কিন্তু তিনি যে টাকা দিয়ে ব্যবসা করেন তা সবটুকু সুদে লোন নেয়া নয়,  আমি নিজে ইনকাম করতে চাই কিন্তু তাদের জন্য পারছি না,  আমার ইচ্ছে থাকলেও করতে পারছি না, তাকে হালাল -হারামের বিষয়টি বলতেও পারছি না বললে উল্টো আমার উপর চড়াও হবে শিউর, শায়েখ এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে

 ১/  তার থেকে টাকা পয়সা নেয়া,তার কাছে কোন কিছু চাওয়া,তার কেনা খাবার খাওয়া, তার টাকা দিয়ে চলা কি আমার জন্য জায়েজ হবে?

২/আমাকে তারা কোনো কিছু গিফট করলে বা কিছু কিনে দিলে তা কি আমার জন্য জায়েজ?

৩/কয়েক বছর পর যদি আমি নিজে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইনকাম করা শুধু করি (ইন শা আল্লাহ) তাহলে  কি সেই টাকা আমার জন্য হালাল হবে?প্রশ্নটি করলাম কারণ তাদের টাকা দিয়ে কেনা কম্পিউটা ব্যবহার করা হবে!

৪/ ব্যাংক থেকে সুদে লোন নেয়ার কারণে কি টাকা হারাম হয়ে গেছে?সেই টাকা থেকে অর্জিত লভ্যাংশও কি হারাম?

৫/ভবিষ্যতে তার সম্পদ থেকে ভাগ নেয়া কি জায়েজ হবে?
৬/তার টাকা দিয়ে যদি আমি ভবিষ্যতে কোন ব্যবসা শুরু করি বা সে আমাকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া বা আমাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়, তাহলে সেই উপার্জিত টাকা কি হালাল হবে আমার জন্য?
(শায়েখ অনুগ্রহ করে দ্রুত উত্তর দিবেন দয়া করে,অনেক বড় সমস্যায় আছি)

1 Answer

0 votes
by (556,350 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান মতে সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান উভয়ই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ। তাই এ ভিত্তিতে লোন নেওয়া,তা দিয়ে ব্যবসা করা,অন্যকে এ থেকে লোন দেওয়া জায়েজ নয়। হারাম। 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
,
ব্যাংক লোন হারাম।কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আসার পর সেই লোনকে পরিশোধ করার পর উক্ত লোন দিয়ে যা খরিদ বা তৈরী করা হয়েছিলো,সেটা হালালই থাকছে।যদিও লোন গ্রহণ করা হারাম ও অবৈধ ছিলো।

ব্যাংক লোন সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন 

ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা জায়েজ নয়।

লোন গ্রহণ নাজায়েয ও হারাম। যদি লোনকে হালাল টাকা দ্বারা পরিশোধ করা হয়, তাহলে লোনের টাকা দ্বারা যা কিছুই করা হবে, তা জায়েয।পরবর্তীতে যত ইনকাম হবে, তার সবই জায়েয।
লোন গ্রহণের জন্য তাওবাহ করতে হবে।

আরো জানুনঃ 

★লোন নিয়ে ব্যবসা করলে ব্যবসার মুনাফা হারাম হবে কিনা,সেটি নির্ভর করবে লোন পরিশোধ করছে কোন টাকা দিয়ে,সেটির উপর। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার বাবা সুদ দেন।
তবে তিনি সুদ গ্রহন করেননা।

সুতরাং তার থেকে টাকা পয়সা নেয়া,তার কাছে কোন কিছু চাওয়া,তার কেনা খাবার খাওয়া, তার টাকা দিয়ে চলা আপনার জন্য জায়েজ হবে।

(০২)
হ্যাঁ, জায়েজ।

(০৩)
তাদের টাকা দিয়ে কেনা কম্পিউটা ব্যবহার করা যাবে।

আপনি যদি অনলাইনে হালাল কোনো ইনকাম করেন,সেটা জায়েজ হবে।

(০৪)
ব্যাংক থেকে সুদী লোন নিয়ে ব্যবসা করলে ব্যবসার মুনাফা হারাম হবে কিনা,সেটি নির্ভর করবে লোন পরিশোধ করছে কোন টাকা দিয়ে,সেটির উপর। 
যদি হালাল টাকায় লোন শোধ করে,তাহলে ব্যবসার মুনাফা হালাল হবে।

আর যদি হারাম টাকায় লোন শোধ করে,তাহলে ব্যবসার মুনাফা হারাম হবে।

(০৫)
হ্যাঁ, জায়েজ হবে।

(০৬)
সেক্ষেত্রে সেই উপার্জিত টাকা আপনার জন্য হালাল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
শায়েখ (৪) নং উত্তরের ক্ষেত্রে যদি যেই টাকা লোন নিয়েছে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করে লাভবান হয়ে টাকা শোধ করে বা লস হলে অন্য জায়গা থেকে শোধ করে বা অন্য সেক্টর থেকে তাহলে কি হালাল হবে?
(৭)আরেকটি প্রশ্ন আমি যথেষ্ট পরিমাণ ইনকাম করার পরও কি তাদের থেকে টাকা নিতে পারবো?
by (556,350 points)
(০১)
এক্ষেত্রে যেহেতু হালাল টাকা হতেই শোধ করছে,সুতরাং তার টাকা, লভ্যাংশ হালাল হবে।

(০২)
হালাল টাকায় লোন শোধ করলে আপনি তাদের থেকে টাকা নিতে পারবেন।
by (4 points)
শায়েখ ক্ষমা করবেন,আবার বিরক্ত করছি এর জন্য,
প্রশ্ন: সে (আমার বাবা)যদি তওবা না করে তাহলেও কি তার সম্পদ আমার জন্য হালাল হবে?
by (556,350 points)
এক্ষেত্রে মূল কথা হলো তিনি যদি হালাল টাকায় লোন শোধ করেন,সেক্ষেত্রে আপনি তার থেকে টাকা নিতে পারবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...