আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (7 points)
আসসালামুয়ালাইকুম,
প্রশ্ন ১: এলাকায় প্রচলিত মিলাদে সুর করে যে দরুদ পড়া হয়, এই দরুদ কি সহি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত?

প্রশ্ন ২: এড়কবার সূরা ফাতিহা, তিনবার ইখলাস এগুলো পড়ে যে দোয়া করা হয়, এগুলো কি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?

 প্রশ্ন ৩: কুরআন হাদীসের আলোকে কীভাবে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া পৌঁছানো যায়?
প্রশ্ন ৪: এলাকায় প্রচলিত মিলাদ কিয়াম কি জায়েয? ( মানে, প্রথমে শুরু করে দরুদ পড়া হয় সবাই একসাথে, তারপর নিজেদের ইচ্ছামত বানানো শের দিয়ে দাঁড়িয়ে সালাম দেয়া হয়, পরিশেষে সূরা ফাতিহা ১বার, সূরা ইখলাস তিনবার, এগুলো করে সবাই মিলে দোয়া করা হয়।) জায়েজ না হলে ভালোভাবেকিভাবে দূর করা যেতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (53,010 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

শরীয়তের বিধান হলো যে পদ্ধতিতে কোন ইবাদত খাইরুল কুরুনে আদায় করা হতো না, সেটিকে জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে উক্ত ইবাদত করাও বিদআতের শামিল।

তাই দরূদ পড়া যদিও উত্তম ও সওয়াবের কাজ। কিন্তু এভাবে মাহফিল করে সম্মিলিতভাবে করার বিশেষ সূরতটি খাইরুল কুরুনে ছিল না। তাই এটিকে আবশ্যকীয় বা জরুরী মনে করে করলে তা পরিস্কারই বিদআত হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻣَﻠَﺎﺋِﻜَﺘَﻪُ ﻳُﺼَﻠُّﻮﻥَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺻَﻠُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠِّﻤُﻮﺍ ﺗَﺴْﻠِﻴﻤًﺎ

আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।(সূরা আহযাব-৫৬)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

 ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻣَﻦْ ﺻَﻠَّﻰ ﻋَﻠَﻲَّ ﺻَﻠَﺎﺓً ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺑِﻬَﺎ ﻋَﺸْﺮًﺍ

যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দুরুদ পড়বে,আল্লাহ তা'আলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবে। (সহীহ মুসলিম-৩৮৪)

আল্লামা মুনাভী রহঃ লিখেছেন-

اى أنشأ واخترع وأتى بأمر حديث من قبل نفسه…… (ما ليس منه) أى رأيا ليس له فى الكتاب أو السنة عاضد ظاهر أو خفى، ملفوظ أو مستنبط (فهو رد) أى مردود على فاعله لبطلانه، (فيض القدير، رقم الديث-8333)

যার সারমর্ম হলো যদি এমন নতুন ইবাদত তৈরী করে,যেটা কুরআন সুন্নাহ তে নেই,এটা বাতিল।  

وضع الحدود وإلتزام الكيفيات والهيئات المعينة فى أوقات معينة لم يوجد ذلك التعين فى الشريعة، (الإعتصام-1/39)

وفيه ايضا- ومنها التزام الكيفيات والهيئات المعينة كالذكر بهيئة الإجتماع  على صوت واحد واتخاذ يوم ولادة النبى صلى الله عليه وسلم عيدا، وما اشبه ذلك.. الخ (الإعتصام-1/29)

যার সারমর্ম হলো নির্দিষ্ট ছুরত এবং নির্দিষ্ট এমন কাজ করা,যা শরীয়ত করেনিএটা বাতিল হবে।

বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ 

১-হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ। {ইমদাদুল ফাতাওয়া-৫/৩২৮-৩২৯}

২-মুফতী মাহমুদ গঙ্গুহী রহঃ। [ফাতাওয়া মাহমুদিয়া-৩/১১৭-১১৮}

৩-মুফতী ইউসুফ লুধিয়ানবী রহঃ। {আপকি মাসায়েল আওর উনকা হল-১/৪৪৪}

৪-মুফতী রশীদ আহমাদ লুধিয়ানবী রহঃ। {আহসানুল ফাতাওয়া-১/৩৪৭-৩৪৮}

৫-মুফতী আব্দুর রহীম লাজপুরী রহঃ। {ফাতাওয়া রহিমীয়া-২/৭২-৭৩},

তবে সংখ্যা নির্দিষ্টকরে দরুদ পাঠ করার কোনো বৈধতা নাই। বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/1104

শরীয়তের বিধান হলো এমন দরুদ ও সালাম, যেখানে রাসুল সাঃ কে হাজির নাযির মনে করা যায়, এমন কোনো শব্দই ব্যাবহার করা হয়নি এবং ব্যাকরনগত দিক দিয়েও কোনো ভুল নেই, এমন দরুদ ও সালাম পড়া যাবে।  অন্য কোনো দরুদ ও সালাম পড়া যাবেনা। সুতরাং ইয়া নবী সালামু আলাইকা, ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা.... বলা বিদয়াত। (দারুল উলুম দেওবন্দ এর ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশিত ৮৫৫৯ নং ফতোয়া)      

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর: সুতরাং সমাজে প্রচলিত নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতির মাধ্যমেও দরুদ পাঠের কোনো বৈধতা নাই। কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে বসে বা দাড়িয়ে কুরআন হাদীসে বর্ণিত বাক্য ব্যতীত নির্দিষ্ট কিছু বাক্য উচ্চারণ এবং উক্ত বাক্যর ফাঁকে ফাঁকে দরুদ পাঠের কোনো বৈধতা শরীয়তে নেই। এগুলো ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিল না। এগুলো বিদআত, পরিত্যাজ্য। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুক।আমীন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-

https://www.ifatwa.info/3463

https://ifatwa.info/2916/

২ ও ৩ নং প্রশ্নের উত্তর জানতে ভিজিট করুন :

https://ifatwa.info/305/

https://ifatwa.info/7720/  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...