আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,

আমার বাবা একটি দোকান আছে। বাবা ওই দোকানের হিসাব-নিসাব রাখার ও আরো কিছু কাজের জন্য আমার ভাইয়াকে বলেছেন৷ কিন্তু ভাইয়ার উপর অনেক দায়িত্ব। বাবা ২য় বিয়ে করে উনার ২য় পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। আমাদের সাথে উনার সম্পর্ক এই যে, উনি মাঝে মধ্যে বাসায় আছেন। তাও বেশিরভাগ সময় দরকারে। আমাদের খোঁজখবর কিছুই নেন না৷ তবে এইরকম না যে তিনি আমাদের থেকে সম্পর্ক একদম ছিন্ন করে ফেলেছেন। আসলে আমরা নিজেরাও জানি না আমাদের বাবার কি হয়েছে। উনি উনার মত করে চলছেন।
আমাদের ভরণপোষণ হিসেবে বাবার ১ ফ্ল্যাট আছে, ওই ফ্ল্যাটের টাকা আমরা পাই। আমরা উনাকে সর্বোচ্চ সম্মান ও মহব্বত করার চেষ্টা করি, আলহামদুলিল্লাহ।

আমার, আম্মুর, দাদীর এবং ঘরের পুরো দায়িত্ব ভাইয়ার উপর। ভাইয়া ভার্সিটিও পড়েন৷ সাথে ইন্টারনেটে র মধ্যে হালাল উপার্জনের জন্য চেষ্টাও করছেন৷ যেখানে হালাল উপার্জনের জন্য চেষ্টা করছেন, ওখানে প্রচুর সময় দিতে হয়৷ উপার্জনের চেষ্টার বিশেষ কারণ হলো, আমাদের খাবারদাবারের খরচ ছাড়া বাকি সব খরচ বাবার ভরণপোষণের টাকা দিয়ে হয়। অনেক সময় টাকার টান পরে তখন দাদী দেন। আর খাবারদাবারের খরচ দাদী বহন করেন৷ দাদীর বয়স অনেক। আল্লাহ নেক হায়াত দান করুন, উনার মৃত্যুর পর আমরা চাই না চাচাদের উপর বুঝা হতে। আর বাবার এই সামর্থ্য নেই যে, আমাদের ভরণপোষণের জন্য আরো টাকা দিবেন। তাই ভাইয়া সব মিলিয়ে উপার্জনের খুব চেষ্টা করছেন। আর আমার ভাই বেশ দূর্বল মানুষ। একটু স্যাইকেল চালালেও পায়ে ব্যথা করে। সেখানে, পুরো পরিবারের দায়িত্ব, ৫ তলা বিল্ডিং এর টাকার হিসাব রাখার দায়িত্ব, ও ঘরের বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব, ভার্সিটির পড়া ও হালাল উপার্জনের দায়িত্ব সবমিলিয়ে বাবার দোকানের হিসাবের দায়িত্ব- দোকানে দোকানে গিয়ে টাকা কালেক্ট, প্রোডাক্ট অর্ডার করা ইত্যাদির দায়িত্ব পালন করা ভাইয়ার পক্ষে অসম্ভব।
ভাইয়া বাবাকে সরাসরি আদবের সহিত বারবার বলেছেনও যে, উনি হালাল উপার্জনের চেষ্টা করছেন উনার সময় দেওয়া সম্ভব না। তাছাড়া বাবার দোকানে ২ জন কর্মচারীও আছেন ব্যবসা সামলানোর জন্য। এবং দাদী ও আম্মুও বলেছেন ভাইয়া পারবেন না। কিন্তু বাবা রাগ করেছেন। ভাইয়াকে বদদুআ দিয়েছেন।
আমার প্রশ্ন, আমার ভাইয়ার বাবার আদেশ না মানার কারণে কি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1722

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার বাবার ব্যবসা যদি হালাল হয়ে থাকে, তাহলে আপনার ভাইয়ার উচিৎ বাবার ব্যবসায় সময় দেয়া। তবে যদি কাজটি বেশ কষ্টসাধ্য হয়, বা সেখানে গেলে ঝামেলা বাধার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাহলে বাবাকে খুশী করেই প্রস্তাবকে নাকচ করা উচিৎ। উল্লেখযোগ্য কারণে বাবার প্রস্তাবকে নাকচ করার অধিকার সন্তানের থাকবে তবে অযথা বাবার প্রস্তাবকে নাকচ করা জায়েয হবে না। বাবার অবাধ্য হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...