আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in পবিত্রতা (Purity) by (9 points)
Assalamualaikum warohmatullohi wabarokatuh ustaz. আমরা জানি হায়েজ এর সময়সীমা সর্বোচ্চ ১০ দিন।আমার হায়েজ প্রথম ৩ দিন হেভি ফ্লো, ৪র্থ দিন হালকা ফ্লো থাকে,মাঝে মাঝে ৫  এবং ৬ তম দিন হালকা বাদামী বা হলুদাভ ডিসচার্জ থাকে। ৭ম দিনে ফ্রেশ আলহামদুলিল্লাহ।
১★কিন্তু আমার কনফিউশান হচ্ছে প্রায়ই হায়েজের ৪র্থ দিনে আমার ডিসচার্জ বন্ধ হয়ে যায়।৫ম দিনে আমি সালাত আদায় করি। ৫ম দিন রাতে আবার হালকা বাদামী বা হলুদাভ ডিসচার্জ দেখা যায়।তারপর আবার ৬তম দিনে পুনরায় যুহর থেকে সালাত আদায়  করি।

২★আবার ৫্ম দিনে হালকা কালারের ডিসচার্জ দেখা গেল ৬ ষ্ঠ দিনে সালাত আদায় করলাম তারপর ৬ষ্ঠ তম রাতে আবার বাদামী বা হলুদাভ বর্ণের ডিসচার্জ দেখা যায়।এক্ষেত্রে আমি কতোটুকু সময় হেয়াইট ডিসচার্জ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করব?

৩★আবার মাঝে মাঝে ৬ষ্ঠ তম দিনে কেনো রকমের ডিসচার্জ আসে না কিন্তু হেয়াইট ডিসচার্জও আসে না। ম্যাক্সিমাম সময় হোয়াইট ডিসচার্জ আসে ৭ম দিনের সকাল বেলা।এক্ষেত্রে বিূান কীরকম হবে? কোনো ডিসচার্জ না আসলেও দেখা যায় সারাদিন পরে রাতে হালকা বাদামী বা হলুদাভ ডিসচার্জ দেখা যায়।

৪★ধরুন ৬ষ্ঠ তম দিনে বেলা ১২ টার দিকে আমি কালারফুল ডিসচার্জ দেখতে পেলাম। তাই ফরজ গোসল না করে অপেক্ষা করতে ছিলাম হেয়াইট ডিসচার্জ আসা পর্যন্ত, কেননা অনেক সময় ৬ষ্ঠ তম দিন যেয়ে রাতেও কালারফুল ডিসচার্জ দেখা যায়।কিন্তু পরে আর কালারফুল ডিসচার্জ দেখতে পেলাম না ৭ম তম দিনে সকালে ক্লিয়ার (হেয়াইট ডিসচার্জ) দেখতে পেলাম  এক্ষেত্রে সালাত আদায়ের বিধান কীরকম হবে?

সবগুলো পয়েন্টের রিপ্লাই করলে মুনাসিব হয় যাতে করে কনফিউশান দূর হতে পারে।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ৩ তিন,আর সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হাদীস শরীফে এসেছে   
أقل الحیض للجاریۃ البکر والثیب ثلاثۃ أیام ولیالیہا وأکثرہ عشرۃ أیام
دار قطني، السنن، 1: 219، رقم: 61
রাসুল সাঃ বলেন  মহিলাদের হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা হলো ৩ দিন ৩ রাত,সর্বোচ্চ সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত।

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে ৫ম দিনে আপনি যে সালাত আদায় করলেন,এটা হায়েজ অবস্থায় সালাত আদায় বলে গন্য হবে।
অনিচ্ছাকৃত ভুলের দরুন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন,আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার যেহেতু ৫ম এবং ৬ তম দিন হালকা বাদামী বা হলুদাভ ডিসচার্জ থাকে। ৭ম দিনে ফ্রেশ হয়ে যায়।
সুতরাং আপনি ফ্রেশ হয়ে যাওয়ার জন্য ৭ম দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।

(০৩)
কোনো রকম স্রাব না আসলে আপনি হায়েজ শেষ হয়েছে বলেই ধরে নিবেন।

কোনো ডিসচার্জ না আসলেও সারাদিন পরে রাতে হালকা বাদামী বা হলুদাভ ডিসচার্জ দেখা গেলে সেক্ষেত্রে পুরোটা সময়েই হায়েজের অন্তর্ভুক্ত হবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে আপনি ৬ষ্ঠ তম দিনের জোহরের ওয়াক্ত হতে সালাত আদায় শুরু করবেন।

★মোট কথাঃ হায়েজ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পূর্বের মাস গুলোর হিসাবের ভিত্তিতে আপনার যদি প্রবল ধারণা হয় যে ১০ দিনের মধ্যে আবারো হায়েজ আসবেই?
সেক্ষেত্রে আপনি আবারো হায়েজ আসার অপেক্ষা করবেন,সালাত আদায় করবেননা।

এমতাবস্থায় আবারো হায়েজ আসলে সেক্ষেত্রে সেই হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর থেকে সালাত আদায় শুরু করবেন।
আর ১০ দিনের মধ্যে হায়েজ আর না আসলে সেক্ষেত্রে যেদিন যেই ওয়াক্ত হতে হায়েজ আসা বন্ধ হয়েছে,সেই ওয়াক্ত হতেই সালাত গুলির কাজা আদায় করে নিবেন। 

★হায়েজ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর পূর্বের মাস গুলোর হিসাবের ভিত্তিতে আপনার যদি প্রবল ধারণা হয় যে আর হায়েজ আসবেনা,সেক্ষেত্রে আপনি তখন থেকে সালাত আদায় শুরু করে দিবেন।

এক্ষেত্রে আবারো হায়েজ আসলে সেক্ষেত্রে মাঝের এই দিন গুলিও হায়েজ হিসেবেই গন্য হবে,সুতরাং এই সালাত গুলি হায়েজ অবস্থায় সালাত আদায় বলে গন্য হবে।
অনিচ্ছাকৃত ভুলের দরুন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন,আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।

আর যদি আবারো হায়েজ না আসে,সেক্ষেত্রে তো কোনো সমস্যাই নেই,নামাজ চালিয়ে যাবেন।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...