وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
শরীয়তের বিধান মতে গায়রে মাহরাম বালেগাহ মহিলার দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে দৃষ্টিপাত করা নাজায়েজ।
অনিচ্ছায় একবার দৃষ্টি চলে গেলে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে,২য় বার আর দৃষ্টিপাত করা যাবেনা।
কারন এতে ইচ্ছাকৃতভাবেই হয়ে যায়।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি ছেলে-মেয়েরা একসাথে ক্লাস করে,বালেগাহে মেয়েরা চেহারা হাত মুখ ঢেকে পরিপূর্ণ পর্দা না করে, তাহলে এমন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলে যেহেতু বালেগাহ মহিলাদের দিকে দৃষ্টিপাত করতেই হয়, তাতে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের গুনাহ হবে।
,
তাই তাকওয়ার খাতিরে তাদেরকে না পড়ানোই উত্তম।
কারন তাদের সামনেও পর্দা ফরজ।
তাদের দিকেও দৃষ্টিপাত নাজায়েজ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ؛ فَإِنَّمَا لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ “
হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ হযরত আলী রাঃ কে বলেন, হে আলী! [সহসা] একবার দেখার পর পুনরায় [কোন বেগানা নারীকে] দেখো না। কারণ, তোমার জন্য প্রথমবারে অনুমতি রয়েছে [যখন তা অনিচ্ছায় হয়ে যাবে], কিন্তু দ্বিতীয়বারের অনুমতি নেই।
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৯৭৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৫১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৭৭}
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا “
হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮}
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
এক্ষেত্রে শিক্ষক সকলকে হাত পা,চেহারা সহ পরিপূর্ণ পর্দা করার আদেশ করবেন, প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের নিয়ম আকারে বানিয়ে নিতে পারেন।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সকল বালেগাহ মেয়েরা চেহারা হাত মুখ ঢেকে পরিপূর্ণ শরীয়াহ নীতিমালা মেনে পর্দা করে,তাহলে সেখানে শিক্ষকতা করলে গুনাহ হবেনা।
মেয়েরা কোমলতা পরিহার করে প্রয়োজনে কথা বলতে পারবে,এক্ষেত্রে শরীয়াহ বিরোধী, তাদের জীবন ঘনিষ্ঠ কোনো কথাবার্তা শোনা যাবেনা।
ফেতনার আশংকা থাকলে এহেন চাকুরী না করাই উচিত।
আর যদি তারা পূর্ণ পর্দা না করে আসে,সেক্ষেত্রে তাদের দিলে তাকানোর দরুন গুনাহ হবে।
তাদের দিলে না তাকালে গুনাহ হবেনা।
(০২)
এখানে বেতন সংক্রান্ত মাসয়ালা হলোঃ
পড়ানোর বিনিময়ে বেতন দেওয়া হয়, তাই আপনি যদি সহশিক্ষা সম্ভলিত আলিয়া মাদ্রাসার নিয়ম অনুসারে কোনো প্রকার অবহেলা-অলসতা না করে ঠিকমত পড়ান,তাহলে যে বেতন পাবেন সেটা আপনার জন্য হালাল হবে।
তবে শরয়ী পর্দা মেইনটেইন না করলে সর্বদা পর্দা লঙ্ঘনের লিপ্ত থাকবেন।
আরো জানুনঃ
সহ শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ