আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
*, আজ সালাফী এক আলেমের বক্তব্যে শুনলাম যে, তাকবীরে তাশরিক অর্থাৎ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ, এই দোয়া ঈদ উপলক্ষে পড়া বিদআত! হ্যাঁ তিনি বললেন যে কেউ যেকোন টাইমে দোয়া হিসেবে এটা পড়তে পারে। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে পড়া যাবে না। কারণ এই সম্পর্কিত হাদিসের তিনজন রাবির ব্যাপারে সন্দেহ আছে!  তিনি নিজে একটা দোয়ার কথা বললেন, উক্ত দোয়াটি হলো, আল্লাহু আকবার কাবিরা (দুইবার), আল্লাহু আকবার তাজাল্লু, আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ, দোয়াটা এরকমই যতটুকু মনে পড়ছে, আল্লাহই ভাল জানেন।
*, এখন আমার প্রশ্ন হল উপরের উল্লেখিত তাকবীরে তাশরিক ঈদ উপলক্ষে পড়া কি আসলেই বিদআত?

তাকবীরে তাশরিক সম্পর্কে দলিল ভিত্তিক আলোচনার অনুরোধ করছি ইনশাআল্লাহ। এরই সাথে তার বক্তব্যের খণ্ডন করার দাবি ও রাখছি ইনশাআল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

তাকবিরে তাশরিক জিলহজের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত পড়া হয়। 

তাশরিকের দিনগুলোতে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর পুরুষদের ওপর উচ্চৈঃস্বরে একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। আর নারীরা নিচু স্বরে পড়বে,  যাতে নিজে শোনে। ( শামি : ২/১৭৮)

হাদিস শরিফে এসেছেঃ  

عن جابر بن عبد الله رضى الله عنه قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا صلى الصبح من غداة عرفة يقبل على أصحابه، فيقول: على مكانكم، ويقول: “الله أكبر الله اكبر، لا إله إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد” فيكبر من غداة عرفة إلى صلاة العصر من آخر أيام التشريق، (سنن الدار قطنى، باب العيدين-2/38، رقم-1721)

সারমর্মঃ 
রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন আরাফার দিন ফজর নামাজ পড়তেন,তখন ছাহাবায়ে কেরামদের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিতেন।
নিজ স্থানে থেকেই বলতেনঃ
الله أكبر الله اكبر، لا إله إلا الله، والله أكبر الله أكبر ولله الحمد”
আরাফার দিনের ফজর নামাজ থেকে আইয়্যামে তাশরিকের আছর পর্যন্ত তাকবির বলতেন।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
জিলহজ্জ মাসের ১ম দশকের এ দিনগুলোর নেক আমলের মধ্যে রয়েছে- তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) উচ্চারণ করে আল্লাহর যিকির করা। 

দলিল হচ্ছে নিম্নরূপ:

১। আল্লাহ তাআলা বলেন: “যাতে তারা তাদের কল্যাণের স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে। এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহ্র নাম স্মরণ করতে পারে”[সূরা হজ্জ, আয়াত: ২৮] ‘নির্দিষ্ট দিনগুলো’ হচ্ছে- যিলহজ্জের দশদিন।

২। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনে আল্লাহকে স্মরণ কর...”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২০৩] এগুলো হচ্ছে- তাশরিকের দিন।

৩। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “তাশরিকের দিনগুলো হচ্ছে- পানাহার ও আল্লাহকে স্মরণ করার দিন”[সহিহ মুসলিম (১১৪১)]

দুই: তাকবীর দেয়ার পদ্ধতি

আলেমগণ তাকবীর দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি মত পেশ করেছেন:

১. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার..ওয়া লিল্লাহিল হামদ (অর্থ- আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

২. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার..ওয়া লিল্লাহিল হামদ (অর্থ- আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

৩. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার.. আল্লাহু আকবার.. ওয়া লিল্লাহিল হামদ (অর্থ- আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই..আল্লাহ মহান..আল্লাহ মহান..সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য)।

যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তাকবীর দেয়ার সুনির্দিষ্ট কোন ভাষা বর্ণিত হয়নি তাই এ ক্ষেত্রে প্রশস্ততা রয়েছে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত তাকবীরে তাশরিক জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজর হয়ে ১৩ তারিখ আছর পর্যন্ত আইয়ামে তাশরিক উপলক্ষে পড়া বিদআত নয়।

তবে এক্ষেত্রে এই তাকবিরই বলতে হবে,অন্যটি বলা যাবেনা,এ ধরনের কথা সহীহ নয়।

এক্ষেত্রে চাইলে এই তাকবির বাদ দিয়ে অন্য যেকোনো তাকবির বলাও যথেষ্ট। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 128 views
...