আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে বর্ণনা করছেন, তিনি বলেন:
« إن النبي - صلى الله عليه وسلم - لم يجتمع عنده غداء ولا عشاء من خبز ولحم إلا على ضفف».
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুপুর ও রাতের খাবারে কখনো রুটি মাংস একত্রে মিলত না, যদিও মিলত তা হত অতি সামান্য।
তিরমিযী, হাদিস: ২৩৫৬
অর্থাৎ তিনি পরিতৃপ্ত হতেন না, কোন রূপে চালিয়ে নিতেন। যদি মেহমান আসত তবেই তাদের সাথে সৌজন্যমূলক ও তাদের আনন্দের জন্য তৃপ্ত হতেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন:
«ما شبع آل محمد من خبز شعير يومين متتابعين حتى قبض رسول الله - صلى الله عليه وسلم -»
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবার তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত পরস্পর দুই দিন যবের রুটি পেট ভরে পূর্ণ করে খায়নি।
মুসলিম, হাদিস: ২৯৭০
অন্য বর্ণনায় এসেছে:
«ما شبع آل محمد منذ قام المدينة من طعام بر ثلاث ليال تباعًا حتى قبض».
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমণের পর থেকে মৃত্যু বরণ পর্যন্ত তাঁর পরিবার পরস্পর তিন দিন পেট পূর্ণ করে গমের রুটি খায়নি।
মুসলিম, হাদিস: ২৯৭০
বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবার কিছু না পেয়ে ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমিয়ে যেতেন এক লোকমাও তার পেটে কিছু যেত না!
ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন:
«كان رسول الله - صلى الله عليه وسلم - يبيت الليالي المتتابعة طاويًا هو وأهله،لا يجدون عشاء، وكان أكثر خبزهم خبز الشعير».
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবার ক্ষুধার্তাবস্থায় পরস্পর কয়েক রাত অতিবাহিত করতেন। রাতের খাবার থাকত না তাদের কাছে, আর বেশীর ভাগ তাদের রুটি ছিল যবের রুটি।
তিরমিযী, হাদিস: ২৩৬০
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এমনও প্রমাণিত আছে যে, أنه كان يقيم الشهر والشهرين، لا يعيشه هو وآل بيته إلا الأسودان: التمر والماء. তিনি এক দুই মাস কাটিয়ে দিয়েছেন কিন্তু তাঁর ও পরিবারের জন্য দুই কাল বস্তু খেজুর ও পানি ব্যতীত জীবন ধারনের জন্য কিছুই জুটত না।
বুখারী, হাদিস: ২৫৬৭; মুসলিম, হাদিস: ২৯৭২
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যেভাবে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর খাবা রুটিন জানতে চেয়েছেন,এই ভাবে রুটিন করে রাসুলুল্লাহ সাঃ খাবার খাননি।
প্রত সপ্তাহে ২/৩ দিনের মতো রোযা রাখতেন।
অন্যান্য দিনে যখন যেটা উপস্থিত হতো,সেটাই খেতেন।
গোশত রুটি উপস্থিত হলে, তাই খেতেন অথবা ফল-মুল, গোশ ও রুটি উপস্থিত হলে, তাই খেতেন, শুধু রুটি বা শুধু খেজুর পেলে সেটাই খেতেন। তাঁর কাছে দুই প্রকার আনা হলে তিনি এ কথা বলতেন না যে, আমি দুই প্রকার খাদ্য গ্রহণ করব না। আর মজাদার ও মিষ্টি খাদ্য গ্রহণ করা থেকেও তিনি বিরত হতেন না।
মহানবী (সা.) খেজুর খেতেন। খেজুর তার প্রিয় ছিল। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বার্লির এক টুকরো রুটির ওপর একটি খেজুর রাখতে দেখেছি। তারপর বলেছেন, ‘এটিই খাবার-মসলা।’ (আবু দাউদ : ৩৮৩০)
অন্য হাদিসে আছে, প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে বাড়িতে খেজুর নেই, সে বাড়িতে কোনো খাবার নেই।’
নবীজি (সা.) দুধ খেতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মিরাজের রাতে বায়তুল মাকদিসে আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ে বের হলে জিবরাইল (আ.) আমার সম্মুখে শরাব ও দুধের আলাদা দুটি পাত্র রাখেন। আমি দুধের পাত্রটি নির্বাচন করি। জিবরাইল (আ.) বললেন, ‘আপনি প্রকৃত ও স্বভাবজাত জিনিস নির্বাচন করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১৬৪; তিরমিজি, হাদিস : ২১৩)
বিশ্বনবী (সা.) মধু খেতে পছন্দ করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন।’ (বুখারি, ৫১১৫; মুসলিম, ২৬৯৫)
আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মধু হলো উত্তম ওষুধ।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৯)।
লাউ বা কদু খেতে নবী (সা.) পছন্দ করতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার একজন দর্জি রাসুল (সা.)-কে খাবারের দাওয়াত করেন। আমিও মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে সেই খাবারে অংশগ্রহণ করি। রাসুল (সা.)-এর সামনে বার্লির রুটি এবং গোশতের টুকরা ও কদু মেশানো ঝোল পরিবেশন করা হয়। আমি দেখেছি, রাসুল (সা.)-প্লেট থেকে খুঁজে খুঁজে কদু নিয়ে খাচ্ছেন। আর আমিও সেদিন থেকে কদুর প্রতি প্রীত হয়ে উঠি। (মুসলিম : ২০৬১; বুখারি : ৫০৬৪)
এখন এক বছর পূর্ণ হওয়ার দিন তার মালিকানায় কত যাকাত যোগ্য সম্পদ আছে,সেটা দেখতে হবে।
সেক্ষেত্রে পূর্বের টাকা ধরে আরো টাকা যাকাত দিলে সেই অতিরিক্ত টাকা যাকাত দিতে হবে।