আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
124 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ্।
১// গীবত করা থেকে গীবত শুনতে হয় বেশি। এ থেকে কিভাবে বাঁচবো?  ফ্যামিলির লোকজনকে যদি বলি আমার কাছে আর কারো গীবত বলবেন না। তাহলে কষ্ট পায় এবং কান্নাও করে। নিরুপাই হয়ে গীবত শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে যাদের নামে গীবত শুনি তাদের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি  হয় সম্মান করতে ইচ্ছে করে না তাদের সাথে খারাপ ব্যবহারও করা হয়। আমার কাছে আমার আম্মুর নামে বেশি গীবত করা হয়। কিছু বলতেও পারিনা কাউকে। গীবত শুনার গুনাহ থেকে কিভাবে বাঁচবো??
২//  নিজের আখলাক চরিত্র  কিভাবে সুন্দর করবো?

৩// বাড়িতে নন মাহরাম মেহমান আসলে, আমি অন্যরুমে বা প্রয়োজনে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে আড়াল থেকে দেখি তারা কোথায় আছে?  এতে তাদের দিকে বেশিভাগ দৃষ্টি  পড়ে যায়। এতে কি আমার দৃষ্টি  খেয়ানত হবে? আমার কি গুনাহ হবে?

৪//পুরুষদের দিকে তাকালে কি গুনাহ হবে?
৫//কিভাবে দৃষ্টিকে কঠোরভাবে হেফাজত করবো??

৬// আল্লাহর সবচেয়ে  প্রিয় বান্দী হবো কিভাবে?

৭// একজন ভালো মুসলিমাহ হওয়ার জন্য কি কি করতে হবে?

৮// হেদায়েত  পাওয়ার আগে যে নামাজ এবং রোজাগুলো রাখিনি সেগুলো কিভাবে আদায় করবো?  আনুমানিক হিসাব করেছি নামাজ এবং রোজাগুলোর। আমি জেনেছি, যে ইচ্ছাকৃতভাবে ১ টা রোজা ভাংগে সেটার কাফফারা হিসেবে ৬০ টি রোজা রাখতে হয় এবং এটা না পারলে ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়াতে হয়। এখন এতগুলো রোজা আমি কিভাবে কি করবো?  নামাজগুলো পরতে পারবো ইন শা আল্লাহ। কিন্তু রোজার ব্যপারটা কি করবো?

1 Answer

0 votes
by (556,680 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
যেহেতু আপনার নিষেধের তারা শুনেনা।সুতরাং এক্ষেত্রে গীবত শুরু হলেই আপনি স্থান ত্যাগ করবেন। ঐ মজলিস ত্যাগ করে অন্য ঘরে চলে যাবেন।

(০২)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৩)
এর দরুন ফিতনার আশংকা না থাকলে আপনার গুনাহ হবেনা।
এতে আপনার দৃষ্টির খেয়ানত হবেনা।

(০৪)
শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের জন্য পর পুরুষের চেহারা দেখা,   যদি আকৃষ্ট হবার শংকা না থাকে,ফেতনার আশংকা না থাকে,  তাহলে জায়েজ আছে।

কিন্তু আকৃষ্ট হবার শংকা থাকলে জায়েজ নয়,হারাম।
তবে শংকা না থাকলেও দেখা অনুত্তম।

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ [٢٤:٣١
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে। [সূরা নূর-৩১]

عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم، فَقَالَ: أَيُّ شَيْءٍ خَيْرٌ لِلْمَرْأَةِ؟ فَسَكَتُوا، فَلَمَّا رَجَعْتُ قُلْتُ لِفَاطِمَةَ: أَيُّ شَيْءٍ خَيْرٌ لِلنِّسَاءِ؟ قَالَتْ: أَلَّا يَرَاهُنَّ الرِّجَالُ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «إِنَّمَا فَاطِمَةُ بِضْعَةٌ مِنِّي» رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا
হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত সাহাবাগণকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, মহিলাদের জন্য সবচে’ উত্তম কী? তখন সকলেই চুপ ছিল। তারপর যখন আমি বাড়ীতে ফিরলাম। তখন ফাতিমা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলামঃ মহিলাদের জন্য সবচে’ উত্তম কী? তখন ফাতিমা রাঃ বললেন, পর পুরুষকে না দেখা। তারপর এটি আমি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললাম। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয় ফাতিমা আমারী শরীরের অংশ। [মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৫২৬]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ الْفَضْلُ رَدِيفَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنْ خَشْعَمَ فَجَعَلَ الْفَضْلُ يَنْظُرُ إِلَيْهَا وَتَنْظُرُ إِلَيْهِ وَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْرِفُ وَجْهَ الْفَضْلِ إِلَى الشِّقِّ الآخَرِ
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফযল ইবনু ‘আববাস (রাঃ) একই বাহনে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে আরোহণ করেছিলেন। এরপর খাশ‘আম গোত্রের জনৈক মহিলা উপস্থিত হল। তখন ফযল (রাঃ) সেই মহিলার দিকে তাকাতে থাকে এবং মহিলাটিও তার দিকে তাকাতে থাকে। আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফযলের চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫১৩]

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পর পুরুষদের দিকে তাকালে গুনাহ হবে। তবে বিনা প্রয়োজন তাকানোকে উলামায়ে কেরামগন অনুত্তম বলেছেন।
,
তবে তার প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার শংকা থাকলে বা কোনো ভাবে ফিতনার আশংকা থাকলে গুনাহ হবে। 

(০৫)
কাহারো প্রতি কুদৃষ্টি পড়লে সেক্ষেত্রে মনে মনে ভাববেন যে আমি মহান স্রষ্টার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নাপাক পানি দ্বারা সৃষ্ট ব্যাক্তিকে প্রাধান্য দিলাম! 
আমার কাছে এটাই বড় হয়ে গেলো?

ইনশাআল্লাহ কাজ হবে।

(০৬)
এক্ষেত্রে করনীয় জানুনঃ- 

(০৭)
আল্লাহর বিধান পালনের পাশাপাশি 
নিজের হাত ও যবান হতে যেনো অপর মুসলিম নিরাপদ থাকে।
কাহারো হক নষ্ট করবেননা।
সকলের প্রাপ্য হক আদায় করবেন।
নিজের উপর অর্পিত সমস্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

আম্বিয়ায়ে কেরাম ও সাহাবাদের জীবনী পড়বেন।

(০৮)
প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর রমজানে রোযার নিয়ত করে রোযা রেখে বিনা ওযরে আপনি সেই রোযা ভেঙ্গে থাকলে কাফফারা আপনাকে আদায় করতেই হবে।

লাগাতার ৬০ টি রোযা রাখবেন,মাঝে হায়েজ চলে আসলে সেই দিন গুলি বিরতি থাকবেই, হায়েজ শেষ হলে আবারো রোযা রাখা শুরু করবেন। মোট ৬০ টি রোযা রাখবেন।

(নারীদের জন্য বিষয়টি কিছুটা সহজ।
হায়েজের দিন বিরতি হিসেবে পাওয়া যায়,কিন্তু পুরুষদের এই বিরতির সুযোগ নেই।)

কোনোভাবেই শারীরিক ভাবে এভাবে ৬০ টি রোখার সক্ষমতা না রাখলে সেক্ষেত্রে ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবেন।
অথবা ৬০ জন মিসকিনকে একটি করে সদকায়ে ফিতর সমপরিমাণ টাকা দিবেন।

এখন টাকা না থাকলে পরে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (17 points)
উস্তাদ,, আমি হেদায়োত  পাই ২০২০ সালে।  আর বালেগা হই ২০১৮ সালে।  ২০১৮-২০১৯ সালের রোজা আমি রাখছি কয়টা! খেয়ে ভাংছি কয়টা! এগুলো আমার মনে নেই। হাজার চেষ্টা  করেও মনে করতে পারছিনা । হয়তো অনেকগুলো রোজা ভাংছি বা রাখিনি।  ২০২০ সালে সম্ভবত আমি ১/২ টা রোজা ভাংছি  এটাও মনে নাই। তবে খেয়ে যে রোজা ভাংছি এটা আমার মনে আছে । কিন্তু  কোন সালে ভাংছি কতটা ভাংছি  এটা  সঠিক মনে নাই। যদি এক রমাদানে  ২ টা রোজা ভাঙ্গা হয়  তাহলে কাফফারা কি একবার দিলেই কি যথেষ্ট হবে??? নাকি ২ টা রোজার জন্য কাফফারা ১২০ টা রোজা + কাযা রোজা ২ টা। মোট ১২২ টা রোজা রাখতে হবে? 
উস্তাদ যেগুলো মনে নাই এই রোজাগুলোর কি করবো?
হায় আল্লাহ, এতগুলো রোজা আমার মাথা ঘুরতেছে। 
by (556,680 points)
আপনি যতগুলি রোযা ভেঙ্গেছেন,সব গুলোর জন্য এখন একটি কাফফারাই যথেষ্ট। 

যতগুলো রোযা ভেঙ্গেছেন ও রাখেননি,সব গুলোর কাজা আবশ্যক হবে।

এক্ষেত্রে প্রবল ধারণার হিসেবে সংখ্যা  নির্ধারন করতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...