মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারেন এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারেন,গরিব মিসকিনদের কেও দিতে পারেন।
আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবেন না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
لو ضحى عن ميت وارثه بأمره ألزمه بالتصدق بها وعدم الأكل منها(رد المحتار3/352)
যদি মৃত ব্যক্তি ওয়ারিশ তার ওসিয়ত পালনার্থে কুরবানী করে, তাহলে তা সদকা করা আবশ্যক,এবং ওয়ারিশরা এর গোস্ত খেতে পারবে না (রদ্দুল মুহতার-৩/৩৫২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)
কুরবানির দিনগুলো অর্থাৎ যিলহজ্বের ১০, ১১ ও ১২ এই ৩ দিন পুরো সময় কেউ যদি মুসাফির অবস্থায় থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব নয়।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৯)
فى الدر المختار: (عَلَى حُرٍّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ) بِمِصْرٍ أَوْ قَرْيَةٍ أَوْ بَادِيَةٍ عَيْنِيٌّ، فَلَا تَجِبُ عَلَى حَاجٍّ مُسَافِرٍ؛ فَأَمَّا أَهْلُ مَكَّةَ فَتَلْزَمُهُمْ وَإِنْ حَجُّوا،
সারমর্মঃ
আযাদ,মুসলমান, মুকিমের উপর কুরবানী ওয়াজিব
হজ রত মুসাফিরের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়,তবে যারা মক্কা বাসী,তাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব।
তবে একটি মাসয়ালাঃ-
যে সকল হাজী মক্কা,মিনা ও মুযদালেফা মিলে কুরবানীর সময় ১৫ দিন থাকবে তারা মুকীম। নেসাবের মালিক হলে হজ্বের কুরবানী ব্যতীত তাদের উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও ওয়াজিব। আর যারা মুসাফির থাকবেন তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। (ফাতাওয়া হিন্দীয়া ৫/২৯৩)
হজ্বে তামাত্তু/কেরানকারীর উপর দমে শোকর আবশ্যক হয়। যেটি কুরবানীর দিনসমূহে আদায় করতে হয়। সেই সাথে তার উপর যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, আর তিনি মুকীম হন, তাহলে তার উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও আবশ্যক হবে।
,
তাই তার উপর দু’টি কুরবানী করা আবশ্যক হবে।
স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ থেকে যারা গমণ করে থাকেন, তারা হজ্বে তামাত্তু/কেরানেরই নিয়ত করে থাকেন, পনের দিনের বেশি অবশ্যই মক্কায় বসবাস করে থাকেন, অর্থাৎ তারা মুকীম হয়ে যান।
তার উপর দু’টি কুরবানী করা আবশ্যক। একটি হজ্বের তামাত্তু/কেরান এর দমে শোকর। আরেকটি হল, কুরবানী।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হজ্বে তামাত্তু/কেরানকারীর উপর দমে শোকর আবশ্যক হয়। তামাত্তু/কেরান এর দমে শোকর এর নিয়তে হারাম এলাকায় বা মিনায় পশু জবাই করে দিবে।
তবে সে হাজী সাহেব যদি মক্কা,মিনা ও মুযদালেফা মিলে কুরবানীর সময় কমপক্ষে ১৫ দিন ঐ তিন এলাকায় থাকে,সেক্ষেত্রে সে যেহেতু মুকীম। তাই তিনি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তার উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও আবশ্যক হবে।
তিনি তার উপর আবশ্যক হওয়া ঈদুল আযহার কুরবানী চাইলে নিজ দেশেও আদায় করতে পারবেন।
চাইলে নিজ দেশে না দিয়ে হারাম এলাকাতে দিতে পারেন।