আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (5 points)
edited by
আমরা একাধিক ভাই বোন। প্রত্যেকেই সম্পদশালী । আমরা প্রত্যেক ভাইবোন মৃত বাবা মায়ের পক্ষে কুরবানী দিতে চাই।

১) মৃত ব্যক্তির পক্ষে একাধিক কুরবানী দেয়া যাবে কি?

২) মৃত ব্যক্তির পক্ষে দেয়া কুরবানীর গোশত খাওয়া ও বন্টনের বিধান কি?

৩) তামাত্তু  হজে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তির কি নিজ দেশে কুরবানী করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মৃত ব্যক্তির পক্ষে একাধিক কুরবানী দেয়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারেন এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারেন,গরিব মিসকিনদের কেও দিতে পারেন।

আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবেন না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।

لو ضحى عن ميت وارثه بأمره ألزمه بالتصدق بها وعدم الأكل منها(رد المحتار3/352)

যদি মৃত ব্যক্তি ওয়ারিশ তার ওসিয়ত পালনার্থে কুরবানী করে, তাহলে তা সদকা করা আবশ্যক,এবং ওয়ারিশরা এর গোস্ত খেতে পারবে না (রদ্দুল মুহতার-৩/৩৫২)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
https://ifatwa.info/46511/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ  রয়েছে,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

কুরবানির দিনগুলো অর্থাৎ যিলহজ্বের ১০, ১১ ও ১২ এই ৩ দিন পুরো সময় কেউ যদি মুসাফির অবস্থায় থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব নয়।
(বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৯)

فى الدر المختار: (عَلَى حُرٍّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ) بِمِصْرٍ أَوْ قَرْيَةٍ أَوْ بَادِيَةٍ عَيْنِيٌّ، فَلَا تَجِبُ عَلَى حَاجٍّ مُسَافِرٍ؛ فَأَمَّا أَهْلُ مَكَّةَ فَتَلْزَمُهُمْ وَإِنْ حَجُّوا،
সারমর্মঃ
আযাদ,মুসলমান, মুকিমের উপর কুরবানী ওয়াজিব
হজ রত মুসাফিরের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়,তবে যারা মক্কা বাসী,তাদের উপর কুরবানি ওয়াজিব।     

তবে একটি মাসয়ালাঃ-
যে সকল হাজী মক্কা,মিনা ও মুযদালেফা মিলে কুরবানীর সময় ১৫ দিন থাকবে তারা মুকীম। নেসাবের মালিক হলে হজ্বের কুরবানী ব্যতীত তাদের উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও ওয়াজিব। আর যারা মুসাফির থাকবেন তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। (ফাতাওয়া হিন্দীয়া ৫/২৯৩)

হজ্বে তামাত্তু/কেরানকারীর উপর দমে শোকর আবশ্যক হয়। যেটি কুরবানীর দিনসমূহে আদায় করতে হয়। সেই সাথে তার উপর যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, আর তিনি মুকীম হন, তাহলে তার উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও আবশ্যক হবে।
,
তাই তার উপর দু’টি কুরবানী করা আবশ্যক হবে।

স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ থেকে যারা গমণ করে থাকেন, তারা হজ্বে তামাত্তু/কেরানেরই নিয়ত করে থাকেন, পনের দিনের বেশি অবশ্যই মক্কায় বসবাস করে থাকেন, অর্থাৎ তারা মুকীম হয়ে যান। 

তার উপর দু’টি কুরবানী করা আবশ্যক। একটি হজ্বের তামাত্তু/কেরান এর দমে শোকর। আরেকটি হল, কুরবানী।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হজ্বে তামাত্তু/কেরানকারীর উপর দমে শোকর আবশ্যক হয়। তামাত্তু/কেরান এর দমে শোকর এর নিয়তে হারাম এলাকায় বা মিনায় পশু জবাই করে দিবে।

তবে সে হাজী সাহেব যদি মক্কা,মিনা ও মুযদালেফা মিলে কুরবানীর সময় কমপক্ষে ১৫ দিন ঐ তিন এলাকায় থাকে,সেক্ষেত্রে  সে যেহেতু মুকীম। তাই তিনি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তার উপর ঈদুল আযহার কুরবানীও আবশ্যক হবে।

তিনি তার উপর আবশ্যক হওয়া ঈদুল আযহার কুরবানী চাইলে নিজ দেশেও আদায় করতে পারবেন।
চাইলে নিজ দেশে না দিয়ে হারাম এলাকাতে দিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...