আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
125 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
একদল লোক রয়েছে যাদের বিশ্বাস আল্লাহর হাত, পা, মুখমন্ডল রয়েছে এবং তিনি আরশে আজিম এ অবস্থিত রয়েছেন। তারা আল-কুরআন এবং হাদিস এর অনুবাদের আক্ষরিক ভাবে তারা মানুষের কাছে প্রচার করে যে আল্লাহর আকৃতি রয়েছে। তাদের বিশ্বাস আকৃতি না থাকলে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে আমাদের দেখা দিবেন কিভাবে?

তাদের বিশ্বাস । যথা

“ আল্লাহ আদম কে তার দুই হাতে সৃষ্টি করেছেন-কোরআনে তার হাতের কথা আছে-
সহিহ মুসলিম হাদিস গ্রন্থে রাসূল বলেছেন জাহান্নাম যখন মানুষ দিয়ে পূর্ন হবে না তখন আল্লাহ তার একটি পা কে জাহান্নামে রাখবেন তখন জাহান্নাম বলবে যতেষ্ঠ যতেষ্ঠ-
কোরআনে বলেছে আল্লাহ জান্নাতিদের দেখা দিবেন -

এখন নিরাকার হলে দেখবেন কিভাবে??

আল্লাহ তাআলা আরশের উপরে সমুন্নত। এই কথা কুরআনের সাত জায়গায় বলা হয়েছে-

‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ- তিনি আসমান-যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন- অতঃপর তিনি আরশের উপরে সমুন্নত হয়েছেন-

(সূরা আরাফ:-আয়াত ৫৪)
اَلرَّحۡمٰنُ  عَلَی الۡعَرۡشِ  اسۡتَوٰی  ﴿۵﴾
দয়াময় আরশে সমাসীন।

 [ সুরা ত্বহা : ০৫ ]

আল্লাহ, যিনি খুঁটি ছাড়া আসমানসমূহ উঁচু করেছেন যা তোমরা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে উঠেছেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়োজিত করেছেন। এর প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলবে। তিনি সবকিছু পরিচালনা করেন। আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করেন, যাতে তোমাদের রবের সাক্ষাতের ব্যাপারে তোমরা দৃঢ়বিশ্বাসী হতে পার।

(সূরা রাদ:আয়াত ০২)

আল্লাহ, যিনি আসমান ও যমীন এবং এ দু'য়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তা ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি আরশের উপর উঠেছেন। তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য কোন অভিভাবক নেই এবং নেই কোন সুপারিশকারী। তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?
(আস সিজদাহ্ -আয়াত ০৪)

তবে আল্লাহর জ্ঞান-ক্ষমতা-দৃষ্টি-সর্বত্র বিরাজমান-এবং তিনি আরশের উপর থেকেই সবকিছু দেখেন এবং শুনেন ”

জাযাকাল্লাহ খায়ের❤️

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/80951/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রাযি থেকে বর্ণিত,
أخرجه أبو نعيم في "حلية الأولياء" (6/66) ، وأبو القاسم التميمي في "الحجة في بيان المحجة" ، وقوام السنة في "الترغيب والترهيب" (673) ، جميعا من طريق عبد الجليل بن عطية القيسي ، قال ثنا شهر بن حوشب ، عن عبد الله بن سلام -رضي الله عنه- قال: خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ وَهُمْ يَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ اللهِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:" فِيمَ تَتَفَكَّرُون " ، قَالُوا: نَتَفَكَّرُ فِي اللهِ قَالَ:" لَا تُفَكِّرُوا فِي اللهِ ، وَتَفَكَّرُوا فِي خَلْقِ اللهِ ؛ فَإِنَّ رَبَّنَا خَلَقَ مَلَكًا قَدَمَاهُ فِي الْأَرْضِ السَّابِعَةِ السُّفْلَى ، وَرَأْسُهُ قَدْ جَاوَزَ السَّمَاءَ الْعُلْيَا، مَا بَيْنَ قَدَمَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ مَسِيرَةُ سِتِّمِائَةِ عَامٍ، وَمَا بَيْنَ كَعْبَيْهِ إِلَى أَخْمَصِ قَدَمَيْهِ مَسِيرَةُ سِتِّمِائَةِ عَامٍ، وَالْخَالِقُ أَعْظَمُ مِنَ الْمَخْلُوقِ» .
সারমর্মঃ রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা ফিকির করবে না।বরং আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা গবেষণা করবে।(হিলয়াতুল আউলিয়া-৬/৬৬(আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব-৬৭৩)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (تَفَكَّرُوا فِي آلَاءِ اللَّهِ، وَلَا تَفَكَّرُوا فِي اللَّهِ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা আল্লাহর নিয়ামত নিয়ে চিন্তা গবেষনা করো। আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা গবেষনা করবে না।(বায়হাক্বী-৯২৭, তাবারানি-১২১১১)

আল্লাহ তা'আলা সম্পর্কে যতটুকু আকিদা বিশ্বাস না রাখলে ঈমানদার হওয়া যাবে না,ততটুকুই আকিদা-বিশ্বাস রাখা উচিৎ। এর চেয়ে বেশী চিন্তা ফিকির করতে হাদীসে নিষেধ এসেছে। আল্লাহ আল্লাহর মতই,কোনো কিছুই তাঁর মতো হতে পারে না।
আল্লাহর আকার নিরাকার নিয়ে চিন্তা ফিকির করতে যেয়ে অনেক বিজ্ঞজন শেষ পর্যন্ত দিশেহারা হয়েছেন।গোমরাহ হয়েছেন।

বিশেষভাবে নিম্নোক্ত আয়াতকে স্বরণে রাখবেন।
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ
কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।(সূরা আশ-শু'আরা-১১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছেঃ-

هُوَ الَّذِي أَنزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ آيَاتٌ مُّحْكَمَاتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتَابِ وَأُخَرُ مُتَشَابِهَاتٌ ۖ فَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُونَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيلِهِ ۗ وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيلَهُ إِلَّا اللَّهُ ۗ وَالرَّاسِخُونَ فِي الْعِلْمِ يَقُولُونَ آمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِندِ رَبِّنَا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ [٣:٧]

তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট,সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে,তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর,তারা বলেনঃ আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্নেরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। {সূরা আলে ইমরান-৭}

তাই আল্লাহর সত্ত্বার আকার নিরাকার নিয়ে কথা বলা সম্পূর্ণই নিষিদ্ধ বিষয়। কারণ এসব মুতাশাবিহাত এর অন্তর্ভূক্ত। যার সঠিক অবস্থান আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।
আমরা আল্লাহর “হাত, পা, চেহারা” ইত্যাদি অর্থ প্রকাশক শব্দের উপর ঈমান আনি। কিন্তু এগুলোর অবস্থা কেমন? আকার আছে নাকি নেই? ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা করি না। মন্তব্য করি না।

আমরা কুরআনে বর্ণিত গভীর জ্ঞানীদের কাতারে শামিল হতে চাই। এসবের বাহ্যিক অর্থ বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ফিতনা বিস্তার করতে চাই না।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...