আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
970 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম। আমি একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি। 

আল্লহ ব্যবসাকে হালাল করেছেনে এবং সুদ হারাম করেছেন। আমি একটি নতুন ব্যবসায় নামতে চাচ্ছি কিন্তু সেখানে সুদের কারবার চলে আসে কিনা এ নিয়ে চিন্তিত। ব্যবসাটা এরকমঃ কোনো একটা ই-কমার্স সাইটে বিভিন্ন পণ্য বাজার দামের চাইতে প্রায় অর্ধেক কমে পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আগে টাকা দিতে হয় এবং তারা পণ্য দিতে কখনো কখনো ৩/৪/৫/৬/৭ মাসও দেরি করে। আমি হোন্ডা কিনতে চাই। অর্ধেক দামে সেগুলো কিনে কিছুটা বেশি দামে তা বিক্রি করবো। কিন্তু এই বাইকগুলো দিতে ৩ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। 

আবার সমস্যা হলো কেউ যদি এতদিন অপেক্ষা করতে না চায় তাহলে উক্ত ব্যক্তি চাইলে ওই প্রতিষ্টান ব্যাংক চেক দিয়ে দেয়। এই চেকটা অফারের দামের চেক নয়, বাজার মূল্যের চেক। অর্থ্যাৎ কেউ যদি অফারে ১ লাখ টাকা দামে হোন্ডা কিনে, ৫/৬/৭ মাস পর সে চাইলে তাকে বাজার মূল্য অর্থাৎ প্রায় ২ লাখ টাকার চেক দিয়ে দেয়। ফলে সে বাইক পেলেও তার বিক্রি করে লাভ হয় আর বাইক না পেলেও তার আরো বেশি লাভ হয়। বেশি লাভ হয় ঠিক আছে, কিন্তু এখানে এটা কি সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে? কারণ আমার ধারণা তারা আসলে আমাদের থেকে অগ্রীম টাকা নিয়ে এই কয়েকমাস অন্য কোথাও ইনভেস্ট করে এবং তা থেকে অর্জিত লভ্যাংশ দিয়ে আমাদের এরকম অফার দেয়। কেউ একজন ১ কোটি টাকা ইনভেস্ট করে বাইক নেয়া ছাড়াই চেক নিয়ে ৬০ লক্ষ টাকা লাভ পেয়েছে। আমার প্রশ্ন হলোঃ

১) এ পদ্ধতিতে ব্যবসা জায়েজ হবে কিনা?

২) ৫/৬/৭ মাস টেনশান নিয়ে ধৈর্য্যে ধরার পর ব্যাংক চেক নিলে, টাকার বদলে টাকা নিলে সেটা কি সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে? যদি হয় তাহলে আমার কিভাবে কি করা উচিত? 

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি প্রথমে টাকা দিচ্ছেন।১/২মাস পর প্রডাক্ট হাতে পাবেন।এটার নাম হল,বয়ে সালাম।অর্থাৎ টাকা আগে দেওয়া এবং মাল পরবর্তীতে হস্তগত হওয়া।বয়ে সালাম জায়েয।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا تَدَايَنْتُمْ بِدَيْنٍ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى فَاكْتُبُوهُ
হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋনের আদান-প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গতভাবে তা লিখে দেবে; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না।(সূরা বাকারা-২৮২)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : " قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ بِالتَّمْرِ السَّنَتَيْنِ وَالثَّلاَثَ، فَقَالَ: ( مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ، فَفِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُومٍ، إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ)
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে দু’ ও তিন বছরের মেয়াদি সালাম ব্যবসা করত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন ব্যক্তি সালাম ব্যবসা করলে সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে সালাম করে।(সহীহ বোখারী-২২৪০,সহীহ মুসলিম-৪২০২)

ইবনে হজর মক্কী রাহ বলেন,
"واتفق العلماء على مشروعيته إلا ما حكي عن ابن المسيب "
ইবনুল মুসাইয়্যিব রাহ ব্যতীত সমস্ত উলামায়ে কেরাম, বয়ে সালাম জায়েয হওয়ার বিষয়ে একমত।(ফাতহুল বারী-৭/৭৬)

পশ্নে উল্লিখিত সূরত হল,ক্রয়বিক্রয়ের প্রসিদ্ধ পদ্ধতি ব'য়ে সালাম।তথা মূল্যকে পূর্বে দিয়ে দেয়া।এবং পরবর্তীতে মালকে হস্তগত করা।এ পদ্ধতির ক্রয়বিক্রয় শরীয়তে অনুমোদিত।(ফাতাওয়া মাহমুদিয়্যাহ-বয়ে সালাম-১৬/২০৯)

সুতরাং এভাবে ব্যবসা করা যাবে। এবং অগ্রীম মূল্য গ্রহণ করা যাবে।এভাবে অগ্রীম মূল্য গ্রহণ করলে  গ্রহণকারী সে মূল্যর মালিক হয়ে যাবে।উক্ত গৃহীত মূল্য দ্বারা যদি কোনো অবৈধ কাজ করা হয়,তাহলে সেই অবৈধ কাজের দায়ভার সেই গ্রহীতা বিক্রেতা ব্যক্তির-ই হবে।ক্রেতা বা মূল্যদান কারী ব্যক্তির এতে কোনো গোনাহ হবে না। ইভ্যালি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1536



সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ইভ্যালি বা এ জাতীয় সংস্থা থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারেন।তবে পণ্য আপনার হস্তগত হওয়ার পূর্বে সেই পণ্যকে ভিন্ন কোথাও বিক্রি করতে পারবেন না।এবং পণ্য গ্রহণ না করে,পণ্যর বাজার মূল্যর চেক গ্রহণ করতেও পারবেন না,কেননা সেটা সুদ হয়ে যাবে।আল্লাহ আমাদেরকে সহায়তা করুক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
যদি ব্যাপারটা এমন হয়, তাদের কাছে সেই পণ্য নেই, তাদের স্টক ইস্যু আছে, তাই তারা চেক নিতে বাধ্য করছে, সেক্ষেত্রে কি করা উচিৎ?? সেক্ষেত্রে সেটা কি সুদ হয়ে যাবে?? 
by (590,550 points)
যদি তাদের নিকট পণ্য না থাকে, তাহলে এটা সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। 
by
আসসালামু আলাইকুম৷ ইভ্যালি অগ্রিম টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল দেয়ার প্রতিশ্রুতি বদ্ধ৷ যখন তারা গাড়ী দিতে পারেনা তখন উক্ত গাড়ীর বাজার মূল্যের চেয়ে কিছুটা কম টাকার চেক দেয় বাহির হতে পন্যটি কিনে নেয়ার জন্য৷ এটা কিভাবে সুদ হল জানতে চাই৷ যেখানে ইভ্যালীর সাথে টাকার বিনিময়ে টাকা নেয়ার কোন চুক্তি থাকেনা এবং চেকের অংকটি নিদিষ্ট নয় বা শতকরা হার দ্বারা নিরুপিত নয়৷

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 126 views
...