জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মুসলমানদের জন্য কোনো অমুসলিমকে বন্ধু বানানো জায়েজ নেই।
অমুসলিমদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সূরা মুমতাহিনার এই নির্দেশনাটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য-
لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের সঙ্গে সদাচরণ করতে ও তাদের প্রতি ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। আল্লাহ তো তোমাদের তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা জালিম। -সূরা মুমতাহিনা : ৮-৯
★তবে কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়,তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
কোন মুসলিমের জন্য মুশরিক কাফেরকে বিবাহ করা জায়েজ নয়। বিবাহ করলেও তা সহীহ হবে না। হিন্দু ধর্ম পুরোটাই শিরক আর কুফরীতে পূর্ণ। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সাথে কোন মুসলিমের বিবাহ বন্ধন সহীহ নয়। মুসলমান হওয়ার পর বিবাহ শুদ্ধ হবে।
وَلَا تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلَا تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُوا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُولَئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللَّهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِإِذْنِهِ وَيُبَيِّنُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُونَ (221
আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। {সূরা বাকারা-২২১}
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি ছেলে মুসলিম হয়ে যায়,তাহলে তো উভয়েই মুসলিম।
এই বিবাহে যেতে কোনো সমস্যা নেই।
আর যদি তাদের কেউ তাদের ধর্ম পরিবর্তন না করে,বরং উভয়েই স্ব স্ব ধর্মে থেকেই (একজন মুসলিম,আরেকজন হিন্দু) বিবাহ করে,তাহলে তাদের এই বিবাহ কোনো ভাবেই বৈধ নেই।
,
এটি পুরোপুরি যেনার সংসার হবে।
,
আর এই অবৈধ কাজে কোনো ভাবেই অংশগ্রহণ কোনো মুসলমানদের জন্য জায়েজ হবেনা।
তাদের দাওয়াত এ গেলে এটা সাপোর্ট করা হবে।
সহযোগিতা করাও হবে।
এখানে কোনো ভাবেই অংশগ্রহণ করা যাবেনা।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
,
★আর যদি মেয়েই নিজ ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু হয়ে গিয়ে ঐ হিন্দু ছেলের সাথে বিবাহ বসে,তাহলে এই বিবাহে অংশ গ্রহন এর বিধান হিন্দুদের বিবাহে অংশ গ্রহন এর মতোই।
শরীয়তের বিধান হলো হিন্দুদের জবাইকৃত প্রাণী ব্যতীত তাদের তৈরীকৃত অন্যান্য খাবার ততক্ষণ হারাম হবে না, যতক্ষণ না প্রমাণিত হচ্ছে তারা এতে হারাম কিছুর সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে।তবে যেহেতু কাফিরের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা যায় না,তাই সতর্কতামূলক তাদের তৈরীকৃত খাবার না খাওয়াই উত্তম।
,
আরো জানুনঃ
,
যেহেতু এ জাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করলে নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবার আশঙ্কাই প্রবল থাকে সেহেতু এজাতীয় দাওয়াতে অংশগ্রহণ করা থেকে সর্বাবস্থায় বেঁচে থাকাই দরকার ।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করছেন,
من تشبه بقوم فهو منهم
‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের দলভ‚ক্ত বলে গণ্য হবে।’ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০৩১
,
★হিন্দুদের বিবাহের দাওয়াত খাওয়া সংক্রান্ত দারুল উলুম দেওবন্দ এর 18358 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
অমুসলিমের আমন্ত্রণ গ্রহণ করা যেতে পারে, শরীয়তে এটি অনুমোদিত, এবং যদি খাবারে হারাম ও অপরিষ্কার জিনিস অন্তর্ভুক্ত না হয় তবে খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই।
তবে তাদের ধর্মীয় রীতিতে শরীক হওয়া এবং হারাম ও অপরিষ্কার জিনিস খাওয়া জায়েয নয়,এটি অবশ্যই এড়ানো উচিত।
,
★সুতরাং পর্দা পুরোপুরি মেইনটেইন করা গেলে,গান বাজনা না থাকলে,খাবারে হারাম ও অপরিষ্কার জিনিস অন্তর্ভুক্ত না থাকলে সেই দাওয়াতে যাওয়া যাবে।