আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম ।

১. আমরা রুমে ৩ জন মিলে wifi নিয়েছি।২এক মাসের বেশি সময় ছুটিতে ২ জন বাসায় যাওয়ায় ঐ এক মাসের বিল দিতে চাচ্ছে না।এখন আমার একার পক্ষে পুরো বিল দেওয়া কষ্টকর। পরে ওদের কে বলেছি থাকলেও বিল দিতে হবে না থাকলেও বিল দিতে হবে। পরে ওরা টাকা দিয়ে দেয়। ওদের কাছ থেকে কি বিল নেওয়া জায়েজ হয়েছে?

২. শায়েখ, আমি মেডিকেল ৪ ্থ বর্ষে পড়ছি। আমার দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের খুব ইচ্ছা। এজন্য IOM এও ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু আমার মা বাবা বলছেন এখন‌ অন্য দিকে মন‌ না দিয়ে ডাক্তারি পড়া ভালো করে পড়। Pass করে ডাক্তার হওয়ার পর যত ইচ্ছা দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করিও। এমতাবস্থায় বাবা মায়ের কথা অনুযায়ী কি আমার দ্বীনের জ্ঞান অর্জন বন্ধ করে ডাক্তারি পড়া ভালো করে পড়া উচিত?

৩. আমার পরিবারের অবস্থা অত ভালো না।বাবা army চাকরি করতেন। এখন রিটায়ার্ডে আছেন । এমনিতে এখন তেমন কিছু করেন না।ওখান  থেকে কিছু হাফ বেতন পান।ঐ টাকা দিয়েই কোনো মতে সংসার চলে।

আর পেনশনের টাকা ব্যাংকে রয়েছে ওগুলো তুলা হয়নি। আমার আম্মা সারা জীবন আব্বার সংসারে কষ্টই করে গেলেন । এখনো কষ্ট করে সংসার চলে ।

আমার ছোট একটি ভাই আছে ও মাদ্রাসাতে পড়ে,ও ক্লাস ,4  এ পড়ে। এখন আমার আব্বা আম্মার ইচ্ছা আমি যেন ডাক্তারি pass করে সংসারের হাল ধরি,BCS cader যেন হই। তাদের কষ্ট দূর করি। শরিয়ত সম্মত ভাবে এটি কতটুকু জায়েজ। এমতাবস্থায় আমার কি করনীয়?

৪.সালাতে একটি সিজদা দিয়েছি নাকি দুইটি সিজদা দিয়েছি মনে না থাকলে কি করনীয়?
by (9 points)
উল্লেখ্য যে আমি একজন মেয়ে।

1 Answer

0 votes
by (546,480 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
চুক্তি মোতাবেক ওদের কাছ থেকে বিল নেওয়া জায়েজ হয়েছে।

(০২)
ফরজে আইন পরিমান জ্ঞান অর্জন না করে থাকলে সেক্ষেত্রে মেডিক্যালে পড়ার পাশাপাশি ফরজে আইন পরিমান জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যক। 

আর যদি আপনি ফরজে আইন পরিমান জ্ঞান অর্জন করে থাকেন,সেক্ষেত্রে মনোযোগ দিয়ে আগে ডাক্তারী পড়াশোনার পরামর্শ থাকবে। 

ফরজে আইন পরিমান জ্ঞান সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
https://ifatwa.info/39894/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
পর্দা রক্ষা করা ফরজ। 

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

★অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের  জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন। 
তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা,ডাক্তারী করা জায়েজ আছে।  
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইসলামি স্কলারগন  মুসলিম মহিলাদের মেডিকেল পড়াকে ফরযে কিফায়া বলেছেন। অর্থাৎ মুসলিমদের মধ্যে অবশ্যই কিছু মহিলার এ পেশায় আসা আবশ্যক যেন মহিলা সংক্রান্ত অসুখ-বিসুখ, সিজার, সন্তান ডেলিভারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদেরকে পর পুরুষ বা অমুসলিমদের শরণাপন্ন না হতে হয়।

সুতরাং সমাজের অর্থশালী ও উদ্যোগী ব্যক্তিদের জন্য মহিলাদের জন্য স্বতন্ত্র মেডিকেল কলেজ/ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা ফরজ- যেন আমাদের দ্বীনদার বোনেরা পর পুরুষ থেকে আলাদা থেকে নির্বিঘ্নে এ বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করতে পারে।

তবে স্বতন্ত্র ব্যবস্থা না থাকলেও দীনী কিছু বোনেরা পূর্ণ পর্দা ও শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে প্রচলিত সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল বা নার্সিং বিষয়ে পড়াশোনা করবেন এবং ভবিষ্যতে মহিলাদের জন্য আলাদা মেডিক্যাল কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।

আরো জানুনঃ 

যতদিন পর্যন্ত দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।(ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)

বিস্তারিত জানুনঃ 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত শর্তগুলি পূর্ণ রুপে মেনে পুরো শরীর,চেহারা,হাতা পা ঢেকে পর্দা করে মেডিকেলে লেখাপড়া করা জায়েজ হবে।   

উম্মাহ এর খিদমাহ এর স্বার্থে,পর্দানশীন নারী রোগী দের পর্দা রক্ষার্থে সার্জারিতে দ্বীনদার মহিলা ডাক্তারদের ক্যারিয়ার করা জায়েজই শুধু নয়,বরং এটি
বর্তমান সময়ে অতিব প্রয়োজন।
তবে সর্বক্ষেত্রে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলবেন,গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলে থেকে বিরত থাকবেন।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে পূর্ণ পর্দা মেনে আপনি এভাবে পড়াশোনা করতে পারেন,BCS cader হতে পারবেন।

(০৪)
এমন সন্দেহ আপনার জীবনে এটা প্রথমবার হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে আপনি উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করবেন।

আর যদি প্রায়ই এমন সন্দেহ হয়,সেক্ষেত্রে প্রবল ধারণার উপর আমল করবেন।
কোনোদিকেই প্রবল ধারণা না হলে সেক্ষেত্রে আরো একটি সেজদাহ আদায় করে নামাজের শেষ বৈঠকে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...