আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
316 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (48 points)
আসসালামু আলাইকুম
শায়েখ আপনার জানা মতে আমাকে রাসুল সা এর যুদ্ধের সময় যেই সব সাহাবারা শহীদ হয়েছেন তাদের নিয়ে কোন বই আছে ।
মানে তারা যুদ্ধের ময়দানে কিভাবে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন ,। তাদের ইমানি চেতনা এই নিয়ে কিছু বই এর নাম বলবেন

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সাহাবাদের মধ্য সকল শহীদানের নাম জানতে হলে বাংলা ভাষায় এ জাতীয় কোনো কিতাব এ যাবৎ বের হয়নি।তবে আরবী ভাষায় বের হয়েছে।উইকিপেডিয়াতে আরবীতে সেই সব শহীদানের লিষ্ট রয়েছে।ইউকেপেডিয়াতে আরবীর ট্রান্সলেট ইংরেজি করে আপনি দেখতে পারবেন।

‘সাহাবী’ একটি আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ সঙ্গী, সাথী। পরিভাষায় সাহাবী বলা হয়, যারা ঈমান অবস্থায় নবী করীম (সা.) -এর সাক্ষাৎ লাভ করেছেন এবং মুমিন অবস্থাতেই ইন্তেকাল করেছেন তাদেরকেই ‘সাহাবী’ বলা হয়। (কাওয়াইদুল ফিকহ, সাইয়েদ মুফতি মুহাম্মাদ আমীমুল এহসান, পৃষ্ঠা-৩৪৬)

সাহাবীগণের সংখ্যা লক্ষাধিক। নবী-রাসূরগণের পরই তাদের মর্যাদা। কুরআন ও হাদিসে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। তারা আল্লাহ তাআলার মনোনীত জামাআত বা কাফেলা। আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তারপর আমি কিতাবের অধিকারী করলাম আমার বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে যাদেরকে আমি মনোনীত করলাম। (সূরা ফাতিরা, ৩৫ :৩২)

এক হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহ্ তাআলা নবী-রাসূলগণের পর সমস্ত বিশ্ব ভূ-ম-লে আমার সাহাবীগণকে মনোনীত করেছেন। (মুসনাদে বাযযার, সূত্র : মাকামে সাহাবী, পৃষ্ঠ-৬০, মুফতি মুহাম্মাদ শফী রহ.; আল জামি লি আহকামিল কুরআন, ইমাম কুরতবী, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠ-১৯৬)

পবিত্র কুরআনের আলোকে সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদা: সাহাবায়ে কিরামের শিক্ষক হলেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.)। তিনি তালিম, তারবিয়্যাত, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, ইসলাহ্ ও সংশোধনের মাধ্যমে তাদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছিলেন। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের সত্যবাদিতা, নির্ভরযোগ্যতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টির কামনায় তুমি তাদেরকে রূকূ ও সিজ্দায় অবনত দেখবে। তাদের মুখমন্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে। (সূরা ফাতাহ, ৪৮ : ২৯)

ইমাম কুরতবীসহ (র.) সকল মুফাসসিরগণ আয়াতে উল্লেখিত (আল্লাহি মায়াহু) অংশটিকে আম বা ব্যাপক অর্থবোদক বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, প্রত্যেক সাহাবীই এ আয়াতের মর্মার্থের অন্তর্ভুক্ত। (মাকামে সাহাবী, পৃষ্ঠ-৪০, মুফতি মুহাম্মাদ শফী (রহ.); আল জামি লি আহকামিল কুরআন, ইমাম কুরতবী, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠ-১৯২)

সাহাবায়ে কিরামের জামাআত আদর্শ জামাআত। তাদের অনুসৃত পথ সঠিক বা নির্ভুল পথ। এ কারণেই তাদের বিরোধিতা করাকে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) -এর বিরোধিতার নামান্তর বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং এ জাতীয় লোকদেরকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হযেছে। আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের (সা.) বিরুদ্ধাচারণ করে আর মুমিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে তবে যেদিক সে ফিরে যায়, সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করবো আর তা কত মন্দ আবাস। (সুরা নিসা, ৪ : ১১৫)

এই আয়াতে মুমিন বলতে সাহাবা আজমাইনদের উদ্দেশ্য করা হয়েছে। কারণ তারাই মুমিনদের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ জামাআত। এর দ্বারা আরো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাহাবায়ে কিরামের জীবন, তাদের আমল, আখলাক, চরিত্র ও কার্যধারার অনুসরণই হলো রাসূলুল্ল্হা (সা.) -এর সঠিক অনুসরণ। আর সাহাবায়ে কিরামের জীবন ও চরিত্রকে আদর্শ নমুনা রূপে স্বীকার করে নিলেই তা সম্ভব হতে পারে। আল-কুরআনে আল্লাহ্ তাআলা নিজে তাদের ঈমানের দৃঢ়তা এবং পাপাচার থেকে মুক্ত থাকার আন্তরিক আগ্রহের কথা ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং তাকে তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন, আল কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট অপ্রিয়। তারাই সৎপথ অবলম্বনকারী। (সূরা হুজরাত ৪৯ :৭)

এছাড়া সাহাবায়ে কিরামের প্রতি আল্লাহ্ তাআলার সন্তুষ্টির কথা উল্লেখ করে আল-কুরআানে ইরাশাদ হয়েছে, আল্লাহ্ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট। (সূরা বায়্যিনা, ৯৮ : ৮)

মহান আল্লাহ্ যাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন ইনশাআল্লাহ্ তাদের প্রতি কখনো তিনি অসন্তুষ্ট হবেন না। (মাকামে সাহাবী, পৃষ্ঠ-৪৪, মুফতি মুহাম্মাদ শফী (রহ.); আল ইসতিয়াত, ভূমিকা- আল্লামা ইবন আবদুল বার রহ.) এছাড়াও আরো বহু আয়াতে সাহাবায়ে করামের ফজিলত ও মর্যাদা সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।

হাদিসের আলোকে সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদা: অনেক হাদিসে সাহাবায়ে কিরামের মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেন, রিসালাতের জন্য আল্লাহ্ আমাকে নির্বাচন করেছেন এবং আমার সাহচর্যের জন্য সাহাবাদের নির্বাচন করেছেন। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে আমার উজির, কতিপয়কে আমার জামাতা ও শ্বশুর নির্বাচন করেছেন। যারা তাদেরকে মন্দ বলবে তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও মানবকুলের লানত নেমে আসবে।
যারা তাদেরকে মন্দ বলবে তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও মানবকুলের লানত নেমে আসবে। তাদের ফরজ ও নফল কোনো আমলই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা কবুল করবেন না। (মাকামে সাহাবী, পৃষ্ঠ-৬০, মুফতি মুহাম্মাদ শফী (রহ.); আল জামি লি আহকামিল কুরআন, ইমাম কুরতবী, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠ-১৯৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (48 points)
ami jante cheyechi sahaba shahid der niye kono boi ache kina? tara ki vabe sohid hoyeche judder moidane tader vumika ki chilo amon

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...