কিরা দিলে কি সেই কাজটা আর করা যাবে না?

Question

আসসালামু আলাইকুম
১) আমি অনেক সময় ভাসির্টি যাতায়াতের টাকা জমিয়ে ইসলামি বই কিনি। কালকে আমরা সবাই শাওয়ালের রোযা ছিলাম। কালকে ক্লাস করতে গিয়েছি + এসেছি পায়ে হেঁটে। around 45-60 mins লাগে, রিকশা ভাড়া ৮০-৯০ টাকা।  অনেক আগে থেকেই আমি এমন করি যে হেটে আসা যাওয়া করি আর টাকা জমিয়ে ইসলামি বই কিনি। তো কালকে আম্মু জানতে পেরে অনেক রাগ করে যে এই গরমে কেন আমি হেটে আসছি রোযা ও ছিলাম।  যেহেতু বাসায় জানে আমি কিভাবে বই কিনি তাই আম্মু কালকে রাগ করে বলসে যে আমি কিরা দিলাম তুই যদি আর বই কিনছিস। এখন আমি যদি আর বই কিনি তাহলে কি আমার গুনাহ হবে? আমি কি তাহলে আর কোন দিন বই কিনতে পারব?

২) আমার নিজস্ব টাকার হিসাব কি বাবা মাকে দিতে হবে আমি কোথায় দান করছি, কোথায় খরচ করছি?

৩) আমি একটা সেকুলার পরিবেশ এ থাকি। আমার আশেপাশে তেমন কোন দ্বীনি সহবতের কেউ নেই। আমার ফেমিলির মধ্যে ও না। ছোট থেকে জেনেরাল লাইন এ পড়ে আসছি + এখনো।  আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ দ্বীনের বুঝ দেয়ার পর থেকে চেষ্টা করছি জানার মানার। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন হয় যে সেকুলার পড়াশোনা + পরিবেশের যে একটা বিষাক্ত চিন্তা ভাবনা সেটা এখনো মাথা থেকে বের করতে পারছি না। পুরো পুরি দ্বীনি চেতনায় আসতে পারছি না।  কিভাবে কি করলে আমি সেকুলার মন মানসিকতা থেকে বের হতে পারব?

৪)কেউ যদি ভুল করে এমন কিছু করে ফেলে যা তার ইমানের জন্য ক্ষতিকর তাহলে সে কি করবে? ইমান কে নবায়ন কিভাবে করবে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

দ্বীনের পথে চলতে যতটুকু ইলমের প্রয়োজন,ততটুকু পরিমাণ ইলম অর্জন করা ফরজ।

ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেন,

مِنْ فَرَائِضِ الْإِسْلَامِ تَعَلُّمُهُ مَا يَحْتَاجُ إلَيْهِ الْعَبْدُ فِي إقَامَةِ دِينِهِ وَإِخْلَاصِ عَمَلِهِ لِلَّهِ تَعَالَى وَمُعَاشَرَةِ عِبَادِهِ. 

প্রত্যেক মুসলমানের উপর ইসলামের ফরয বিধানসমূহ থেকে একটি ফরয  হচ্ছে, দ্বীন প্রতিষ্টা তথা এখলাছের সাথে দ্বীনের উপর আমল করতে প্রয়োজনীয় সব জ্ঞানার্জন করা এবং মানুষের সাথে সদাচরণের জ্ঞান অর্জন করা(ফরয)। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 1893

সুতরাং ফরয ইলম শিক্ষার ব্যাপারে কারো বিধিনিষেধকে মান্য করা যাবে না।রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,

ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ

গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।

(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০) বিস্তারিত জানুন- 1722

প্রয়োজের বেশী ইলম অর্জন করা নফল বা মুস্তাহাব।নফল ইবাদতে মাতাপিতার হক আদায়ে সমস্যা না হলে, এক্ষেত্রেও মাতাপিতা বাধা দিতে পারবে না। বিস্তারিত জানুন-1707

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

(১)প্রয়জনীয় দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা ফরযে আইন।এবং প্রয়োজনের চেয়ে বেশী মুস্তাহাব। সুতরাং রিক্সা ভাড়ার টাকা বাঁচিয়ে দ্বীনি কিতাবাদি ক্রয় করলে এক্ষেত্রে মাতাপিতার বিধিনিষেধকে মান্য করা ওয়াজিব হবে না। এক্ষেত্রে মাতাপিতার বিধিনিষেধকে মান্য না করলে আপনার কোনো গোনাহ হবে না।

(২) নিজস্ব টাকার হিসাব মাতাপিতাকে দেওয়া ওয়াজিব নয়। বিশেষকরে নেককাজে খরচ করলে মাতাপিতাকে সেই হিসাব বুঝিয়ে দেওয়া ওয়াজিব হবে না। 

(৩) দ্বীনি পরিবেশের কারো সাথে সুসম্পর্ক রাখুন।বেশী করে দ্বীনি কিতাবাদি পড়ুন। আল্লাহর কাছে দু'আ করুন। সকল প্রকার গোনাহকে পরিত্যাগ করার চেষ্টা করুন।

(৪) কেউ যদি ভুল করে এমন কিছু করে ফেলে যা তার ইমানের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে প্রথমে সে কোনো আলেম/মুফতি সাহেবকে জিজ্ঞাসা করে,তারপর উনার পরামর্শ মুতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম আঞ্জাম দিবে।