উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
,
মুসলিম সরকার জনগনের উপকারার্থে যে আইন করে, তা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম না হলে তা মানা সে দেশের নাগরিকের জন্য আবশ্যক।
সেই হিসেবে মোবাইল,পণ্য আমদানীর উপর সরকারী ট্যাক্স প্রদান করাই উচিত। তা ফাঁকি দেয়া বা ঘুষ দিয়ে আমদানী ঠিক নয়।
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)
,
ট্যাক্স সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (৩৫/১৪) এভাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
ذَهَبَ الْفُقَهَاءُ إِلَى أَنَّ لِلإِْمَامِ فَرْض َضَرَائِبَ عَلَى الْقَادِرِينَ لِوُجُوهِ الْمَصَالِحِ الْعَامَّةِ وَلِسَدِّ حَاجَاتِ الْمُسْلِمِينَ
قَال القرطبي: اتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ إِذَا نَزَلَتْ بِالْمُسْلِمِينَ حَاجَةٌ بَعْدَ أَدَاءِ الزَّكَاةِ فَإِنَّهُ يَجِبُ صَرْفُ الْمَال إِلَيْهَا
(١) .(١) القرطبي ٢ / ٢٤٢، وابن عابدين ٢ / ٥٧.
الموسوعة الفقهية الكويتية ٣٥/١٤
ভাবার্থঃ মহামান্য ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন যে,
সরকার জনসাধারণের সেবা ও বিভিন্ন প্রয়োজন মিটাতে উপার্জন সক্ষম নাগরিকদের উপর ট্যাক্স অত্যাবশ্যকীয় করতে পারবে,বৈধ রয়েছে।
ইমাম কুরতুবী রাহ উদ্ধৃতিতে বলা হয় যে, তিনি বলেন,সম্পদশালী নাগরিকগণ যাকাত প্রদাণের পরও মুসলিম জনসাধারণের আর্থিক ঘাটতি দেখা দিলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ট্যাক্স প্রদান করা তাদের উপর ওয়াজিব।(তাফসীরে কুরতুবী-২/২৪২
রদ্দুল মুহতার-ইবনে আবেদিন;২/৫৭)
কিন্তু এ কারণে ব্যবসাকৃত টাকাকে হারাম বলা যাবে না।
যদিও আমদানী করার পদ্ধতিটা শরয়ী সাপোর্ট যোগ্য নয়। কিন্তু এ কারণে পণ্য বিক্রির টাকাকে হারাম বলা যাবে না।
এভাবে কর ও ট্যাক্স ফাকি দিয়ে পণ্য আমদানী করা থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য।
বিস্তারিত জানুনঃ
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত unofficial ফোন ক্রয় করা জায়েজ আছে।
এই ফোন ব্যবহার করে কোনো হালাল ব্যাবসা বা চাকুরী করে উপার্জন হালাল হবে।
এতেও কোনো সমস্যা নেই।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
বিক্রেতা চোরাই পণ্য বিক্রি করতে এসেছে জানার পর তা কিনে নেওয়া জায়েজ হবে না।
চোরাই মাল ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ হারাম। কারণ, বিক্রেতা এ মালের মালিক নয়। অথচ ক্রয়-বিক্রয়ের প্রধান শর্ত হলো, বিক্রেতা পণ্যের/সম্পদের মালিক হওয়া। কারো কোনো জিনিস চুরি করা বা আত্মসাৎ করা মহাপাপ। এ পাপে লিপ্ত ব্যক্তির তাৎক্ষণিক ফরয হলো খাঁটি দিলে তওবা করা এবং চুরিকৃত জিনিসটি মালিককে ফেরত দেওয়া। তা না করে এটিকে বিক্রি করে দেওয়া চুরি এবং আত্মসাতের মতো অপরাধকে আরো প্রতিষ্ঠিত করার নামান্তর। যা স্বতন্ত্র কবীরা গুনাহ। আর যে ব্যক্তি জেনে-শুনে তা ক্রয় করল সেও এ কবীরা গুনাহে শরিক হলো। উপরন্তু এ ক্রয়-বিক্রয় যেহেতু ভুয়া তাই না ক্রেতা এ পণ্যের মালিক হবে না বিক্রেতা মূল্যের মালিক হবে। এদের উভয়ের উপর ফরয,পণ্য মূল মালিককে ফেরৎ দেওয়া।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২২৪৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৩৭৪, ৩৪০; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১১০)
চুরি হওয়া মালামাল জেনে শুনে ক্রয় করা বৈধ নয়। কেননা এতে করে চোরকে উৎসাহ প্রদান সহযোগিতা করা হয়।
পবিত্র কোরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَلاَ تَعَاوَنُواْ عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ (سورة المائدة-2
অনুবাদ-তোমরা গোনাহ ও সীমালংঘনের ক্ষেত্রে কারো সহায়তা করো না।( সুরা মায়িদা-২)
রাসুল স. ইরশাদ করেছেন,
وفى سنن البيهقى الكبرى- عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه و سلم أنه قال : من اشترى سرقة وهو يعلم أنها سرقة فقد اشرك في عارها واثمها ( سنن البيهقى الكبرى-كتاب البيوع، باب كراهية مبايعة من أكثر ماله من الربا أو ثمن المحرم، رقم-৫/৩৩৫
অনুবাদ-আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেছেন যে, যে ব্যক্তি কোন চুরির বস্তু চুরির মাল জেনেও ক্রয় করে তবে সেও সেই অপরাধে এবং গোনাহে শরীক হবে।(সুনানে বায়হাকী-৫/৩৩৫)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেটি চোরাই মোবাইল কিনা আপনি যেহেতু জানেননা,তাই তাহা ক্রয় করা ব্যবহার করা জায়েজ আছে।
এবং এই ফোন ব্যবহার করে কোনো হালাল ব্যাবসা বা চাকুরী করে উপার্জন হালাল হবে।
এতেও কোনো সমস্যা নেই।
,
নিশ্চিত ভাবে যদি আপনি জানেনও যে উক্ত ফোন চুরির পন্য,তাহলে সেই ফোন ক্রয় করা নাজায়েজ হলেও তা দিয়ে
হালাল ব্যাবসা বা চাকুরী করে উপার্জন হালাল হবে।
এতেও কোনো সমস্যা নেই।