আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
147 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)

1) আমার কথা বলার সময় মুখ ফস্কে অনেক কথা বের হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে যদি মুখ ফস্কে কোরান এর কোন কিছু যদি বের হয়ে যায় যা আসলে কোরান এর বিরুদ্ধে অথবা এর বিরুদ্ধে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে  তাহলে কি করা উচিত অই মুহূর্তে আর সে কি কাফের হয়ে যাবে ? 

 

2) ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেকে বিভিন্ন ধরনের শব্দ ব্যবহার করে যেরকম এই পণ্যটি কখনোই ধ্বংস হবে না এই পণ্যটি সারাজীবন টিকবে এই প্রশ্নটি ক্ষয় হয়না বা নানান ধরনের কথাবাত্রা তে ব্যবসায়ীক কাজে এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করা কি যাবে যেহেতু এগুলো আসলে আমার কাছে অপ্রীতিকর মনে হয় যেহেতু প্রত্যেকটা জিনিস ধ্বংসশীল একমাত্র আল্লাহ ছাড়া

 

3) একজন ভাই জিজ্ঞেস করেছেন

আসসালামু আলাইকুম, একটা কথা বলবো। যদিও আমার এই বিষয়ে জ্ঞানের সীমা খুবই কম তবুও বলছি। ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।

 

আপনি সর্বশেষ যে হাদীসটার রেফারেন্স দিয়েছেন ইবনু মাজাহ-৩৫১০ হাদিসটা সহিহ, এইখানে তো বলা হয়েছে যে যদি কোন কিছু তাকদীরকে পরাভূত করতে পারতো, তবে বদনজরই তাকে পরাভূত করতো।

 

অর্থাৎ বদনজর তকদীরের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না, যার মানে এইটা বুঝায় যে বদনজর বলতে এমন কিছু নেই যা তকদীরকে চেঞ্জ করতে পারে।

 

এইগুলা মানুষের ভ্রান্ত ধারণা।

 

তবে হ্যা একটা সহিহ হাদীসে এসেছে "দোয়া এমন এক জিনিস যেটা ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারে"

 

এছাড়া যদি কিছু থাকে দয়া করে জানাবেন।

ভূল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

 

আসসালামু আলাইকুম 

1 Answer

0 votes
by (710,360 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
কথা বলার সময় মুখ ফস্কে অনেক কথা বের হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে যদি মুখ ফস্কে কোরান এর কোন কিছু যদি বের হয়ে যায় যা আসলে কোরান এর বিরুদ্ধে অথবা এর বিরুদ্ধে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে  তাহলে কোনো গোনাহ হবে না।

কেননা অনিচ্ছাকৃত বিষয়ে আল্লাহ পকড়াও করবেন না।


(২)
ব্যবসাতে এমন জিনিষই ব্যবহার করতে হবে যা সত্য।আল্লাহ ব্যতীত সবকিছু ধংসশীল।


(৩)
বদনজর কাকে বলে,
চক্ষু লাগা বা বদনজর লাগার অর্থ হলো,চাক্ষুষকারীর কোনো জিনিষ পছন্দ হয়ে যাওয়া।অতঃপর প্রদর্শনকারী থেকে বিষ বের হয়ে প্রদর্শিত ব্যক্তির নিকট চলে যায়।আল্লাহ তা'আলা উনার রাসূল সাঃ কে হাসিদের হসদ থেকে পানাহ চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।(সূরা ফালাক-৫)
বদনজর কারীর চক্ষু হিংসুকের মধ্যে শামিল।সুতরাং হিংসুক শব্দটা ব্যাপক।যার মধ্যে বদনজরকারীর চক্ষুও শামীল।হিংসুক থেকে পানাহ চাওয়া মানে বদনজর থেকেও পানাহ চাওয়া।
 
বদনজর জিনিষটা কি?
বদনজর হল,এক প্রকার বিষ যা হিংসুক এবং বদনজরকারীর চক্ষু থেকে বের হয়ে বদনজরে আক্রান্ত ব্যক্তির উপরে গিয়ে পড়ে।কখনো আক্রান্ত করে কখনো করে না।কখনো কখনো বদনজরের বিষ বদনজর কারীর দিকেও ফিরে আসে।(যা'দুল মা'আদ-দ্রষ্টব্য)

রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বদনজর সংক্রান্ত হাদীস বর্ণিত রয়েছে-
হযরত অায়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عائشة رضي الله عنها قالت : " كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يأمرني أن أسترقي من العين "
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চোখলাগা হতে (মুক্ত হওয়ার জন্য) ঝাড়ফুঁক করার আদেশ করতেন।(সহীহ মুসলিম-২১৯৫)

عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : " العين حق ولو كان شيء سابق القدر لسبقته العين ، وإذا استغسلتم فاغسلوا "
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ভাগ্যকে কোন জিনিস অতিক্রম করতে সমর্থ হলে কু-দৃষ্টিই তা অতিক্রম করতে পারত। যদি এ প্রসঙ্গে কেউ তোমাদেরকে গোসল করাতে চায় তাহলে তোমরা তাতে সম্মত হও।(মুসলিম-২১৮৮)


আসমা (রাঃ) বললেন,
قالت أسماء يا رسول الله إن بني جعفرتصيبهم العين، فأسترقي لهم قال: «نعم، فلو كان شيء سابق القدر، سبقته العين
 হে আল্লাহর রাসূল! জাফরের সন্তানদের বদনজর লেগেছে, আপনি তাদের ঝাড়ফুঁক করুন। তিনি বলেনঃ আচ্ছা। যদি কোন কিছু তাকদীরকে পরাভূত করতে পারতো, তবে বদনজরই তাকে পরাভূত করতো।(সুনানু ইবনু মা'জা-৩৫১০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরআন সুন্নাহর আলোকে বদনজর অকাট্যভাবে সত্য।বদনজরের সত্যতা প্রমাণিত রয়েছে।যদি কেউ বদনজরে আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে তখন বদনজরকারীকে অজু করতে বলা হবে,উনার অজুতে ব্যবহৃত পানি দ্বারা বদনজরে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজ সারা শরীরে ঢেলে দিবে।সূরা নাস ও ফালাক পড়বে।বেশী বেশী কুরআন তেলাওয়াত করবে।এ সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/2628


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...