আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,958 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (8 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

১) "স্রষ্টা বলেছেন, 'তুমি যাকে'ই আমার চেয়ে বেশি ভালোবাসবে', আমি তাকে'ই তোমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবো এবং তোমাকে একা করে রাখব।" 

তিনি আরো বলেছেন, 'কখনো বলবেনা আমি তাকে ছাড়া বাঁচবোনা।' তবে আমি তাকে ছাড়াই তোমাকে বাঁচাবো এবং পেছনের অনুগত সব আবেগ কেড়ে নিয়ে, তোমাকে দিব্যি সামনে নিয়ে যাব! 

~ মাওলানা জালালউদ্দিন মোহাম্মদ রুমি

আমার প্রশ্ন হচ্ছে - এখানে কি 'স্রষ্টা বলেছেন' কথাটা ঠিক আছে? আল্লাহ যদি কোথাও এইভাবে না বলে থাকেন, তাহলে কি সেটা আল্লাহর নামে মিথ্যাচার করা হলো না??

২) অনেকে কুরআনের পৃষ্ঠার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে। এটা করা কি ঠিক?? এতে কি কুরআনের আদবের বরখেলাপ হয়??

by
#১ নাম্বার এর কথা গুলো কোন স্রষ্টার কথা?
যদি আল্লাহর কথা হয় তাহলে অবশ্যই কুরআনে  সংরক্ষিত  আছে 
তাই  অনুগ্রহ করে সূরা  ও আয়াত  নম্বরটা  একটু  বলবেন ।
আর ওটা  স্রষ্টার কথা  হলে, নিচে মাওলানা জালালউদ্দিন মোহাম্মদ  রুমির নাম  লেখার কারণ টাও একটু  জানাবেন অনুগ্রহ করে ☺

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
“স্রষ্টা বলেছেন, ‘তুমি যাকে’ই আমার চেয়ে বেশি ভালোবাসবে’, আমি তাকে’ই তোমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবো। এবং তোমাকে একা করে রাখব।”

তিনি আরও বলেছেন, ‘কখনো বলবেনা আমি তাকে ছাড়া বাঁচবোনা।’ তবে আমি তাকে ছাড়াই তোমাকে বাঁচাবো। এবং পেছনের অনুগত সব আবেগ কেড়ে নিয়ে, তোমাকে দিব্যি সামনে নিয়ে যাব!

তুমি কী দ্যাখো না? ঋতুরাও বদলাতে থাকে।

ছায়া দেয়া গাছের পাতাও যায় শুকিয়ে।
ধৈর্য্যে হারিয়ে যায়।

কিন্তু তোমার স্রষ্টা ধৈর্যশীল ও পরম দয়ালু, সেই ঝরে যাওয়া পাতার ডাল থেকেই আবার সবুজ পাতা গজায়, তুমি কী দ্যাখো না তোমার স্রষ্টার এই নিদর্শন?

যে মানুষটাকে তুমি নিজের অংশ ভাবতে, সেই মানুষটাই একদিন অচেনা হয়ে যায়।

তোমার মন ভেঙে যায়!
এমনকি তোমার বন্ধুও শত্রুতে পরিণত হয়

আর শত্রুও খানিক সময় পরে পরিণত হয় বন্ধুতে।
যে মানুষটাকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি

ভালোবাসতে সেও প্রতারণা করে। তবে তুমি কেন স্রষ্টা বিমুখ হয়ে মানুষকে ভরসা করো?
অদ্ভুত এই পৃথিবী!

যখন তুমি ভাবো এটা হবেনা কখনো, কিন্তু পরোক্ষণে সেটাই হয়। সেটাই হবার নয় কী?
তুমি বলো, ‘আমি পড়বোনা’ অথচ তুমি পড়ো।
তুমি বলো, ‘আমি বিস্মিত হবোনা!’

অথচ তুমি রোজ বিস্মিত হও।
এবং সবচেয়ে বিচিত্র বিষয় হচ্ছে-

তুমি বলতে থাকো ‘আমি মরে গেছি’ অথচ তুমি বাঁচো। অথচ তুমি বেঁচে থাকো। তোমার স্রষ্টা তোমাকে বাঁচায়, তোমার স্রষ্টা তোমাকে বাঁচিয়ে রাখে!

★কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলো এহেন বাক্য অনুপ্রেরণামূলক, আত্মশুদ্ধি, মূলক বলা হয়।
এখানে দাবী করা হয়না যে এটি কুরআনে আছে।
এই বাক্যে কোনো কুফরি নেই।
,
তাছাউফ,আত্মশুদ্ধির জন্য বলা যাবে।
,
তবে অনেক ইসলামী স্কলারদের মত হলো মহান আল্লাহ তায়ালা যাহা বলেননি,অনুমান করে তার দিকে নিসবত করে কোনো বাক্য বলা যাবেনা।
এটি তার শানের সাথে বেয়াদবি।
,
তাই সতর্কতা মূলক এহেন বাক্য না বলা উচিত।   
,
(০২)
কুরআনের আয়াতের সর্বোচ্চ সম্মান করতে হবে।
কুরআনের পৃষ্ঠার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলে যেহেতু অনেকেই বিনা অযুতে সেটি স্পর্শ করে,তাই তাহা শরীয়ত সম্মত নয়।
,
হ্যাঁ যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে কেহই বিনা অযুতে স্পর্শ করবেনা,তাহলে তার অনুমতি দেওয়া যাবে।         
,  
সুরা ওয়াকিয়াহ এর ৭৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ   

ﻟَّﺎ ﻳَﻤَﺴُّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﻄَﻬَّﺮُﻭﻥَ

যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না।

হাদিস শরীফে এসেছে

 - مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ  أَنَّ فِي الْكِتَابِ الَّذِي كَتَبَهُ رَسُولُ اللهِ لِعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ: أَنْ لاَ يَمَسَّ الْقُرَآنَ إِلاَّ طَاهِر،
ٌ،)رقم الحديث 680(

তরজমাঃ- হযরত আমর ইবনে হযম রাঃবলেন,ঐ কিতাব যা আল্লাহর রাসুল সাঃ আমর ইবনে হযমের সাথে নাজরান প্রেরণ করছিলেন তাতে এটাও তিনি লিখে দিয়ছিলেন যে, কোরআনকে প্রবিত্রতা ব্যতীত  কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।

হাদীস শরীফে এসেছে  

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত।
(মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...