আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
196 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
edited by
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ।
১/ আমার রুমে আমার বোনেরাও ঘুমায়, পড়ে এবং বেশিরভাগ সময় অবস্থান করে,, এক্ষেত্রে ওই রুমে যদি আমি ইতিকাফ করি তাহলে কি তারা সেখানে ঘুমাতে পারবে/ সবসময় থাকতে পারবে আমার সাথে কথা না বলে?? আর সে ঘরে কি তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারবে?? একই খাটে কি আমার বোনের সাথে আমি ঘুমাতে পারবো ওই রুমেই?
উল্লেখ্য: তারা ইতিকাফরত থাকবেনা।
আরও কিছু প্রশ্ন_

২/ আজ ২৭ রোজা চলমান,, আমি ৩ দিনের নিয়তে আজ মাগরীবের আগে নফল ইতিকাফে বসতে চাচ্ছি। যদি ৩০ রোজা না হয় এতে ২ দিনের ইতিকাফ হবে,, কিন্তু নিয়ত তো ৩ দিনের।  এতে কি কোন সমস্যা হবে??
৩/ আমার রুমেই এটাচ বাথরুম,, এক্ষেত্রে প্রস্রাব/পায়খানা ছাড়া হাত ধুয়া/ কাপড় ধোয়ার উদ্দেশ্যে গেলে কি তাতে সমস্যা হবে?? আর এটাচ বাথরুম হওয়ার পরেও কি সেটি ইতিকাফের বাইরের স্থান হবে??
৪/ দাওয়াহ সংক্রান্ত বইগুলো কি পড়া যাবে??
৫/ অতিবজরুরত বিহীন কাউকে ম্যাসেজ করা যাবে??
৬/ ইতিকাফের স্থানে বসে নিজের হাতে/ অন্য কারো হাতে মেহেদী দিয়ে দেয়া যাবে??
৭/ ইলম নেয়ার উদ্দেশ্যে কি এমন কোন মহিলা ক্বারীর ভিডিও দেখা যাবে যিনি নিজের চেহারা খোলা রাখে আর কন্ঠ দিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে?? যেহেতু কোন পুরুষ উস্তাযের ভিডিও দেখে মাখরাজ শিখতে গেলে তাদের মুখের দিকে তাকাতে হয় এতে ফেতনা হতে পারে তাই অনেক আলেম নাকি বলে ইলম নেয়ার উদ্দেশ্যে মেয়েরা মহিলা ক্বারীদের ভিডিও দেখতে পারবে।
এতে কি এমন হবে যে,,,  তাদের ভিডিও দেখলে তো ভিউ বাড়বে অধিক লোকের নজরে পড়বে,, তো আমি যদি ভিডিও দেখি তাহলে তো এই লোকের নজরে পরার গুনাহের কাজের মধ্যে আমিও শামিল থাকবো,, তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?? আর তাদের ভিডিও দেখা কি তাদের সমর্থন করার মতোই হয়ে যাবে??
ক্বারী আসমা হুদা ও হানিয়া সালওয়ানা নাকি শাফেয়ী মাজহাবের। অনেকে বলে তাদের মাজহাবে নাকি এটা জায়েজ তাই তাদের ভিডিও দেখা যাবে। শাফেয়ী মাজহাবের মহিলাদের জন্য কি মুখ খোলা রাখা/ কন্ঠ দিয়ে ভিডিও করা জায়েজ আছে??
এক্ষেত্রে ওই মহিলা ক্বারীরা যদি শাফেয়ী মাজহাবের হয় তাহলে কি তার জন্য এভাবে মুখ খোলা রেখে আর কন্ঠ দিয়ে ভিডিও করা জায়েজ,, আর সেই ভিডিও অন্য মেয়েরা ইলম নেয়ার ক্ষেত্রে দেখতে পারবে??
বিষয়টা বুঝিয়ে বলার জন্য বিস্তারিত হয়ে গেল,,  আফওয়ান।
জাযাকুমুল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتِ السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لاَ يَعُودَ مَرِيضًا وَلاَ يَشْهَدَ جَنَازَةً وَلاَ يَمَسَّ امْرَأَةً وَلاَ يُبَاشِرَهَا وَلاَ يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ إِلاَّ لِمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ بِصَوْمٍ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ


ওয়াহব  ইবন  বাকীয়্যা ......... আয়েশা  (রাঃ)  হতে  বর্ণিত।  তিনি বলেন,  ই‘তিকাফের  জন্য  সুন্নাত  এই  যে,  সে  যেন  কোন  রোগীর  পরিচর্যার  জন্য  গমন  না  করে,  জানাযার  নামাযে  শরীক  না  হয়,  স্ত্রীকে  স্পর্শ  না  করে  এবং  তার  সাথে  সহবাস  না  করে।  আর  সে  যেন  বিশেষ  প্রয়োজন  ব্যতীত  মসজিদ  হতে  বের  না  হয়।  রোযা  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  নেই  এবং  জামে  মসজিদ  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  শুদ্ধ  নয়।
(আবু দাউদ ২৪৬৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَتْ: وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا»

আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ মসজিদে থাকা অবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন, তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। {বুখারী, হাদীস নং-২০২৯, ১৯২৫, ১৯০২}

ইতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নতর পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে ইতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো। (বাকারাহ-125)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না। (বাকারাহ-187)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে কিছু হাদীস নিচে উল্লেখ করা হল:
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। (বুখারি-2025)
রসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজানের শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন। (বুখারি-2026)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে কাটান। (তিরমিযী-808)

উত্তম হল নফল ইবাদত বেশী বেশী করা। যেমন সলাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল তথা সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, তাওবাহ-ইস্তেগফার, দু‘আ, দুরূদ ইত্যাদি ইবাদতে সর্বাধিক সময় মশগুল থাকা। 

তাছাড়া শরীয়া বিষয়ক ইলম চর্চা করা।
পার্থিব ব্যাপারে কথাবার্তা বলা, অনর্থক গল্পগুজব ও আলোচনা থেকে বিরত থাকা উচিত, তবে পারিবারিক কল্যাণর্থে বৈধ কোন বিষয়ে অল্পস্বল্প কথাবার্তা বলার মধ্যে কোন দোষ নেই।

ইতিকাফ যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় তা হলো :
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে।
২. কোন শিরক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌনসম্ভোগ করলে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তারা সেখানে ঘুমাতে পারবে/ সবসময় থাকতে পারবে।
সে ঘরে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারবে।

আপনিও তাদের সাথে ইতেকাফের রুমে থেকে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবেন। 
তবে অপ্রয়োজনীয় কথা বলবেননা।

(০২)
এতে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এটাচ বাথরুম হওয়ার পরেও সেটি ইতিকাফের বাইরের স্থান হবে।

এক্ষেত্রে প্রস্রাব/পায়খানা ছাড়া হাত ধুয়া/ কাপড় ধোয়ার উদ্দেশ্যে গেলে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে। 

(০৪)
পড়া যাবে।

(০৫)
যাবে।
তবে এমন মেসেজ না পাঠানোর পরামর্শ থাকবে। 

(০৬)
ইতিকাফের স্থানে বসে নিজের হাতে/ অন্য কারো হাতে মেহেদী দিয়ে দেয়া যাবে।
তবে এ ধরনের কাজ না করার পরামর্শ থাকবে।

(০৭)
আপনি যেহেতু মহিলা, সুতরাং এমন মহিলার কেরাত আপনি দেখতে পাবেন।
কিরাআত শিখতে পারবেন।

তবে আপনার থেকে কোনো পুরুষ যেনো উক্ত মহিলার কেরাত শুনতে না পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
(মাছ/গোশত) খাওয়ার পর হাত ধোয়া তো জরুরি হয়ে পড়ে এক্ষেত্রে বাথরুমে প্রবেশ করে হাত ধুয়লে কি ইতিকাফ ভেঙে যায়?

ইতিকাফ অবস্থায় ব্যক্তি যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বাইরে যাওয়া একেবারে জরুরি হয়ে পড়ে আর কয়েকবার বাইরে কিংবা অন্য ঘরে যায় এক্ষেত্রে কি ইতিকাফ ভেঙে যাবে??
by (574,050 points)
১, শুধুমাত্র হাত ধোয়ার জন্য বাথরুমে গেলে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে।

২. উক্ত ছুরতে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...