আপনি নামাযের বাহিরে বাংলায় দু'আ করবেন, অথবা আপনি আপনার অন্তরে সেই বিশেষ বিষয়কে উপস্থিত রেখে মুজমাল দু'আ যাতে দুনিয়া আখেরাতের সকল প্রকার কল্যাণ রয়েছে,যেমন "রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ" কুরআন-হাদীসে বর্ণিত এমন দু'আ করতে পারবেন।
নফল সালাতে বাংলায় দু'আ সম্পর্কে কেউ কেউ রুখসত দিয়ে থাকেন।
বিস্তারিত জানুনঃ
নামাযের সেজদায় শুধুমাত্র কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দু'আ গুলোই করা যাবে।
সেজদায় গিয়ে سبحان ربي الأعلى
ছাড়াও অন্যান্য দোয়া পড়া যাবে। সমস্যা নেই। কিন্তু দুনিয়াবি দোয়া বা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দুআ করা যাবে না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদায় অনেক দোয়া পাঠ করতেনঃ
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’ কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}
আরো জানুনঃ
.
(০২)
শরীয়তের বিধান হলো দুনিয়াবি দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়।
দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কাছে থেকেও পাওয়া যায়,যেমন হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দাও,বিবাহ দাও,এক লক্ষ টাকা দাও ইত্যাদি।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন
إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»
নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭]
قال العلامۃ التہانوي تحتہ: دل الحدیث علی أنہ لا یجوز في الصلاۃ شيء من کلام الناس، فتفرع علیہ أن الدعاء أیضاً إذا کان یشبہ کلامہم لا یجوز، وہو قول أبي حنیفۃ وأصحابہ وطاؤس وإبراہیم النخعي۔ (کذا في فتح الباري ۲؍۲۶۶، إعلاء السنن ۳؍۱۷۲ رقم: ۸۹۳ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
থানবি রহঃ বলেন উক্ত হাদীস দালালত করে যে নামাজের ভিতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই।সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,সেটি বলাও জায়েজ নেই।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
.............. وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
..........পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।(সূরা বাকারা-২১৬)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কে আপনার জন্য কল্যাণকর আর কে অকল্যাণকর? তা আল্লাহই ভালো জানেন।সুতরাং নির্দিষ্টকরে কাউকে পাওয়ার জন্য দু'আ না করে বরং যা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে, যিনি আপনার জন্য কল্যাণকর হবেন, তার জন্যই আপনি দু'আ করবেন।
আল্লাহর কাছে আপনি এভাবে দু'আ করবেন,
হে আল্লাহ!
যে আমার জন্য দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানের জন্যই কল্যাণকর হবে,তাকেই আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে দিয়ে দেন।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে এভাবে নির্দিষ্ট করে তাকে চাওয়া, দোয়া করা উচিত নয়।