আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্ উস্তায

দুঃখিত এত বড় করে লিখার জন্য, বিস্তারিত না বললে বোঝানো মুশকিল। দয়া করে পুরো লিখাটি পড়ে উত্তর দিয়েন, কারণ খুব চিন্তায় আছি বিষয়টি নিয়ে।

১. আমার নানুর বাড়ির দিকটা খুব টক্সিক। উনারা আমার বাবাকে পছন্দ করেন না, কিছু নির্দিষ্ট কারণের একটি কারণ হলো বাবা তাদেরকে খুব বেশি কিছু দেন না। আমার বাবার মানে মেয়ের জামাইয়ের উপর কি তাদের কোনো হক্ব আছে? তাদের সাথে কুশলাদি বিনিময়ও করেন না৷ কারণ তারা বাবাকে খুব অপমান করেছে তাই!

২. তারা তাদের মেয়েদের মধ্যে চোখে পড়ার মত বৈষম্য করে। উদাহরণস্বরূপ সব ছেলের বউ আর এক মেয়েকে একটি নির্দিষ্ট হাদিয়া দিয়েছেন শুধুমাত্র আরেকজন মেয়েকে দেননি। এক্ষেত্রে আমরা কি তাদের অনুপস্থিতিতে যদি বলি তারা বৈষম্য করেন এবং আমাদের পছন্দ করেন না, আমাদেরকে যথেষ্ট আদর-আপ্যায়ন করেন না তাহলে কি গীবত হবে?  দুই মেয়ের কি সমাধিকার, সমান আপ্যায়ন প্রাপ্য নয়? একজনকে বেশি একজনকে কম করা কি গুনাহের মধ্যে পড়ে না?(যথেষ্ট সামর্থ্য থাকা সত্বেও খুবই নিম্নমানের মেহমানদারি করে ইচ্ছাকৃত)

৩. বিবাহিত মেয়ের উপর কি বাবা-মায়ের আর্থিক কোনো হক্ব থাকে? অনুরূপ মেয়েদের কি বছরে একবার ইদ মৌসুমেও একটা জামা বা একটু ইফতারি প্রাপ্য নয়? তারা অনেক টাকার শপিং করে কিন্তু মেয়ের ছেলে মেয়েকে একটা সুতাও দেয় নি ইদে। এক্ষেত্রে আমরা যদি বলি তারা শুধু মেয়েদের বেলায়ই প্রচুর কিপটামি করে মেয়েদের হক্ব আদায় করে না তাহলে কি গীবত/গুনাহ হবে?

৪. আমার নানু আমার ছোট ভাই-বোনরা খাবার নিতে লাগলে প্লেটের দিকে তাকিয়ে থাকে, যেন বেশি নিচ্ছে কিনা লক্ষ্য করে থাকে, খুব খারাপ লাগে এসব দেখে। এক্ষেত্রে আমরা যদি ঘরে এসব বলি যে উনি আমাদের খাওয়া-দাওয়া পছন্দ করেন না আমরা বেড়াতে গেলেও খুব অবহেলা করে আপ্যায়ন করে তাহলে কি গুনাহ হবে আমাদের? আর তার কি কোনো শাস্তি প্রাপ্য নয় এমন আচরণের জন্য? নাতি-নাতনীদের কি নানাবাড়িতে খাওয়ারও হক্ব নেই?
৫. বাড়ির আন্টিদের বাপের বাড়ি থেকে ইফতারি/জামা কাপড় কেনার জন্য ৫০০০ থেকেও বেশি টাকা পাঠিয়েছে। আমি তাই বলেছি মামা/নানুর বাড়ি থেকে যদি ২/৩ হাজার পাঠায় তাহলে এই টাকা না নিতে। অল্প টাকা নিতেও অসম্মানিত লাগে আর ইফতারি দেওয়ার হলে রমাদ্বানের শুরুতেই মানুষ খুশি মনে দেয়। রমাদ্বানের শেষের দিকে দিলে নেওয়ার কোনো দরকার নাই। আর জামা কাপড় দিতে চাইলেও নেওয়ার দরকার নাই। এক্ষেত্রে কি গীবত হবে? এটা তো আত্মসম্মানের বিষয় তাই না? উল্লেখ্য আমরা নানুদের জন্য ৫০০০ পাঠিয়েছি।

৬. তারা আমার বাবাকে প্রচুর হিংসা করে কারণ আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবা আর্থিকভাবে সচ্ছল। তারাও সচ্ছল। কিন্তু তাও বাবার টাকার প্রতি বদনজর! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা হিফাযত করুন উত্তমভাবে। এরজন্য আমরা যদি তাদেরকে বদদুআ দিই সেই বদদুআ জায়েজ কিনা?

৭. যদি বলি চাচীর ভাই ৪ বোনকে পাঁচ হাজার করে দশ হাজার দিলে আপনাদের দুই বোনকে তো দশ হাজার করে বিশ হাজার দেয়া উচিৎ মামাদের তাহলে কি গীবত হবে?

৮.উস্তায, এই সমস্ত চিন্তা-ভাবনা আসতো না যদি তারা আমরা তাদের বাসায় গেলে সম্মানজনক আপ্যায়ন করতো, আমাদেরকে হিংসা না করতো, আর পাঁচ দশটা নানা-নানীর মত আমাদের স্নেহ করতো, বৈষম্য না করতো এবং আমার বাবা অনেক কিছু তাদের দেওয়ার পর নিমকহারামের মত 'এক খিল পানও কিনে দেয়নি'র মত অত্যন্ত অপমানজনক কথা আমাদের না বলতো। এসব বলার কারণে আমরা তাদেরকে ভালোবাসি না। নাতি-নাতনীদের খোটা দেয় সেটা খাবারেরও! আর অনেক টক্সিকভাবে কথা বলে! আমার বাবা তাদের কিছু দেয়নি দেয়নি বলে তাই তারা যখন তাদের মেয়েকে অন্য আর পাঁচটা বিবাহিতা মেয়ের মত আদর-আপ্যায়ন, ইফতারি দেওয়া কিংবা অকেশনালি হাদিয়া দেয় না সেক্ষেত্রে আমরা তাদের মেয়েকে বলি যে আপনার হক্ব আদায় করে না, আপনি প্রতিবাদ কেনো করেন না! আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে আপনি কিছু কেন বলেন না? মা-বাবা অন্যায় করলে তার প্রতিবাদ করলে বদদুআ দিলেও সেই বদদুআ লাগবে না! এসব কথার ফলে কি গুনাহ/গীবত হবে?

1 Answer

0 votes
by (714,440 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

(১) আপনার বাবা তাদেরকে খুব বেশি কিছু দেন না, এজন্য তারা আপনার বাবাকে তেমন সম্মান করে না। এখানে আপনার বাবার কোনো দোষ নাই। আপনার বাবার উপর তাদের আর্থিক কোনো অধিকার নাই। আপনার বাবার সামর্থ্য থাকলে তিনি দিতে পারেন। আবার নাও দিতে পারেন। হ্যা, তারা যাই করুক, আপনার বাবার উচিৎ, তাদের সাথে সর্বদা সদ্ব্যবহার করা।

 

(২)মেয়েদের মধ্যে চোখে পড়ার মত বৈষম্য করা কখনো উচিৎ হবে না। আপনারা তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন। এবং তাদের সাথে সর্বদা সদ্ব্যবহার করবেন।

 

(৩) বিবাহিত মেয়ের নিজস্ব সম্পদ থাকলে অন্যদিকে বাবা-মা গরীব হলে তখন মেয়ের দায়িত্ব হচ্ছে, বাবা মায়ের ভরণপোষণ করা। নানা নানুর কাছ থেকে কোনো কিছু পাওয়ার আশা না করাই ভালো। হ্যা, নাতি নাতনি গরীব হলে এবং নানা নানী সামর্থ্যবান হলে তখন নাতি নাতনিকে দেখভাল করা নানা নানীর দায়িত্ব ও কর্তব্য।  

 

(৪) আপনারা নানা বাড়ীতে যাবেন, তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবেন, তাদের ওখানে বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী না খাওয়াই উত্তম।

 

(৫)

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,

عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "

নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 3747 

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

নানা বাড়ী থেকে ইফতারির আশা না করাই ভালো। আপনারা যা দিবেন, তার সওয়াব পাবেন। নানা নানীকে ইফতারির জন্য চাপ প্রয়োগ করা হারাম ও নাজায়েয হবে। কেননা কারো অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতিত তার মাল আপনার জন্য হালাল হবে ন।

 

(৬) বদ দু’আ দিবেন না। বরং তাদের হেদায়তের জন্য দু’আ করবেন।

 

(৭)  চাচীর ভাই ৪ বোনকে পাঁচ হাজার করে দশ হাজার দিলে, আপনাদের দুই বোনকে তো দশ হাজার করে বিশ হাজার দেয়া উচিৎ, এমনটা বলা জায়েয হবে না।

 

(৮) এই সব চিন্তাভাবনা পরিত্যাগ করুন। কি পেলাম আর কি পেলাম না!! এসব চিন্তাভাবনা পরিহার করে বরং নানা নানীকে আপন মনে মহব্বত করুন। মনে রাখবেন, তারা যদি আল্লাহর হুকুমে আপনার মাকে শিষ্টাচার শিক্ষা না দিতেন, তাহলে আপনারা আজ এই জায়গায় হতেন না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...