আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (4 points)
১)একজনের নিকট ১২আনা স্বর্ণ আছে এবং ৫০০০টাকা আছে, যা বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী যদি নিসাব পরিমাণ না হয়, অর্থাৎ নিসাবের মালিক হতে হলে তাকে আরো অতিরিক্ত ৪০০০/৫০০০লাগবে, কিন্তু উক্ত ব্যক্তি যদি অভাবী হয় তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে যদি আমি একসময়ে ২০০০০ টাকা বা এর ও বেশি জাকাত দিয়ে দেই, তাহলে সে নিসাবের মালিক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তাকে এতো টাকা জাকাত দেওয়া যাবে? বা সবোর্চ্চ কতো টাকা অবধি তাকে দেওয়া যেতে পারে?


২)কোনো ব্যক্তির কাছে যদি বছরের শুরুতে ১ভরি স্বর্ণ এবং নগত ১০০টাকা থাকে,যা বর্তমান সময়ে নিসাবের মালিক বলে ধরা হয়, আর যদি বছরের মাঝে শুধু ১ভরি স্বর্ণই থাকে কোনো নগত অর্থ সামান্য পরিমাণেও না থাকে, কিন্তু বছর শেষে আবার তার হাতে উক্ত স্বর্ণের সাথে ১০০টাকা থাকে উভয় মিলে তা যদি নিসাব পরিমাণ হয়এবং টাকাটা যদি তার প্রয়োজনীয় হয় তাহলেও কি তার উপর যাকাত আসবে?


৩) আবার কোরবানির ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ২দিন পর্যন্ত যদি তার ২ভরি স্বর্ণ সহ ৫০০টাকা থাকে যা নিসাব পরিমাণ বলে ধরা হয়, কিন্তু উক্ত টাকাটা যদি তার প্রয়োজনীয় হয় তাহলেও কি তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে??

1 Answer

0 votes
by (679,480 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/71830/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।(সূরা আত-তাওবাহ-৬০)

কে যাকাত খেতে পারবে?

وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.

অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯) 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যে ব্যাক্তি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নন,সেই ব্যাক্তি শরীয়তের পরিভাষায় ধনী নয়,সে ফকির।
সুতরাং সেই ব্যাক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে।

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত বাসা বাড়ি/জমি জমা/ঘরের আসবাবপত্র ইত্যাদি আছে কিনা?
যদি থাকে,সেক্ষেত্রে তার মূল্য ধরে ১২আনা স্বর্ণের মুল্য আর ৫০০০ টাকার সাথে যোগ করে নেসাব পরিমানে পৌছলে তাকে আর যাকাত দেয়া যাবেনা।

হ্যাঁ যদি তার দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত বাসা বাড়ি/জমি জমা/ঘরের আসবাবপত্র ইত্যাদি না থাকে,সেক্ষেত্রে তাকে যাকাত দেয়া যাবে।

এখন প্রশ্ন হলো তাকে কত টাকা যাকাত দেয়া যাবে?

কাউকে এই পরিমাণ যাকাত দেওয়া মাকরূহ যার দ্বারা সে নেসাবের মালিক হয়ে যায় এবং যাকাত ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে দিলে আদায় হয়ে যায়। আর যদি যাকাতগ্রহীতা ঋণগ্রস্থ হয় কিংবা তার পরিবার খুব বেশি অভাবগ্রস্থ হয় তাহলে তাকে উক্ত পরিমাণের চাইতে বেশি দেয়া জায়েয। (আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যাহ ২৩/৩১৭)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যাকাতের হকদার হলে তাকে ১৫ হাজারের বেশি টাকা দেয়া মাকরুহ।
তবে দিলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

(০২)
হ্যাঁ, তার উপর যাকাত ফরজ হবে। 

(০৩)
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির টাকাটা যদি তার দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত না হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)

(★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির টাকাটা যদি তার দৈনন্দিন প্রয়োজন না হয় তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।)এই অংশ টুকু বুঝতে পারি নি। 

৩নং প্রশ্নে উল্লেখিত ঐব্যক্তির কোরবানির ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ২দিন পর্যন্ত যদি তার ২ভরি স্বর্ণ সহ ৫০০টাকা থাকে যা নিসাব পরিমাণ বলে ধরা হয়, কিন্তু উক্ত টাকাটা যদি তার প্রয়োজনীয় হয় অথবা না হয়। তাহলে কুরবানী ওয়াজীব হবে?
বিঃদ্রঃ এই ব্যক্তির নিজস্ব কোনো জমি জমা, প্রয়োজনীয় বসত বাড়ি এগুলো কিছুই নেই,
 যা আছে তার  জীবত বাবার নামে। 
by (679,480 points)
দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত বলতে ঐ কুরবানী ঈদের ৩ দিন চলতে ফিরতে তার আবশ্যকীয় খাবার ও পোশাক, চিকিৎসা ইত্যাদি খরচ থেকে অতিরিক্ত হলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।
by (679,480 points)
৩নং প্রশ্নে উল্লেখিত ঐব্যক্তির কোরবানির ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ২দিন পর্যন্ত যদি তার ২ভরি স্বর্ণ সহ ৫০০টাকা থাকে যা নিসাব পরিমাণ বলে ধরা হয়, কিন্তু উক্ত টাকাটা যদি তার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় হয়। অর্থাৎ ঐ টাকাটা যদি ঐ কয়দিন চলতে ফিরতে তার আবশ্যকীয় খাবার ও পোশাক, চিকিৎসা ইত্যাদি খরচ থেকে অতিরিক্ত হয়,তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।

অন্যথায় কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...