আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
122 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (26 points)
১- যদি আমার ৪২৮৯ টাকা যাকাত আসে তাহলে আমি যদি ৫০০০ টাকা দিয়ে দেই যাকাত আদায় হবে?

২- আমি জানি যে, আমার যাকাত দিতে হবে এবং ১০০০ টাকা যদি দিয়ে দেই হিসেব এর আগেই যাকাত এর নিয়ত করে, পরবর্তীতে হিসেব করার পর মূল হিসেব থেকে ওই টাকা কেটে রাখি জায়েজ হবে কি ?

২- আমার কাছে যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিদেশি পাখি থাকে, যায় প্রতি পিস এর দাম ৪০০০, এবং এই দাম উঠা নামা করে বছরে কয়েকবার, এর উপর কি যাকাত আসবে? আসলেও কিভাবে আদায় করতে হবে, কতো পরিমাণে থাকলে কিভাবে আদায় করতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

যাকাত ইসলামের মৌলিক পাঁচটি বিধানের একটি।নেসাব পরিমাণ মালের মালিকের উপর যাকাত প্রদান করা ফরয।যাকাতের নেসাব-

সোনা, রূপা,টাকা,এবং ব্যবসায়িক মালে যাকাত আসে, যদি তা নেসাব পরিমাণ হয়।স্বর্ণের নেসাবঃ৭. ৫ভড়ি রূপার নেসাবঃ৫২. ৫ভড়ি।

এখানে একটি জিনিষ লক্ষণীয় যে,কারো কাছে শুধুমাত্র স্বর্ণ বা শুধুমাত্র রূপা থাকলে সেটার নেসাব পূর্ণ হলেই যাকাত আসবে।অন্যথায় যাকাত আসবে না।তবে হ্যা যদি কারো নিকট স্বর্ণ এবং রূপা যদি এভাবে থাকে যে,কোনো একটির নেসাব পূর্ণ হওয়ার জন্য সামান্য বাকী। তাহলে এক্ষেত্রে যেটা বেশী সেটারই নেসাব পূর্ণ করা হবে।যেমন কারো কাছে স্বর্ণ ৭. ৫ভড়ির চেয়ে সামান্য কম, তাহলে এমতাবস্থায় রূপা দ্বারা স্বর্ণের নেসাবকে পূর্ণ করা হবে।

টাকা এবং মালের নেসাবঃ

টাকা এবং মালকে রূপার সাথে সংযুক্ত করে রূপার নেসাব হিসেবেই ধরা হবে।তথা কারো কাছে ৫২. ৫ভড়ি সমমূল্যে র টাকা বা ব্যবসায়িক পণ্য থাকলে তার উপর যাকাত আসবে।

এক্ষেত্রে স্বর্ণকে মানঢন্ড হিসেবে ধরা হবে না।সোনা রূপার বিক্রয়মূল্য র উপরই যাকাত আসে।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/121

মালে নামীতে যাকাত আসে:

মালে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়তে থাকে,সেগুলো সর্বমোট চার প্রকার,(১)সোনা(২)রুপা(৩)ব্যবসার মাল(৪)গবাদি পশু

এগোলো কে যেহেতু শরীয়ত বাড়ন্ত মাল বলে আখ্যা দিয়েছে,সুতরাং এগুলো বাড়ন্ত মাল।বাস্তবে সবগুলো বাড়ুক বা নাই বাড়ুক।

মালে গায়রে নামী বলতে যে মাল শরীয়তের দৃষ্টিতে বাড়ে না।উপরোক্ত মাল ব্যতীত সবগুলোই অবাড়ন্ত।যেমন-স্থাবর সম্পত্তি এবং নিজ প্রয়োজনে ক্ররিদকৃত গাড়ী আসবাবপত্র ইত্যাদি।

বিস্তারিত দেখতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1434

যাকাত মূলত আদায় করতে হয়, বছরান্তে হাতে থাকা সম্পদের উপর ভিত্তি করে। যত সম্পদ থাকবে, তার চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হয়।তবে যাকাত আবশ্যক হবার পর, অগ্রীম দুই এক বছরের যাকাতের টাকা যাকাতের নিয়তের সাথে আদায় করলেও তা আদায় হবে। তবে আগামী বছর আসলে হিসেবে করে দেখতে হবে, কত টাকা যাকাত এসেছিল?

 আর কত অগ্রীম আদায় করা হয়েছে? যদি দেখা যায়, যাকাত বাবদ আরো টাকা দিতে হবে, তাহলে আরো যাকাত আদায় করতে হবে। আর যদি দেখা যায়, অতিরিক্ত আদায় করেছে, তাহলে তা পরবর্তী বছরের যাকাতের সাথে এ্যাড করে নিতে পারবে।

(وَلَوْ عَجَّلَ ذُو نِصَابٍ) زَكَاتَهُ (لِسِنِينَ أَوْ لِنُصُبٍ صَحَّ) لِوُجُودِ السَّبَبِ، (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الزكاة، مطلب استحلال المعصية القطعية كفر باب زكاة الغنم-2/293)

যার সারমর্ম হলো যদি অগ্রীম দুয়েক বছরের যাকাত দেওয়া হয়,তাহলে সেটা ছহীহ হবে।   

ولو مر بأصحاب الصدقات، فأخذوا منه كثيراً مما عليه ظناً منهم أن ذلك عليه لما أن ماله أكثر يحتسب الزيادة للسنة الثانية؛ (المحيط البرهانى، كتاب الزكاة، الفصل التاسع فى المسائل المتعلقة بمعطى الزكاة-3/226، طحطاوى على مراقى الفلاح-588

যার সারমর্ম হলো যদি যাকাত দাতার কাছ থেকে কোনো বছর অতিরিক্ত যাকাত নেওয়া হয়,তাহলে অতিরিক্ত কে  পরের  বছরের যাকাত হিসেবে ধরে নেওয়া যাবে।

ويجوز تعجيل الزكاة قبل الحول إذا ملك نصابا عندنا (تاتاخانية-3\184، رقم-4064)

বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে যাকাত আদায় করা জায়েয আছে,যদি নেসাব সে নেসাব পরিমান মালের মালিক হয়।(ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়্যাহ-৩/১৮৪)

ولو عجل ذو نصاب لسنين صح (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح-715)

যদি নেসাব পরিমাণ মালের মালিক দুই বছরের যাকাত অগ্রিম দিয়ে দেয় তাহলে তা সহিহ হবে।(হাশিয়াতুত ত্বহতাবী আলা মারাক্বিল ফালাহ-৭১৫)

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

১.জ্বী আপনার যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

২.বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে অগ্রিম যাকাত আদায় করা জায়েয আছে।

৩.ব্যবসায়িক পাখির মূল্য হিসাব করে শতকরা ২.৫%হারে যাকাত দেওয়া ফরয।ব্যবসায়িক মালে যাকাত ঐ সময় ফরজ হবে ,যখন তার মূল্য ৭.৫ তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ভড়ি রূপার সমমূল্যের হবে এবং বছর শেষ হওয়ার পর মূল্য হিসাব হরতে হবে , বছরের মাঝে মূল্য কম বেশী হওয়ার কোন ধর্তব্য নেই।

 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...