আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমি বিবাহিত। আমার বিয়ের ১ বছর তিনমাস চলছে। আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি নেই একজন ননদ আছে। আমাদের সম্পর্ক প্রায় ছাড়াছাড়ি পর্যায়ের সেটার কারনও আমি। এই এক বছর তিনমাসের মধ্যে আমি আমার স্বামীর সাথে থেকেছি মাত্র ৩ মাসের মতো হবে। আসলে আমার স্বামী ভীষণ ভালো এবং মানুষের হক্ব সম্পর্কে খুব সচেতন আর স্ট্রেটফরোয়াডের। কিন্তু বিয়ের ১ম ১ম আমার নেগেটিভিটির কারনে আমার কিছু ভুল বুঝার ফলে আমার স্বামীর প্রতি বিরক্তি এসে পড়ে, তাকে কিছুতেই মনে বসাতে পারছিলাম না এবং তিনিও কিছু বিরক্তির মতো কাজ করেছিলো যারফলে আমি নিজেই ওনার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য উনার উপর অনেক জুলুম করি, মিথ্যা বলা, ড্রামা নাটক করা, তাকে অপমান করা, তার ও তার বোনের চরিত্রে অপবাদ দেওয়া, আমার পরিবারের ও তার মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করি। ১ম থেকে আমার উনাকে পছন্দ ছিলো না  কিন্তু আমার পরিবারকে বলতে পারছিলাম না তার থেকে মুক্তি পেতে চাই কারন উনারা আমাকে প্রশয় দিতো না তাই এগুলো বলতে পারছিলাম না তাই এমন কিছু করি যেন তার মন থেকে উঠে যাই এবং যেন আমাকে নিজে থেকেই ডিভোর্স দিয়ে দেয়। সে আমার সবকিছুই ধরে ফেলে এবং বুঝতে পারে আমি তার সংসার করতে চাই না এবং এগুলো তার থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য করেছি মাঝে নিজেই চাপে পড়ে স্বীকার করেছি। এই সমস্যা নিয়ে ২ বার সে আমাকে সুযোগ দিয়েছে তবুও আমি নিজের পরিণতির কথা না ভেবে, নিজের নেগেটিভির কারনে, তার উপর মন এত বিষাদে ভরে ছিলো যে তার উপর অনেক জুলুম করে ফেলেছি । এখন আমি বুঝতে পারছি আমি কি জিনিস পেয়ে কি হারিয়েছি আজ ৭ মাস আমি আমার মায়ের বাড়িতে। আমার স্বামীর সাথে আমার তেমন কোন যোগাযোগ নেই এমনকি তিনি আমার ভরণপোষণও দিচ্ছে না অফ করে দিয়েছে।এমনকি আমি আমার স্বামীর একদম অসুস্থ করে ফেলেছি আমার কাজকর্ম দ্বারা। কিন্তু এখন আমি অনুতপ্ত অনেক বেশি অনুতপ্ত। তার উপর করা জুলুমের জন্য অনেক বেশি লজ্জিত ও অনুতপ্ত।  আমি তার সাথে সংসার করতে চাই, তাকে চাই তারসাথে যা জুলুম করেছে সেইক্ষত গুলো ভালোবাসা দিয়ে পূরন করতে চাই কিন্তু সেই সুযোগ আর পাচ্ছি না এবং তিনিও সেই সুযোগ দিচ্ছে না আর। এমনকি রিসেন্টলি নিজের অসুস্থতার জন্য নিজের মেজাজ ধরে রাখতে না পেরে তার সাথে কিছু বেয়াদবি করে ফেলি যার কারনে সে আমাকে রোযা রাখা অবস্থায় বলেছে আগের সবকিছু ক্ষমা করলেও এবার আমি আর তোমাকে ক্ষমা করবো না তুমি আমার সাথে যা করেছো সবকিছুর হিসাব আমি আল্লাহর কাছে দিয়ে রাখলাম। হাশরের ময়দানে আল্লাহর সামনে তোমার সাথে আমার দেখা হবে আর কিছুতেই মাফ করবো না দোয়া কবুলের মুহূর্তে এই কথা বলেছে।  এখন আমি কি করবো? আমি তো শুনেছি বান্দার হক্ব আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে না এর জন্য আমি আতংক হয়ে আছি, আমার নিজের গুনাহই ক্ষমা পাবো কিনা জানি না তারউপর বান্দার হক্ব নষ্ট। কিচ্ছু  বুঝতে পারেছি না কি করবো কীভাবে এই হক্ব মাফ করাবো?  কারন তিনি আমাকে ক্ষমা করবেই না। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী? আমি কি করবো? বান্দা যদি আরেক বান্দাকে ক্ষমা না করতে চায় তখন এর করণীয় কি?
দয়া করে আমাকে বলুন আমি কি করবো কীভাব এর ক্ষতি পূরণ করবো? আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। দয়া করে উওর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

ক্ষমাশীল মানুষ সর্বোত্তম ব্যবহারকারী ও ধৈর্যশীল। যিনি উদারপ্রকৃতির, তিনিই ক্ষমাশীল। যাদের এ ধরনের গুণাগুণ রয়েছে, তারা আল্লাহ তাআলার বিশেষ নেয়ামতপ্রাপ্ত। ক্ষমাকারী ধৈর্যবান ও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত।

মহান আল্লাহ অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। যে অন্যকে ক্ষমা করে তাকেও ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ يُنفِقُونَ فِي السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْكَاظِمِينَ الْغَيْظَ وَالْعَافِينَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ

‘যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সম্বরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩৪)

জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ অন্যের রূঢ় বা কটু কথাবার্তা কিংবা অশোভনীয় আচার-আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকেন। ফলে একে অপরে মতবিরোধ তৈরি হয়। অনেক সময় মতবিরোধ ও মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আল্লাহ তাআলা মানুষকে আদেশ দিয়েছেন, যেন একে-অপরকে ক্ষমা করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,

إِن تُبْدُوا خَيْرًا أَوْ تُخْفُوهُ أَوْ تَعْفُوا عَن سُوءٍ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا قَدِيرًا

 ‘যদি তোমরা ভালো কিছু প্রকাশ করো কিংবা গোপন করো অথবা মন্দ ক্ষমা করে দাও, তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান। ’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৪৯)

ক্ষমাকারীকে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে পুরস্কার দেবেন। পরস্পরের মধ্যে বিরোধ নিষ্পন্নকারীও আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَجَزَاءُ سَيِّئَةٍ سَيِّئَةٌ مِّثْلُهَا ۖ فَمَنْ عَفَا وَأَصْلَحَ فَأَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الظَّالِمِينَ

 ‘আর মন্দের প্রতিফল মন্দ। অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস নিষ্পত্তি করে, তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ জালিমদের পছন্দ করেন না। ’ (সুরা শুরা, আয়াত: ৪০)

ক্ষমা করলে কারও মর্যাদা কমে না। বরং বহু গুণে ক্ষমাশীল ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন করেছেন, সদকা করলে সম্পদের ঘাটতি হয় না। যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনীত হলে, তিনি তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (মুসলিম, হাদিস: ২৫৮৮)

উদারতা ও সহিষ্ণুতা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কোমলতা ও হৃদয়ার্দ্রতা মুমিনদের বিশেষ একটি গুণ। আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন সাহাবি মুয়াজ  (রা.) ও মুসা (রা.) কে ইয়ামেনে প্রেরণ করেন ও আদেশ দেন, ‘লোকদের প্রতি কোমলতা করবে, কঠোরতা করবে না, তাদের সুখবর দেবে, ঘৃণা সৃষ্টি করবে না। পরস্পর একমত হবে, মতভেদ করবে না। ’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৮)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামী তো আপনাকে তালাক দেয়নি,সুতরাং আপনি স্বামীর কাছে ফিরে যাবেন।
প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি করে স্বামীর কাছে ক্ষমা চাইবেন।
প্রয়োজনে পা ধরে ক্ষমা চাইবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
শাইখ আমার স্বামী আমাকে ফেরতই নিতে চায় না আমাকে ক্ষমাও করবে না এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি? আমার ভীষণ ভয় হচ্ছে এরকম জুলুমের জন্য আমার স্বামী ক্ষমা না করলে তো আল্লাহ তায়ালা আমাকে ক্ষমা না করবে না, আর অন্য কোন উপায় আছে কি যার মাধ্যমে হাশরে ময়দানে আমার স্বামীর পাকড়াও হাত থেকে বাঁচতে পারবো? 
by (678,880 points)
উভয় পরিবারের মুরব্বিদের নিয়ে বৈঠক করে স্বামীর কাছে ফিরিয়ে যেতে চাইবেন।
ফিরিয়ে না নিলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে ঐ মজলিসের স্বামীর কাছে রোনাজারী করে কৃত অপরাধের মাফ চাইবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...