আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) ফরজ নামাজে বা সুন্নত নামাজে শেষ বৈঠকে একটি সিজদাহ দিয়েছি  নাকি দুইটা সিজদাহ দিয়েছি মনে নেই। তবে ৯০% সিওর ২ টাই দিয়েছি তারপর ও সালাম ফেরানোর আগে দুয়া মাসুরা পড়ার পর একটা সিজদাহ দিয়ে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে।আবার দুইটা সিজদাহ দিয়ে আত্তাহিয়াতু দরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে দুইদিকে সালাম ফিরিয়েছি ।  আমার কি নামাজটি হবে?

এভাবে আদায় কি সঠিক পদ্ধতি? না হলে সঠিক পদ্ধতি কোনটি?

২) কাউকে কুরআন তিলওয়াতের সাওয়াব যদি দিতে চাই,তাহলে কি এভাবে দেওয়া যাবে? যে আমি কুরআন তিলওয়াত করলাম এই নিয়্যাতে যে আমার সাওয়াব হবে কিন্তু পরবর্তীতে আমি কুরআন তিলওয়াত শেষে বললাম যতটুকু পড়েছি সব সাওয়াব আমি তোমাকে দিলাম। তাহলে কি সে সাওয়াব পাবে? নাকি সাওয়াব তাকে দেওয়ার জন্য নিয়ত আগেই করতে হবে?

৩) ক্লান্ত লাগলে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ বা তারাবির নামাজ বসে পড়া যাবে?

৪)নামাজে খালি ওয়াসওয়াসা আসে এক সিজদাহ দিলাম নাকি দুই সিজদাহ? এমন ওয়াসওয়াসা আসলে আমি নামাজ শেষ অর্থাৎ দুয়া মাসুরা পড়ার পড়ে একটি সিজদাহ দিয়ে দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে দুইটা সিজদাহ দিয়ে আবার আত্তাহিয়াতু, দরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে  দজিদিকে সালাম ফিরাই।আমার নামাজ কি হচ্চগে এভাবে? না হলে বা হলে কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে হলে সঠিক পদ্ধতি কি

৫)যদি মনে ওয়াসওয়াসা আসে এবং  প্রবল ধারণা হয় যে আমি দুইটি সিজদাহ দিয়েছি,অথবা হ্যাঁ আমি সূরা ফাতিহা অবশ্যই পড়েছি এমন আত্মবিশ্বাস আসলে যদি সাহু সিজদাহ না দিই তাহলে কি নামাজ হবে? আর যদি সাহু সিজদাহ তাও দিই দুই সালাম ফেরানো পর তাহলে কি নামাজ হবে? বা লাস্টে সালাম ফিরানোর পর একটি সিজদাহ দিয়ে সালাম দুই দিকে ফিরিয়ে আবার দুইটি সিজদাহ দিয়ে আত্তাহিয়াতু, দরুদ,দুয়া মাসুরা পড়ে নামাজ শেষ করলে নামাজ হবে?

৬)যদি প্রবল ধারণা থাকে যে দুইটি সিজদাহ দিয়েছি,কিন্তু তারপর ও ওয়াসওয়াসা আসার কারণে সালাম ফেরানোর আগে আর ও একটি সিজদাহ দিয়ে দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে আবার দুইটি সিজদাহ দিয়ে নিই এবং আত্তাহিয়াতু, দরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে নিয়ে দুইদিকে সালাম ফেরালে নামাজ হবে?

৭) নামাজে সূরা ফাতিহা বা অন্য কোোনো সূরা মিলিয়েছি কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হলে নামাজ শেষে দুই দিকে সালা ফিরিয়ে সাহু সিজদাহ দিলে নামাজ হবে?

যদি সন্দেহ প্রবল হয় যে আমি মিলিয়েছি শুধুই ওয়াসওয়াসা তারপরও সাহু সিজদাহ দুই দিকে সালাম ফেরানোর পর দিলে নামাজ হবে?

৮) আত্তাহিয়াতু ২য় রাকাতে দুই তিন শব্দ বারবার পড়লে কি সাহু সিজদাহ ওয়াজিব হয়? হলে আমি যদি দুই দিকে সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদাহ দিই তাহলে নামাজ হবে?

৯) আজ আসরে আমি ২য় রাকাতে সূরা মিলিয়েছি কি না এবং আমি ২য় ও ৩য় রাকাতে ১ টি সিজদাহ দিয়েছি নাকি ২ টা খুবই সন্দেহ হচ্ছিল তাই শেষ রাকাতে দুয়া মাসুরা এর পর আর ও দুইটি সিজদাহ দিই। এবং দুই সিজদাহর মাঝে আল্লহুম্মাগফিরলী এয়ারহামনি, ওয়াহদিনি...এটা পড়ি তারপর দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে আর ও দুইটি সিজদাহ দিই মানে সাহু সিজদাহ দিই।আমার নামাজটি কি হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (676,360 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/62231/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

আপনি প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।
যদি কোনোদিকেই প্রবল ধারনা না হয়,সেক্ষেত্রে কমটাকে ধরে রুকন গুলো আদায় করবেন।
ও শেষে সেজদায়ে সাহু আদায় করবেন। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার নামাজ হয়েছে।

এমতাবস্থায় যেহেতু আপনি ৯০% শিওর যে ২ টাই সেজদাহ দিয়েছেন,সুতরাং পরবর্তীতে সেজদাহ আর সাহু সেজদাহ দেয়া প্রয়োজন ছিলোনা

এগুলো অতিরিক্ত হয়েছে।

(০২)
আগে নিয়ত করলেও হবে।
পরবর্তীতে নিয়ত করলেও হবে।

তবে আগে নিয়ত করাই উত্তম তরিকা।

(০৩)
বসে পড়া যাবে।
তবে সেক্ষেত্রে অর্ধেক ছওয়াব মিলবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلاَةِ الرَّجُلِ وَهُوَ قَاعِدٌ، فَقَالَ: «مَنْ صَلَّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ، وَمَنْ صَلَّى قَاعِدًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ، وَمَنْ صَلَّى نَائِمًا فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَاعِدِ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب صفة الصلاة، مَطْلَبٌ قَدْ يُطْلَقُ الْفَرْضُ عَلَى مَا يُقَابِلُ الرُّكْنَ وَعَلَى مَا لَيْسَ بِرُكْنٍ وَلَا شَرْطٍ، بحث القيام-2/131-132، طحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الصلاة، فصل فى صلاة النفل جالسا-402

হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ব্যক্তির বসে নামায পড়া বিষয়ে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায পড়ে সে উত্তম। বসে যে নামায পড়ে, সে দাড়িয়ে নামায আদায়কারীর তুলনায় অর্ধেক সওয়াব পায়। আর যে ব্যক্তি শুয়ে নামায পড়ে, সে বসে নামায আদায়কারীর তুলনায় অর্ধেক সওয়াব পায়। [বুখারী, হাদীস নং-১১১৬]

আরো জানুনঃ  

(০৪)
এক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি জানতে এক নম্বর প্রশ্নের জবাব দ্রষ্টব্য।

(০৫)
নামাজ হবে।

(০৬)
নামাজ হবে।

(০৭)
যেহেতু প্রবল ধারণা ছিল যে সুরা ফাতেহা ও সুরা মিলিয়েছেন,সেক্ষেত্রে নামাজ হয়ে যাবে।

(০৮)
এক্ষেত্রে সাহু ওয়াজিব হবেনা।

(০৯)
আপনার নামাজটি হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...