আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আস সালামু আলাইকুম।

সম্মানিত ওস্তাজের নিকট আমার কিছু বিষয়ে জানার ছিলো। অগ্রিম জাজাকাল্লহু খইর।


১)আমি একজন সরকারি চাকুরীজীবী। প্রতি বছর আমাদের বৈশাখী ভাতা প্রদান করা হয়। একজন মুসলিম হিসেবে এই বৈশাখী ভাতা গ্রহণ করা উচিত হবে কিনা?
২) সাদাকাতুল ফিতর ঈদের আগে ও টাকা দিয়ে আদায় করা যাবে কিনা এমন ব্যক্তিকে যিনি অর্থ পেলে অধিক উপকৃত হবেন?


৩) সিয়াম অবস্থায় স্বামি এবং স্ত্রী তাদের ঠোঁটের ভেজা অংশে চুমু দিলে তাতে সিয়ামের কোনো ক্ষতি হবে কিনা?


৪) কোনো পুরুষ ব্যক্তিকে মুসাফির থাকা অবস্থায় তারাবিহ সালাত কিভাবে আদায় করতে হবে, জামায়াতে নাকি একাকি? কোনটা উত্তম?


৫) ঈদ আমাদের মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এবং আনন্দ ভাগাভাগির মাধ্যম, আলহামদুলিল্লাহ। এইজন্য ঈদে আমরা আমাদের পরিবারে মুখে কিছু উচ্চারন না করে কেক কাটি, বেলুন,  ফুল দিয়ে ঘর সাজাই। প্রতিবেশি শিশুদের চকলেট, বেলুন উপহার দেই আমাদের ঈদকে আরো আনন্দঘন করার জন্য। কিন্তু আমার আব্বু এতে কিছুটা আপত্তি জানিয়ে বলেন বেলুন ফোলানো, কেক কাটা এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। এভাবে এই কাজ করে আমরা বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসারী হয়ে যাচ্ছি কিনা?


৬) অনেকে বলেন ইশার সালাত বিলম্ব করে আদায় করা উত্তম। এক্ষেত্রে তারা কিছু দলিলও পেশ করেন। কিন্তু আজানের সাথে সাথে নাকি বিলম্ব করে অধিক রাতে আদায় করা উত্তম?


৭) প্রায় মাস দেড়েক আগে আমার মিসক্যারেজ হয়। এখন আমি শারীরিকভাবে ভীষণ দুর্বল। ২/৪ রাকায়াত সালাত আদায় করতেও কোমড়ে খুব ব্যথা হয় বসে থাকতে। মাথা ঘুড়ায় আর ঘুম ঘুম ভাব থাকে সারাক্ষন। সালাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াতের জন্য বেশি সময় বসে থাকতে পারি না। এইজন্য ভীষণ মনঃকষ্টে ভুগছি। খুব কান্নাকাটি করি ইবাদাত করার তৌফিক চেয়ে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শরীর ঠিক হওয়ার ঔষধ খাচ্ছি। কিন্তু তবুও শরীর খুব দুর্বল। এক্ষেত্রে আমি যদি শুধু ফরজ ইবাদাত, তারাবিহ সালাত, ইস্তেগফার, কারো হক্ব নষ্ট না করি, অধিক দান সাদাকাহ করি আর কোনো নফল ইবাদাত করতে না পারি তাতে আমি রমাদানের পুরো ফায়দা পাওয়ার আশা রাখতে পারি?  অন্যান্য বছরগুলোতে আলহামদুলিল্লাহ কিয়ামুল লাইল, অন্যান্য নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারতাম সারারাত জেগে (আল্লাহ কবুল করার মালিক)

1 Answer

0 votes
by (715,680 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১) বৈশাখী ভাতা কেন দেওয়া হয়? এটা কি অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষ্যে?  যদি এমন হয় তাহলে জায়েয হবে না। তবে যদি এমনিতেই বৎসরের সূচনা হিসেবে দেওয়া হয়, তাহলে নাজায়েয হবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1382

(২) সাদাকাতুল ফিতর ঈদের আগে এবং টাকা দিয়ে আদায় করা যাবে।


(৩) সিয়াম অবস্থায় স্বামি এবং স্ত্রী তাদের ঠোঁটের ভেজা অংশে চুমু দিলে, যদি পরস্পর পরস্পরের লালাকে গিলে ফেলে তাহলে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে এবং কাযা কাফফারা উভয়টি আসবে। তবে গিলে না ফেললে রোযা ফাসিদ হবে না।
”ولو ابتلع بزاق غيره فسد صومه بغير كفارة إلا إذا كان بزاق صديقه فحينئذ تلزمه الكفارة كذا في المحيط“(فتاوی عالمگیری،کتاب الصوم،ج 1،ص 203،دار الفکر،بیروت)

(৪) মুসাফির থাকা অবস্থায় তারাবিহ সালাত পড়ার সুযোগ থাকলে তারাবিহ পড়ে নেয়াটাই উত্তম। তবে সুযোগ না থাকলে ছেড়ে দিলেও কোনো গোনাহ হবে না। জামাতে সুযোগ হলে জামাতে পড়াই উত্তম।
'' ویأتي المسافر بالسنن إن کان فی حال أ من و قرار وإلا بأن کان في خوف و فرار لا یأتي بها، هو المختار''. (التنویرو شرحه ‘ باب صلاة المسافر ۲/۱۳۱ ط سعید ) ( کفایة المفتی ج ۳؍ ۴۰۴)فقط واللہ اعلم

(৫) আপনার আব্বু সঠিক বলেছেন, বেলুন ফোলানো, কেক কাটা, এগুলো বিজাতীয় সংস্কৃতি। ঈদ বা খুশীর কারণ হচ্ছে, গোনাহ মাফ করানো,  সুতরাং গোনাহ মাফ করানোর যাবতীয় চেষ্টাপ্রচেষ্টা আপনাকে করতে হবে।

(৬) ইশার নামায রাতের এক তৃতীয়াংশ শেষ হওয়ার পূর্বে ইশার নামায পড়ে নেয়াই উত্তম। মধ্য রাতের পর ইশার নামায পড়া মাকরুহ।

(৭) ফরজ ইবাদাত, তারাবিহ সালাত, ইস্তেগফার, কারো হক্ব নষ্ট না করা, অধিক দান সাদাকাহ করা, এগুলো করে নিতে পারলে অবশ্যই পূর্ণ সওয়াব পাবেন।তবে শর্ত হল, এই সব আমল করার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে হবে, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...