আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (36 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,

আমি একজন স্পেন প্রবাসী প্রায় ১.৫ মাস আগে এখানে এসেছি। বর্তমানে এইদেশে আমার থাকার পারমিশন থাকলেও কাজের কোন পারমিশন নেই। আমি যেই সিটিতে থাকি এটি একটি টুরিস্ট নির্ভর সিটি। এইখানে বেশিরভাগ কাজই হারাম মিশ্রিত; যেমন মদ,শুকরের মাংস কিংবা অমুসলিমদের দ্বারা জবেহকৃত গরু/মোরগের মাংস। আর যেই সব হালাল কাজ আছে; যেমন কাপড়ের ব্যাবসা এগুলো ৬/৭ মাস চলে গরমকালে। যেহেতু এইসময়ে টুরিস্টরা আসে বাকি ৫/৬ মাস এই ব্যবসাগুলো বন্ধ থাকে। আর ১০০% এর মধ্যে ২/৩% রেস্টুরেন্ট আছে যেগুলোতে হালাল খাবার বিক্রি করা হয়। এখন সমস্যা হলো এই হালাল কাজগুলোতে এই দেশের কাজের পারমিশন ছাড়া লোক রাখতে চায় না কারণ  ধরা পড়লে অনেক জরিমানা হয়।
একটি হালাল রেস্টুরেন্টে কাজের কথা হয়েছিল কিন্তুু স্পেনিস ভাষা এবং কাজের দক্ষতা না থাকার কারণে মুলত ভাষার দক্ষতা না থাকার কারণে ওইখানে কাজের ব্যবস্থা হয়নি। এইদেশে প্রায় ৩/৩.৫ বছর পর কাজের পারমিশনের কাগজ মিলে তখন ভাষার যোগ্যতা থাকলে হয়তো এইরকম রেস্টুরেন্টে কাজের ব্যবস্থা হতে পারে।
আমার প্রশ্নগুলো হলো:

১/ আমার পরিচিত একজন চাচা এইরকম একটি কাপড়ের দোকানে আমার জন্য কাজের সুপারিশ করবেন। হয়তো কাজে রাখতে পারে নাও রাখতে পারে। কিন্তুু কাজে রাখলে এই ৬/৭ মাস কাজে রাখবে তারপর বেকার থাকার সম্ভাবনা বেশি। যেহেতু ৫/৬ মাসের জন্য এই রকম কাপড়ের দোকানগুলো বন্ধ থাকে।  তখন হয়তো টাকা ধার করে চলা লাগতে পারে বাকি ৫/৬ মাস (আল্লাহ ভালো জানেন)। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জুমার নামাজ পড়ার জন্য সুযোগ দিবে না। কারণ এই ৬/৭ মাসের কাজ খুবই ব্যস্ত থাকে এবং বাকি দৈনিক নামাজের জন্যও সুযোগ মিলবে কি না সন্দেহ আছে। মিললেও হয়তো খুবই অল্প সময়ে শুধু ফরজ নামাজ পড়তে হবে এমতাবস্থায় আমার জন্য এই কাজ করা জায়েজ হবে কি না?

২/ বিকল্প হলো ডেলিভারিতে কাজ করা; যেখানে হালাল হারাম মিশ্রিত খাবার কিন্তুু বেশিরভাগই অমুসলিমদের দ্বারা জবেহকৃত পশুর গোস্ত, শুকরের গোস্ত, মদ এইরকম খাবার ডেলিভারি করা। এই কাজের সুবিধা হলো নামাজ সময়মতো পড়া যাবে। এখন ইসলামের দৃষ্টিতে আমার জন্য করনীয় কি?

৩/ আমি একজন দ্বীনের দ্বায়ী হতে চাই। IOM আলিম প্রিপারেটরীর জুন-জুলাই মাসের অনলাইন কোর্সে ভর্তি হব ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে আমি নির্দ্বিধায় দ্বীনের বিষয়ে আমার আশপাশের মানুষদের দাওয়াত দিতে পারছি  কিন্তুু যদি আমি হারাম মিশ্রিত কাজ করি কিংবা ওই হালাল কাপড়ের কাজ যেখানে জুমার নামাজ পড়ার সুযোগ নেই এবং দৈনিক নামাজ পড়ার সুযোগ দিবে কি না সন্দিহান। এমতাবস্থায় আমি আশংকা করছি আমার আশপাশের মানুষদের নির্দ্বিধায় দাওয়াত দেওয়ার সৎ সাহস হারিয়ে ফেলব।
এই পুরো ব্যাপারটা বিবেচনা করে আমার জন্য করনীয় কি?

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
নামাজ ত্যাগকারীর ব্যাপারে হাদীস শরীফে কঠিন হুমকি এসেছে।
,  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: أَتَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ عَلِّمْنِيْ عَمَلًا إِذَا أَناَ عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ قَالَ لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ شيئاً وَإِنْ عُذِّبْتَ وَحُرِّقْتَ وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ وَإِنَّ أخرجاك مِنْ مَالِكٍ وَمِنْ كُلِّ شَيٍّء هُوَ لَكَ وَلاَ تَتْرُكِ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَإِنَّهُ مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ

মুআয বিন জাবাল (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন আমল শিখিয়ে দেন; যা করলে আমি জান্নাত প্রবেশ করতে পারব।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক (অংশী) করো না; যদিও তোমাকে সে ব্যাপারে শাস্তি দেওয়া হয় এবং পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। তোমার মাতা-পিতার আনুগত্য কর; যদিও তারা তোমাকে তোমার ধন-সম্পদ এবং সমস্ত কিছু থেকে দূর করতে চায়। আর ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করো না; কারণ, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করে তার উপর থেকে আল্লাহর দায়িত্ব উঠে যায়।
(ত্বাবারানীর আউসাত্ব ৭৯৫৬, সহীহ তারগীব ৫৬৯)

অন্য হাদীসে আছেঃ
 
عَن ابنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ قَالَ مَن تَرَكَ الصَّلاَةَ فَلاَ دِينَ لَه

ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করে, তার দ্বীনই নেই।

(মুছান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৭৬৩৭, ৩০৩৯৭, ত্বাবারানীর কাবীর ৮৮৪৭-৮৮৪৮, বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৪৩, সহীহ তারগীব ৫৭৪)
,
জুমার নামাজ ত্যাগ করার বিষয়টি তো আরো মারাত্মক ব্যাপার। প্রশ্নে উল্লেখিত পর পর তিন জুমা ছেড়ে দিলে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি হাদিসে আসেনি। তবে অনেক কঠিন কথা হাদিসে বলা হয়েছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَبِيدَةَ بْنِ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي الْجَعْدِ يَعْنِي الضَّمْرِيَّ، وَكَانَتْ، لَهُ صُحْبَةٌ فِيمَا زَعَمَ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَرَكَ الْجُمُعَةَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَهَاوُنًا بِهَا طَبَعَ اللَّهُ عَلَى قَلْبِهِ "

আবুল জা'দ আয-যমরী মুহাম্মাদ ইবনু "আমরের ধারণানুযায়ী তিনি একজন সাহাবী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক নিছক অলসতা ও গাফলতি করে পর পর তিন জুমুআ ছেড়ে দেয় আল্লাহ তা'আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। সহীহ। তিরমিজি ৫০০ ইবনু মাজাহ– (১১২৫)।

আবূ ইয়া‘লা (রহঃ) বিশুদ্ধ সানাদে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে,

من ترك الجمعة ثلاث جمع متواليات فقد نبذ الإسلام وراء ظهره.

অর্থাৎ যে ব্যক্তি তিন জুমু‘আহ্ লাগাতার বর্জন করল সে ইসলাম থেকে নিজেকে দূরে ঠেলে দিলো।
( সহীহ তারগীব ৭৩৩)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এক্ষেত্রে কাজ যেহেতু হালাল,সুতরাং সেখানে কাজ করা আপনার জন্য জায়েজ। ইনকাম হালাল হবে।
তবে নামাজ ত্যাগ করলে নামাজ ত্যাগের গুনাহ হবে। নামাজ গুলির কাজা আদায় আবশ্যক। 

এমতাবস্থায় দেশে ফিরে কোনো হালাল জব/ব্যবসা করার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র হালাল খাবার ডেলিভারি দেয়া জায়েজ হবে।
হারাম খাবার ডেলিভারি দেয়া জায়েজ হবেনা। এক্ষেত্রে ইনকামও হালাল হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এমতাবস্থায় দেশে ফিরে কোনো হালাল জব/ব্যবসা করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 126 views
...