আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (26 points)
খুবই জরুরি প্রশ্ন

অভিজ্ঞ একজন মুফতি সাহেবের ফাতোয়া চাই।

আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
আমার সাথে জাওয সাহেবের শর্তসাপেক্ষে একটি তালাক পতিত হলে বাসায় আমার ভাই ও আব্বার সামনে পুনরায় বিবাহ করি,আমি প্রস্তাব দেই তিনি কবুল বলেন। অনেক জোরজবরদস্তি করেই বিয়ে করি/দোহরাই, কারণ পরিবারের দ্বীনের বুঝ নেই।
সমস্যা হচ্ছে,আমার ভাই পূর্বে অনেক দ্বীনি ছিলো,ফজর সলাতও মসজিদে আদায় করতো,ভালো হুজুরদের সোহবতেও ছিলো। দ্বীনের সব বিষয়ে ভালো ধারণা ছিল ওর,জানত অনেক+তাহাজ্জুদগুজার ও অনেক আমল করত। হঠাৎ বাসায়  এসব পছন্দ না করায় বা যেকোনো কারণে কেন যেন সে দ্বীনহারা হয়ে যায় এক ওয়াক্ত নামাযও পড়েনা। যখন এই পুনরায় বিয়ে পড়ানো হয়,তার আগে পরে কখনো এরকম বলতো,হেসে হেসে খাওয়ার টেবিলে,যখন নামায পড়েনা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতাম ও বলতো,মৃত্যুর পরে কি হবে, এরপর তো যেরকম সব ধংস সেরকম পচে গলেই যাবে। নানা কবি কবি আধ্যাত্মিক কথা বলত।উলটা পালটা যুক্তি দিতো, আবার,ইসলাম সম্পর্কে ভালোও বলত যে আরও ভালো ইসলামি গবেষক দরকার। বুঝতে পারতাম না কোন দলে ও,আস্তিক,নাস্তিক,মুসলিম না অন্য ধর্মী। একদিন ফোনে জিজ্ঞেস করেছিলাম,তুই মুসলিম ছিলি পুনরায় বিয়ের সময়? ও বেশ নরম বা স্বাভাবিকভাবে বলল, আমি তো মুসলিম না এরকম কিছু ঘোষণা করি নাই। আশ্বস্ত হলাম। বললাম যে আমি টেনশনে আছি পুনরায় বিয়েটা হলো কিনা,তাই জেনে নিলাম। এরপর ওর ইসলাম নিয়ে গাফিলতি নিয়ে কিছুদিন পর আবার জিজ্ঞেস করি মেসেজে,তোর সামনে যে বিয়েটা করলাম,সেসময় কি তুই মুসলিম ছিলি? মুসলমান সাক্ষী ছাড়া তো বিয়ে হয়না। ও বলল,হুমম বিয়ে কবুল হইসে। এরপর আবার বললাম পেচায়ে বলিস কেন,তুই মুসলিম ছিলি কিনা তা জিজ্ঞেস করসি। ও তখন বলসে, পৃথিবীতে অনেক দ্বীন আছে,লাকুম দ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন। কি জন্য বলসে জানিনা। এটা বলার পর আমি রেগে যাই বাসায় ফোন দেই যে ও মুসলিম ছিলো কিনা বিয়েটা করার সময়, বলেনা কেন ঠিকমতো? বাসা থেকে তখন আম্মু আব্বু আবার কিছু সময় পর ফোন দিয়ে বলে তুই এগুলো কি বলিস,ও আনইজি ফিল করে। তোকে চেতানোর জন্য এরকম বলে,বার বার জিজ্ঞেস করিস তাই। কি জিজ্ঞেস করিস উলটা পালটা ও বলল। (মানে এটা আম্মু বুঝাতে চাচ্ছে-ও মুসলিম কিনা এই প্রশ্নে ও বিব্রত হচ্ছে, এ ধরনের প্রশ্ন কেন করতেছি বার বার)। আসলে কে সত্য কে মিথ্যা আমি জানিনা। বাসা থেকে বার বারই এটা বলতেছে।
এই ঘটনার অনেকদিন পর এখন ভাই বিয়ের জন্য কথা উঠলে ও ভালো ইসলামিক মেয়েও খুঁজতে বলে আমাকে। কিছুদিন আগেও বলতো,আমি নামায পড়বো সব করবো। বিয়ের পর।কথার সাথে আল্লাহ হাফেজ বলে,আল্লাহ ভরসা বলে। কিন্তু ঐ পুনরায় বিয়ের সময় বলতো কিনা এগুলো,আমার খেয়াল নেই। আর বার বার ওকে জিজ্ঞেস করা আর যাচ্ছে না।ও বিরক্ত। এখন তাহলে কি ধরে নিবো? আমি ও জাওয বৈধ স্বামী-স্ত্রী আছি কিনা?আমার শর্ত-তালাক পরবর্তী বিয়ে হয়েছে কিনা কি ধরে নিবো....

উল্লেখ্য,ঐ যে মৃত্যুর পর কি হবে,আমরা যা ভাবি নাও হতে পারে, যা একটু নাস্তিক নাস্তিক কথাবার্তা আমার কাছে মনে হতো তা কি এমনিতেই আমার যুক্তি শুনতে আমি কি বলি তাই,নাকি উপদেশ দিতাম যে কেন দ্বীন পালন করছে না,হারাম হালাল-এজন্য উলটা কথা বলতো,নাকি এমনি উদ্দেশ্য ছাড়া মজা করা। আসলে কাউকে মুসলিম কিনা এমন প্রশ্ন করাও জায়েয কিনা আমার জানা নেই। কে যে মুসলিম,কার যে ইমান নেই আল্লাহ ভালো জানেন। এসব কথা জাওযকে বলেছি।বলেছি আবার বিয়ে করি। তিনি এতো বেশি রাগ করেছেন,একবার তোমার কথায় আব্বার সামনে লজ্জা পেয়ে বিয়ে করলাম পুনরায়। আর পারবো না।

আমাকে উপযুক্ত ফাতওয়া দিবেন শ্রদ্ধেয় মুহতারম যে আমি কি আমাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট ধরে নিবো,নাকি কি করবো?হতে পারে আমি ইতিমধ্যে গর্ভধারণ করেছি,এক্ষেত্রে আমার সন্তানের বৈধতার কি হবে! আমি আর নিতে পারছি না এই প্রেশার।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

বিয়ে বিশুদ্ধ হবার জন্য শর্ত হল, দুইজন মুসলমান প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন নারী সাক্ষী হতে হবে।

ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

لمافی القرآن الکریم (النساء: ۱۴۱/۱):وَلَن يَّجْعَلَ اللهُ لِلْكٰفِرِيْنَ عَلَى الْمُؤْمِنِيْنَ سَبِيْلًا۔
এবং আল্লাহ কখনই মুমিনদের বিরুদ্ধে কাফেরদের জন্য কোন পথ রাখবেন না।

وفی الھندیۃ (۲۹۲/۱):وروى الحسن عن أبي حنيفة رحمه الله تعالى أن النكاح لا ينعقد وبه أخذ كثير من مشايخنا رحمهم الله تعالى كذا في المحيط والمختار في زماننا للفتوى رواية الحسن وقال الشيخ الإمام شمس الأئمة السرخسي رواية الحسن أقرب إلى الاحتياط كذا في فتاوى قاضي خان في فصل شرائط النكاح۔
সারমর্মঃ কাফেরের সাক্ষী হিসেবে যেই বিবাহ হয়,সেটি নাজায়েজ। 
এমন বিবাহ ছহীহ হয়না।    

وفی الشامیۃ (۳۵۴/۵): وحاصله أن شروط الشهادة من الإسلام والعقل والبلوغ والحرية وعدم العمى والحد في قذف شروط لصحة توليته ولصحة حكمه بعدها ومقتضاه أن تقليد الكافر لا يصح وإن أسلم۔
সাক্ষীর ক্ষেত্রে ইসলাম,জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া,প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া,আযাদ হওয়া ইত্যাদী শর্ত।    

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার ভাই আখেরাতের জীবন নিয়ে সন্দেহে ছিলো।
তবে সে কখনো নিজেকে অমুসলিম বলে ঘোষণা দেয়নি,কুরআনের কোনো আয়াতকে স্পষ্ট ভাবে অস্বীকার করেনি।
মানিনা এমনটা বলেনি।

সুতরাং প্রশ্নের বিবরন মতে ২ জন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর উপস্থিতিতেই আপনাদের বিবাহ হয়েছে,আলহামদুলিল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...