খুবই জরুরি প্রশ্ন
অভিজ্ঞ একজন মুফতি সাহেবের ফাতোয়া চাই।
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
আমার সাথে জাওয সাহেবের শর্তসাপেক্ষে একটি তালাক পতিত হলে বাসায় আমার ভাই ও আব্বার সামনে পুনরায় বিবাহ করি,আমি প্রস্তাব দেই তিনি কবুল বলেন। অনেক জোরজবরদস্তি করেই বিয়ে করি/দোহরাই, কারণ পরিবারের দ্বীনের বুঝ নেই।
সমস্যা হচ্ছে,আমার ভাই পূর্বে অনেক দ্বীনি ছিলো,ফজর সলাতও মসজিদে আদায় করতো,ভালো হুজুরদের সোহবতেও ছিলো। দ্বীনের সব বিষয়ে ভালো ধারণা ছিল ওর,জানত অনেক+তাহাজ্জুদগুজার ও অনেক আমল করত। হঠাৎ বাসায় এসব পছন্দ না করায় বা যেকোনো কারণে কেন যেন সে দ্বীনহারা হয়ে যায় এক ওয়াক্ত নামাযও পড়েনা। যখন এই পুনরায় বিয়ে পড়ানো হয়,তার আগে পরে কখনো এরকম বলতো,হেসে হেসে খাওয়ার টেবিলে,যখন নামায পড়েনা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতাম ও বলতো,মৃত্যুর পরে কি হবে, এরপর তো যেরকম সব ধংস সেরকম পচে গলেই যাবে। নানা কবি কবি আধ্যাত্মিক কথা বলত।উলটা পালটা যুক্তি দিতো, আবার,ইসলাম সম্পর্কে ভালোও বলত যে আরও ভালো ইসলামি গবেষক দরকার। বুঝতে পারতাম না কোন দলে ও,আস্তিক,নাস্তিক,মুসলিম না অন্য ধর্মী। একদিন ফোনে জিজ্ঞেস করেছিলাম,তুই মুসলিম ছিলি পুনরায় বিয়ের সময়? ও বেশ নরম বা স্বাভাবিকভাবে বলল, আমি তো মুসলিম না এরকম কিছু ঘোষণা করি নাই। আশ্বস্ত হলাম। বললাম যে আমি টেনশনে আছি পুনরায় বিয়েটা হলো কিনা,তাই জেনে নিলাম। এরপর ওর ইসলাম নিয়ে গাফিলতি নিয়ে কিছুদিন পর আবার জিজ্ঞেস করি মেসেজে,তোর সামনে যে বিয়েটা করলাম,সেসময় কি তুই মুসলিম ছিলি? মুসলমান সাক্ষী ছাড়া তো বিয়ে হয়না। ও বলল,হুমম বিয়ে কবুল হইসে। এরপর আবার বললাম পেচায়ে বলিস কেন,তুই মুসলিম ছিলি কিনা তা জিজ্ঞেস করসি। ও তখন বলসে, পৃথিবীতে অনেক দ্বীন আছে,লাকুম দ্বীনুকুম ওয়া লিয়া দ্বীন। কি জন্য বলসে জানিনা। এটা বলার পর আমি রেগে যাই বাসায় ফোন দেই যে ও মুসলিম ছিলো কিনা বিয়েটা করার সময়, বলেনা কেন ঠিকমতো? বাসা থেকে তখন আম্মু আব্বু আবার কিছু সময় পর ফোন দিয়ে বলে তুই এগুলো কি বলিস,ও আনইজি ফিল করে। তোকে চেতানোর জন্য এরকম বলে,বার বার জিজ্ঞেস করিস তাই। কি জিজ্ঞেস করিস উলটা পালটা ও বলল। (মানে এটা আম্মু বুঝাতে চাচ্ছে-ও মুসলিম কিনা এই প্রশ্নে ও বিব্রত হচ্ছে, এ ধরনের প্রশ্ন কেন করতেছি বার বার)। আসলে কে সত্য কে মিথ্যা আমি জানিনা। বাসা থেকে বার বারই এটা বলতেছে।
এই ঘটনার অনেকদিন পর এখন ভাই বিয়ের জন্য কথা উঠলে ও ভালো ইসলামিক মেয়েও খুঁজতে বলে আমাকে। কিছুদিন আগেও বলতো,আমি নামায পড়বো সব করবো। বিয়ের পর।কথার সাথে আল্লাহ হাফেজ বলে,আল্লাহ ভরসা বলে। কিন্তু ঐ পুনরায় বিয়ের সময় বলতো কিনা এগুলো,আমার খেয়াল নেই। আর বার বার ওকে জিজ্ঞেস করা আর যাচ্ছে না।ও বিরক্ত। এখন তাহলে কি ধরে নিবো? আমি ও জাওয বৈধ স্বামী-স্ত্রী আছি কিনা?আমার শর্ত-তালাক পরবর্তী বিয়ে হয়েছে কিনা কি ধরে নিবো....
উল্লেখ্য,ঐ যে মৃত্যুর পর কি হবে,আমরা যা ভাবি নাও হতে পারে, যা একটু নাস্তিক নাস্তিক কথাবার্তা আমার কাছে মনে হতো তা কি এমনিতেই আমার যুক্তি শুনতে আমি কি বলি তাই,নাকি উপদেশ দিতাম যে কেন দ্বীন পালন করছে না,হারাম হালাল-এজন্য উলটা কথা বলতো,নাকি এমনি উদ্দেশ্য ছাড়া মজা করা। আসলে কাউকে মুসলিম কিনা এমন প্রশ্ন করাও জায়েয কিনা আমার জানা নেই। কে যে মুসলিম,কার যে ইমান নেই আল্লাহ ভালো জানেন। এসব কথা জাওযকে বলেছি।বলেছি আবার বিয়ে করি। তিনি এতো বেশি রাগ করেছেন,একবার তোমার কথায় আব্বার সামনে লজ্জা পেয়ে বিয়ে করলাম পুনরায়। আর পারবো না।
আমাকে উপযুক্ত ফাতওয়া দিবেন শ্রদ্ধেয় মুহতারম যে আমি কি আমাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট ধরে নিবো,নাকি কি করবো?হতে পারে আমি ইতিমধ্যে গর্ভধারণ করেছি,এক্ষেত্রে আমার সন্তানের বৈধতার কি হবে! আমি আর নিতে পারছি না এই প্রেশার।