বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/50নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে, লিকুরিয়া রোগ যা মহিলাদের জরায়ুতে হয়। যার অর্থ হল জরায়ু থেকে সাদাস্রাব নির্গত হওয়া। সাদাস্রাব নাপাক, যা নির্গত হলে অজু চলে যায়। কাপড়ের যে অংশে লাগবে সেটুকু ধৌত করতে হবে। তা নাজাসতে গলিজা। এক দিরহামের বেশী হলে নামায হবে না।
এই সাদাস্রাব নির্গত হওয়া দুই প্রকার।
(ক) সাদাস্রাব মাঝেমধ্যে নির্গত হয়।অর্থাৎ হঠাৎ জরায়ুতে চলে আসে।
এমতাবস্থায় যদি হঠাৎ নামাযের মধ্যে বা নামাযের পূর্বে নির্গত হয়, তখন কাপড় পাল্টিয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করা পূর্বক নতুন করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।তারপর পূনরায় নামায পড়তে হবে।
(খ) যদি কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে। যেমন মাগরিবের নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত তথা ১ঘন্টা৩০মিনিট ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে। তাহলে এমতাবস্থায় উনাকে মা'যুর গণ্য করে মা'যুরের হুকুম উনার উপর আরোপ করা হবে।
মা'যুরের হুকুম হল,
মা'যুর ব্যক্তি এক ওয়াক্তের জন্য এক অজু করবেন। তারপর উক্ত অজু দ্বারা উক্ত ওয়াক্তের ভিতর যতসম্ভব উনি ফরয নফল ইত্যাদি ইবাদত করতে পারবেন। যখন ওয়াক্ত চলে যাবে তখন অজুও শেষ হয়ে যাবে।পূনরায় ভিন্ন ওয়াক্তের জন্য ভিন্ন অজু করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৫/২২৩/২২৪ )
নেপকিন জাতীয় কিছু পড়ে নিলে সমস্ত কাপড় নাপাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। যদি আপনি মা’যুর না হন, তাহলে এভাবে আপনাকে কষ্টকরে নামায পড়তে হবে। যখনই হবে যে, অজু চলে গেছে, তখনই আবার অজু করে নামায পড়তে হবে।
(২)জরায়ুর মুখে, আশেপাশে আর একটু ভিতরে কাপড় দিয়ে পরিস্কার করা বিপদজনক, ইনফেকশন বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে। সুতরাং জরায়ুর বাহিরে অংশকে পরিস্কার করে নিলেই পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে।
(৩)পানি ঢেলে হাত দিয়ে পরিস্কার করে কিছু নাই বোঝার পর কাপড় দিয়ে মুছার সময় জরায়ুতে চাপ দিয়ে মুছলে কাপড়ে খুবই হালকা হালকা সাদাস্রাবের মতো দেখা যায়! যতই ভালো করে ওয়াশ করি হাত দিয়ে, কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে মুছলে এরকম দেখা যায়ই! এতে কি পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে। কাপড়ে সামান্য দেখার পর আবার পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে না।
(৪) পরিস্কার করে মুছার সময় কাপড়ে হালকা দেখা গেলে এবং তা এক দিরহামের কম হলে এই কাপড় দ্বারা আবার মুছা যাবে।
(৫)এজন্য শুধুমাত্র বাহিরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ পরিস্কার করা কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
(৬)ভার্সিটি বা বাইরে কোথাও ওয়াশরুম গুলোতে ভালোভাবে পরিস্কার করার মতো পরিবেশ, সুযোগ থাকে না! সাদাস্রাব নিয়ে নামাজ পরা যাবে । যতটুকু সম্ভব বাহিরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হবে।
(৭)রোজা রেখে ভেজা আঙুল লজ্জাস্থানে লাগলে রোজা ভেঙে যায়? তাহলে রোজাবস্থায় সাদাস্রাব পরিস্কার করা বলতে বাহরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হবে।
(৮) পানি দিয়ে সাদাস্রাব পরিস্কার করাই আবশ্যক নয় বরং টিস্যু বা কাপড় দিয়ে কোনোরকম মুছে নিলেই হবে।