আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
339 views
in পবিত্রতা (Purity) by (100 points)
১. নিয়মিত অল্প সাদাস্রাব হলে নামাজের পূর্বে পরিস্কার করে নিতে হবে যদি তা দেখা না যায়?!  প্রতি ওয়াক্তের আগে পরিস্কার করতে ওয়াশরুমে ১৫ মিনিটের মতো টাইম লাগে, মাঝে মাঝে আরও বেশিও লাগে যায়, নামজে লেট হয়! কি করা যায় এক্ষেত্রে?  ( সামান্য সাদাস্রাব ই হয়, কিন্তু লেগে থাকে তা খুটিয়ে পরিস্কার করতেই টাইম লাগে)

২.বাইরে থেকে সাধারণত যতটুকু সাদাস্রাব দেখা যায় তা পরিস্কার করলেই হবে নাকি একটু ভিতরে আশেপাশে যদি কিছু থাকে যা দেখা যায় না তাও করতে হবে? হাত দিয়ে যা পরিস্কার হয় তা করাই যথেষ্ট নাকি কোনো কাপড় দিয়ে চেপে চেপে পরিস্কার করে তারপর হাত দিয়ে পরিস্কার করতে হয়?! জরায়ুর মুখে, আশেপাশে আর একটু ভিতরে কাপড় দিয়ে পরিস্কার করা বিপদজনক, ইনফেকশন বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে!  যদি এমন থাকে যা  হাত দিয়ে পরিস্কার করলে আছে কিনা বুঝা যায় না,  কাপড় ইউজ করলেই বুঝা যায় সামান্য থাকে কিনা, কি করবো তখন?!
৩. পানি ঢেলে হাত দিয়ে পরিস্কার করে কিছু নাই বোঝার পর কাপড় দিয়ে মুছার সময় জরায়ুতে চাপ দিয়ে মুছলে কাপড়ে খুবই হালকা হালকা সাদাস্রাবের মতো দেখা যায়! যতই ভালো করে ওয়াশ করি হাত দিয়ে, কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে মুছলে এরকম দেখা যায়ই! এতে কি পবিত্র হয় নাকি কাপড়ে সামান্য দেখার পর আবার পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে?

৪.পরিস্কার করে মুছার সময় কাপড়ে হালকা দেখা গেলে উক্ত কাপড় দিয়ে পরবর্তীতে আবার ওয়াশরুম শেষে মোছা যাবে? নাকি ঐ কাপড় অপবিত্র হয়ে যায়?!
৫.সামান্য সাদাস্রাব হওয়ার পরও প্রতি বার এতো সময় লাগে যে পরিস্কার করায় এতে নামাজে অনীহা চলে আসে মাঝে মাঝে! করনীয় কিছু আছে এজন্য?!  অনেক সময় রাতে তাহাজ্জুদের কিছু সময় থাকলেও ওঠা হয় না এই ভেবে যে পরিস্কার করে অজু করতে করতেই সময় চলে যাবে অনেক,  নামাজের সময় থাকবে না! সহজ ভাবে করনীয় কিছু আছে?!

৬. যদি টানা ২/৩ ওয়াক্ত নামজের সময় বাইরে থাকা হয় তখন এমন অল্প সাদাস্রাব পরিস্কারের নিয়ম কেমন?! ভার্সিটি বা বাইরে কোথাও ওয়াশরুম গুলোতে ভালোভাবে  পরিস্কার করার মতো পরিবেশ, সুযোগ থাকে না! সাদাস্রাব নিয়ে নামাজ পরা যাবে নাকি এতে নামাজ হবে না?!   অথবা কোনোরকম পরিস্কার করে নিলেই হবে নাকি পরিপূর্ণভাবেই করা আবশ্যকীয়?!  উল্লেখ্য যে,  উক্ত অবস্থায় পরিস্কার করা অনেক সমস্যা!

৭.রোজা রেখে ভেজা আঙুল লজ্জাস্থানে লাগলে রোজা নাকি ভেঙে যায়? তাহলে রোজাবস্থায় সাদাস্রাব পরিস্কার করবো কিভাবে পানি আর হাত ছাড়া?

৮.পানি দিয়ে সাদাস্রাব পরিস্কার করাই আবশ্যক নাকি টিস্যু বা কাপড় দিয়ে কোনোরকম মুছে নিলেই হয়  সামান্য সাদাস্রাব?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) https://www.ifatwa.info/50নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে, লিকুরিয়া রোগ যা মহিলাদের জরায়ুতে হয়। যার অর্থ হল জরায়ু থেকে সাদাস্রাব নির্গত হওয়া। সাদাস্রাব নাপাক, যা নির্গত হলে অজু চলে যায়। কাপড়ের যে অংশে লাগবে সেটুকু ধৌত করতে হবে। তা নাজাসতে গলিজা। এক দিরহামের বেশী হলে নামায হবে না।

এই সাদাস্রাব নির্গত হওয়া দুই প্রকার।
(ক) সাদাস্রাব মাঝেমধ্যে নির্গত হয়।অর্থাৎ হঠাৎ জরায়ুতে চলে আসে।
এমতাবস্থায় যদি হঠাৎ নামাযের মধ্যে বা নামাযের পূর্বে নির্গত হয়, তখন কাপড় পাল্টিয়ে লজ্জাস্থান ধৌত করা পূর্বক নতুন করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।তারপর পূনরায় নামায পড়তে হবে।
(খ) যদি কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে। যেমন মাগরিবের নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত তথা ১ঘন্টা৩০মিনিট ধারাবাহিক সাদাস্রাব নির্গত হতে থাকে। তাহলে এমতাবস্থায় উনাকে মা'যুর গণ্য করে মা'যুরের হুকুম উনার উপর আরোপ করা হবে।

মা'যুরের হুকুম হল,
মা'যুর ব্যক্তি এক ওয়াক্তের জন্য এক অজু করবেন। তারপর উক্ত অজু দ্বারা উক্ত ওয়াক্তের ভিতর যতসম্ভব উনি ফরয নফল ইত্যাদি ইবাদত করতে পারবেন। যখন ওয়াক্ত চলে যাবে তখন অজুও শেষ হয়ে যাবে।পূনরায় ভিন্ন ওয়াক্তের জন্য ভিন্ন অজু করতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৫/২২৩/২২৪ ) 

নেপকিন জাতীয় কিছু পড়ে নিলে সমস্ত কাপড় নাপাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। যদি আপনি মা’যুর না হন, তাহলে এভাবে আপনাকে কষ্টকরে নামায পড়তে হবে। যখনই হবে যে, অজু চলে গেছে, তখনই আবার অজু করে নামায পড়তে হবে। 

(২)জরায়ুর মুখে, আশেপাশে আর একটু ভিতরে কাপড় দিয়ে পরিস্কার করা বিপদজনক, ইনফেকশন বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে। সুতরাং জরায়ুর বাহিরে অংশকে পরিস্কার করে নিলেই পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে। 

(৩)পানি ঢেলে হাত দিয়ে পরিস্কার করে কিছু নাই বোঝার পর কাপড় দিয়ে মুছার সময় জরায়ুতে চাপ দিয়ে মুছলে কাপড়ে খুবই হালকা হালকা সাদাস্রাবের মতো দেখা যায়! যতই ভালো করে ওয়াশ করি হাত দিয়ে, কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে মুছলে এরকম দেখা যায়ই! এতে কি পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে।  কাপড়ে সামান্য দেখার পর আবার পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে না। 

(৪) পরিস্কার করে মুছার সময় কাপড়ে হালকা দেখা গেলে এবং তা এক দিরহামের কম হলে এই কাপড় দ্বারা আবার মুছা যাবে। 

(৫)এজন্য শুধুমাত্র বাহিরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ পরিস্কার করা কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। 

(৬)ভার্সিটি বা বাইরে কোথাও ওয়াশরুম গুলোতে ভালোভাবে পরিস্কার করার মতো পরিবেশ, সুযোগ থাকে না! সাদাস্রাব নিয়ে নামাজ পরা যাবে । যতটুকু সম্ভব বাহিরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হবে। 

(৭)রোজা রেখে ভেজা আঙুল লজ্জাস্থানে লাগলে রোজা ভেঙে যায়? তাহলে রোজাবস্থায় সাদাস্রাব পরিস্কার করা বলতে বাহরের অংশকে পরিস্কার করে নিলেই হবে। 

(৮) পানি দিয়ে সাদাস্রাব পরিস্কার করাই আবশ্যক নয় বরং টিস্যু বা কাপড় দিয়ে কোনোরকম মুছে নিলেই হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...