আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in সাওম (Fasting) by (9 points)
হেদায়েত পাওয়ার আগে আমি জানতাম না যে হায়েজের বাদ যাওয়া রোজা কাযা করতে হয়। যেবার থেকে জেনেছি সেবার থেকে রেখেছি। আমার আম্মু নিজে রাখতো কিন্ত আমাকে বলেছিল রাখা লাগে না। আমি একটু শারীরিকভাবে দুর্বল তাই আমার রোজা রাখা পছন্দ করত না। আমি 9 বছরের রোজা কি এখন আমার কাযা রাখা লাগবে না তওবা করে নিলে হবে যেহেতু আমি জানতাম না?

1 Answer

0 votes
by (57,240 points)

 

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

https://www.ifatwa.info/2187 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রমজান মাসের রোযা ইসলামের রুকুন সমূহের একটি রুকুন।শরয়ী উযর ব্যতীত মুসলমানের জন্য রোযাকে পরিত্যাগ করা কখনো জায়েয হবে না।যদি কেউ রমজানের কোনো রোযাকে ছেড়ে দেয়,বা শরয়ী উযর যেমনঃ অসুস্থতা,সফর,হায়েয-নেফাস ইত্যাদির কারণে ভেঙ্গে ফেলে তখন উলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে উক্ত রোযাকে কা'যা করা ওয়াজিব।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা বাক্বারা১৮৫)

তবে কেউ যদি রমজানের রোযাকে তুচ্ছ মনে করে হেয়পতিপন্ন করে ছেড়ে দেয় বা ভেঙ্গে ফেলে,তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে।(আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুক)

সমস্ত উলামায়ে কেরামের মতে ছুটে যাওয়া রোযাকে কা'যা করা ওয়াজিব।এটার উপর সমস্ত উলামায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে।

ইবনে আব্দুর বর রাহ বলেন,

" وأجمعت الأمة ، ونقلت الكافة ، فيمن لم يصم رمضان عامداً وهو مؤمن بفرضه، وإنما تركه أشراً وبطراً، تعمَّد ذلك ثم تاب عنه : أن عليه قضاءه "

উলামায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে যে,যে ব্যক্তি রমজানের রোযাকে ফরয হুকুমের বিশ্বাস থাকাবস্থায় ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দিবে,সে তাওবাহ করবে এবং উক্ত রোযা সমূহে কা'যা করে নেবে।(আল-ইসতেযকার-১/৭৭)

তবে ছুটে যাওয়া রোযা সমূহকে কা'যা করলেও ফযিলতের দিক দিয়ে রমজান মাসে আদায়কৃত রোযার সমপরিমাণ কখনো হবে না।

হযরত আবু-হুরায়রা থেকে বর্ণনা করা হয়,

من أفطر يومًا من رمضان من غير رخصة ولا مرض لم يقضِ عنه صيام الدهر كله ، وإن صامه

যে ব্যক্তি শরয়ী কোনো রুখসত বা উযর ব্যতীত রমজানের কোনো রোযাকে ভেঙ্গে ফেলবে,একযুগ/সারা জীবন রোযা রাখলেও সেই রমজানের রোযার সমপরিমাণ হবে না।(সহীহ বোখারী-শামেলা-৩/৪৩)এই হাদীস নিয়ে মুহাদ্দিসিনে কেরামের কালাম রয়েছে।

কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম, মনে ছুটে যাওয়া রোযার কোনো কা'যা নেই। বরং এক্ষেত্রে বেশী বেশী নফল রোযা রাখতে হবে। এটা জাহেরিয়্যাহ ফিরকাহ এর মত। এটাকে ইবনু তাইমিয়্যাহ রাহ. ও ইবনু উছাইমিন রাহ. গ্রহণ করেছেন।

মোটকথাঃ যদি কেউ রমজান মাসের কোনো রোযাকে ছেড়ে দেয় বা ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে তাকে উক্ত রোযার কা'যা করতে হবে। এটাই জুমুহুর উলামায়ে কেরামের মত। কেননা রোযা একটি ইবাদত যার ওয়াক্ত বান্দার সামন থেকে চলে গেছে। যেহেতু রোযা বান্দার উপর ফরয ছিলো সুতরাং বান্দার কর্তৃক উক্ত রোযাকে আদায় করা ব্যতীত বান্দা যিম্মা মুক্ত হবে না, দায়মুক্ত হবে না।

সুতরাং সময়সুযোগ করে উক্ত ছুটে যাওয়া রোযাগুলিকে কা'যা করে নেবেন। দুই ঈদ এবং ঈদুল আযহার পরবর্তী তিনদিন,ও হায়েয-নেফাস ব্যতীত যেকোনো সময় রোযাকে কা'যা করা যাবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন

আপনি বালিগা বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে যতটা রমজান অতিবাহিত হয়েছে, এর মধ্যে যতগুলো রোযা আপনি রাখেননি বা নিয়তই করেননি। সেগুলোকে হিসেব করে শুধুমাত্র কাযা করে নিবেন। কাফফারার কোনো প্রয়োজন এক্ষেত্রে নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...